উত্তর ২৪ পরগনা: ছোট বেলার থেকে আগলে রাখা মেয়েকে এভাবে বাড়ি থেকে বিদায় দিতে হবে তা যেন স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় খুন হওয়া দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়ার বাবা-মা। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে শারীরিক নির্যাতন করেই খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে।
এদিন ময়নাতদন্তের পরই বাম ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে রাতেই আরজিকর হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভে দেখানো হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠায়, মৃত তরুণীর দেহ নিয়ে পুলিশ রওনা দেয় বাড়ির উদ্দেশে। যদিও এই বিষয়টি তখনও জানান হয়নি মৃত ডাক্তারি পড়ুয়া তরুনীর বাবা-মাকে, বলেই জানা যায়। ফলে হাসপাতালের ওখানেই থেকে যান তারা। পুলিশ দেহ নিয়ে বেরিয়ে যায়। তার কিছু সময় বাদেই পানিহাটির বন্ধ বাড়ির দরজার বাইরে এসে পৌঁছয় তরুণী চিকিৎসকের দেহ।
আরও পড়ুয়া: বলুন তো কোন জিনিস বাগানে সবুজ, বাজারে কালো আর ‘বাড়িতে লাল’ হয়? রান্নাঘরেই আছে কিন্তু! ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন
তখন বাড়ির সামনে শুধু শোকস্তব্ধ প্রতিবেশীদের জটলা। পাড়ার মেয়ের নিথর দেহ দেখে ডুকরে কেঁদে ওঠেন অনেকে। কিন্তু শববাহী গাড়ি এসে পৌঁছলেও, প্রথম অবস্থাতে দেখা যায়নি বাবা-মাকে। জানা যায়, হাসপাতাল থেকে থানায় গিয়েছেন তারা। ফলে বন্ধ বাড়িতেই তরুণী চিকিৎসকের নিথর দেহ পড়ে থাকে বেশ কিছুটা সময়।
এরপর, বাড়িতে এসে পৌঁছন মৃত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা-মা। ঘটনাস্থলে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষ সহ পুলিশ কর্তারা। যাতে কোন রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় তার জন্য মোতায়ন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। মেয়ের দেহ এরপর পুলিশের উপস্থিতিতে ঢোকানো হয় বাড়িতে। কিছু সময় এর মধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে শববাহি গাড়িতে দেহ তুলে রওনা দিতে দেখা যায় শেষকৃত্যের জন্য।
বিধায়ক নির্মল ঘোষ জানান, উচ্চাশা নিয়ে মেয়েটি পড়াশোনা করেছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা উপযুক্ত শাস্তি পাবে। তবে এখনও যেন এই ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না প্রতিবেশীরা-সহ পানিহাটির মানুষ। তদন্তে উঠে আসুক আসল সত্য, চিহ্নিত হোক প্রকৃত দোষীরা।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন পরিবার থেকে প্রতিবেশীরা সকলেই। তবে রাতেই তদন্তকারী আধিকারিকেরা হাসপাতালে এক অস্থায়ী নিরাপত্তা কর্মীকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করেছে বলে জানা যায়। সতীর্থর মৃত্যুর তদন্তের পাশাপাশি নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে আংশিক কর্মবিরতি করছেন হাসপাতালের মেডিকেল পড়ুয়ারা।
Rudra Narayan Roy