মুখ খুললেন শেখ হাসিনা৷ ছবি- এএফপি

Sheikh Hasina message for Bangladesh: ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এই প্রথম, মুখ খুললেন হাসিনা! উগরে দিলেন ক্ষোভ, হতাশা

নয়াদিল্লি: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এই প্রথমবার মুখ খুললেন শেখ হাসিনা৷ নিজের পুত্র সাজিদ ওয়াজেদের এক্স হ্যান্ডেলের মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে লিখিত বিবৃতিতে হাসিনা দাবি করেছেন, আন্দোলনের নামে আসলে ধ্বংসলীলা চলেছে বাংলাদেশে৷ শুধু তাই নয়, আন্দোলনরত ছাত্রদের কারা হত্যা করেছে, তারও যথাযথ বিচার দাবি করেছেন তিনি৷ পাশাপাশি, যেভাবে তাঁর বাবা এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বন্ধবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে, তারও বিচার চেয়েছেন শেখ হাসিনা৷

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল৷ বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা৷ তাঁকে নিয়েই গত ৫ অগাস্ট ভারতে আসেন শেখ হাসিনা৷

আরও পড়ুন: মুজিব হত্যার স্মরণে আর জাতীয় শোক দিবস নয়! বাংলাদেশে ১৫ অগাস্টের ছুটি বাতিল

সোমবার নিজের বিবৃতিতে বাবা শেখ মুজিবর রহমান সহ পরিবারের নিহত সদস্য এবং শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন শেখ হাসিনা৷ ১৫ অগাস্ট দেশবাসীকে জাতীয় শোক দিবস পালনের আর্জিও জানিয়েছেন বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী৷ যদিও বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যেই ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

একই সঙ্গে গত জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনের জেরে ছড়িয়ে পড়া হিংসায় যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদেরকেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হাসিনা৷ নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী৷ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলনের নামে নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাস ও সহিংসতার কারণে অনেকগুলি তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। স্বজনহারা বেদনা নিয়ে আমার মতো যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই। আমি এই হত্যাকাণ্ড ও নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।’

এর পাশাপাশি যেভাবে শেখ মুজিবরের স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তারও নিন্দা করেছেন হাসিনা৷ ক্ষোভের সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘১৯৭৫ সালে ১৫ অগাস্ট ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে যে নারকীয় হত্যার ঘটনা ঘটেছিল, সেই স্মৃতি বহনকারী বাড়িটি আমরা দুই বোন বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেছিলাম। গড়ে তোলা হয়েছিলো স্মৃতি জাদুঘর। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই বাড়িতে এসেছেন। স্বাধীনতার স্মৃতিবহনকারী এই জাদুঘরটি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, স্মৃতিটুকু বুকে ধারণ করে আপনজন হারাবার সকল ব্যথা বেদনা বুকে চেপে রেখে বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার লক্ষ্য নিয়ে প্রিয় দেশবাসী আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। তার শুভ ফলও আপনারা পেতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে । আজ তা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। আর যে স্মৃতিটুকু আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল তা পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে। চরম অবমাননা করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতি, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি, আত্মপরিচয় পেয়েছি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। লাখো শহিদের রক্তের প্রতি অবমাননা করেছে । আমি দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই।’

হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে আসার পর সেখানে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে৷ সেই সরকারের উপরই দেশে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন করার দায়িত্ব রয়েছে৷ এর আগেই হাসিনা পুত্র সাজেদ ওয়াজেদ জয় জানিয়েছিলেন, নির্বাচন হলেই বাংলাদেশে ফিরবেন তাঁর মা৷