আগরতলা: রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে সরকার। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের চাহিদা অনুযায়ী যোগান ঠিকঠাক রাখতে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। রক্তদানের চেয়ে কোন দান আর বড় হতে পারে না। রক্তের প্রয়োজন যে কোনও সময় হতে পারে। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের চাহিদা অনুযায়ী যোগান ঠিক রাখতে হবে। মুমূর্ষু মানুষের জীবন রক্ষার জন্য স্বেচ্ছা রক্তদানে এগিয়ে আসতে হবে বিভিন্ন ক্লাব, সামাজিক সংস্থা ও সংগঠনগুলিকে। এর পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে সরকার।
শহিদ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগরতলার বিপ্লবী ক্ষুদিরাম সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরে রবিবার একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, রক্তের চাহিদা মেটাতে রক্তদান শিবির করা খুবই প্রয়োজন। কোভিড চলাকালীন সময়ে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সময়ে রক্তের স্বল্পতা দেখা দেয়। রাজ্যে ১৪টি ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। এরমধ্যে ১২টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক। রোগীদের অপারেশন করার সময়ে রক্তের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুত থাকলে অনেক সুবিধা হয়। সেজন্য ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুত রাখা নিশ্চিত করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যার অনুপাতে ১ শতাংশ রক্ত মজুত থাকতে হয়। ত্রিপুরায় প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের জন্য ৪০ হাজার ইউনিট রক্ত মজুত থাকা দরকার। আমাদের রাজ্যে এখন রক্তের শ্রেণী বিন্যাস করা যায়। রক্তদান শিবিরের মতো সামাজিক কাজের আয়োজন করায় বিপ্লবী ক্ষুদিরাম সামাজিক সংস্থার প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি এধরণের সামাজিক কাজে আরো এগিয়ে আসার আহ্বান রাখেন। ডাঃ সাহা বলেন, রক্তদান মানে জীবন দান। রক্ত ছাড়া কেউ বাঁচতে পারে না। ত্রিপুরায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে এখন দুটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজে আগে ১০০টি আসন ছিল। এখন আরও ৫০টি আসন বেড়েছে। আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজ প্রধানমন্ত্রী নিজে এসে উদ্বোধন করেছেন। এই কলেজে ইতিমধ্যে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা হয়েছে। ডেন্টাল কলেজ ত্রিপুরায় একটা স্বপ্নের বিষয়। বিএসসি নার্সিং কলেজ হয়েছে এখানে। চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নে রাজ্যের সমস্ত জেলা হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো আরও উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য শান্তিরবাজার হাসপাতাল, গোমতী জেলা হাসপাতাল ও ধলাইয়ে ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। আগরতলায় আগে থেকে ট্রমা কেয়ার সেন্টার রয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে পরিষেবা আরও উন্নত মানের করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, চিকিৎসার জন্য যাতে রাজ্যের মানুষকে আর বাইরে যেতে না হয়। আগে কোনদিন ভাবা যায় নি যে ত্রিপুরায় কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যাবে। কিন্তু সেটাই সত্যি হয়েছে। একটা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হলে অনেক টাকা খরচ হয়। মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় প্রত্যেক পরিবারকে বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা। সকলের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করেছে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নে জিবি হাসপাতালে ৯টি সুপার স্পেশালিটি চালু করা হয়েছে। এজন্য প্রায় ১৮০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। খুব সুন্দর করে সুপার স্পেশালিটি খোলা হয়েছে। এখানে চিকিৎসা পরিকাঠামো বেশ ভাল হয়েছে।