ছেন্দাপাথর

Independence Day 2024: স্বদেশীদের বোমা পরীক্ষার মূল কেন্দ্র ছিল! ক্ষুদিরামের পা পড়েছে বারবার, জানুন কোথায়

বাঁকুড়া: প্রান্তিক এই দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে মানুষের দৃষ্টির অগোচরে যে এক ইতিহাস লুকিয়ে ছিল তা হয়ত অনেকেরই অজানা। এই জঙ্গলমহল একটা সময় বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একটা ক্ষেত্র ছিল, চলত স্বদেশীদের অবাধ আনাগোনা, চলত বৃটিশদের বিতাড়িত করার বিভিন্ন পরিকল্পনা।

বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় ৮৫ কিমি দূরে কিছুটা শাল কিছুটা, সেগুনের ছায়া, গভীর অরণ্য পেরিয়ে গেলেই ছেঁন্দাপাথর আর তার এককোনায় একাকি পড়ে আছে শহীদ ক্ষুদিরামের এক অন্তরালের স্থান। অম্বিকানগরের রাজা রাইচরন ধবলদেবের সহযোগিতায় শহীদ ক্ষুদিরাম, বারিন ঘোষ, নরেন গোঁসাইরা এই দুর্গম অরণ্যঘেরা ছেঁন্দাপাথরকে বেছে নিয়েছিলেন বোমা বানানো, অস্ত্র প্রশিক্ষন ইত্যাদি কার্যকলাপের জন্য।

বনমহল থেকে একটু ছাড়িয়ে গেলেই ঝাড়খণ্ড সীমানা। সেই কারণে অবাধ যাওয়া আসা চলত এখানে। পরিচালনা করতে সুবিধে হত ভিনরাজ্যে বৈপ্লবিক কার্যকলাপ। তাই বিপ্লবীরা বেছে নেন এই স্থান। এই স্থানে একটি মাটির দেওয়াল দেওয়া ঘর ছিল যার মধ্যে একটি গুহা অবস্থিত ছিল। কথিত আছে নাকি এই গুহা অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। খুব সহজে ভারত মায়ের বীর এই সন্তানেরা অন্তরালে প্রবেশ করতে পারতেন, নিজেদেরকে ব্রিটিশ হস্তের দূরে রাখতেন। এই ক্ষেত্র থেকে বিপ্লবীরা অভিনব পদ্ধতিতে মাটির বোমা যার ওপরের আবরণ মাটি এবং ভেতরে থাকত বারুদ। সারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হত এই বোমা।

আরও পড়ুন: সাইকেল চালিয়ে শহর ঘুরছেন পুরসভার চেয়ারম্যান, কারণ জানলে অবাক হবেন

এখন ছেঁন্দাপাথরের এই জায়গা বর্তমান সরকারের হস্তক্ষেপে অনেকটা অভিযোজিত মাটির গুহা এখন ইঁটে বাঁধানো এক কুয়োর রূপ পেয়েছে, মাটির দেওয়াল এখন পাকা ইঁটের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। সে যাই হোক না কেন ইতিহাস তো কখনও মিথ্যা বলে না বলুন? ক্ষুদিরাম, বারিন ঘোষেরা চলে গেলেও তাদের উত্তরসূরী হয়ে স্বাধীনতা ভোগ করছি আমরা। এই দুর্গম যদি ক্ষেত্র যদি আরেকটু প্রাণ পায়, তাহলে আমজনতার জন্য ঐতিহাসিক দৃষ্টিনন্দনের এক ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়াতেই পারে জঙ্গলে ঘেরা এই ছেঁন্দাপাথর।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী