Health Tips: শিল-নোড়া তুলে মিক্সার-গ্রাইন্ডার ব্যবহার করছেন? কতবড় ভুল করছেন জানেন? পড়ুন

কলকাতা: একটা সময় প্রত্যেক বাড়ির রান্নাঘরে শোভা পেত শিল-নোড়া। চাল, ডাল থেকে মশলা বাটা, তাতেই হত সবকিছু। সময় লাগত, পরিশ্রমও হত। তবে খাবারের স্বাদ লেগে থাকত মুখে। আঙুল চেটে খেত গৃহস্থ মানুষ।

শিল-নোড়ায় বাটা মশলা বা চাটনি স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। তাজা স্বাদ পাওয়া যায় এতে। বর্তমানে ধীরে ধীরে এর জায়গা দখল করছে মিক্সার গ্রাইন্ডার। শিল-নোড়া প্রায় বিলুপ্ত। খুব কম বাড়িতেই দেখা যায় এখন।

ইদানীং জীবনযাত্রার ধরণ আমূল বদলে গিয়েছে। সবাই ছুটছে। কারও হাতে সময় নেই। কে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে শিল-নোড়ায় মশলা বাটবে! ফলে ইলেকট্রনিক মিস্কারের চাহিদা বাড়ছে। শিল-নোড়া চলে যাচ্ছে বিস্মৃতির অন্ধকারে। একটা যুগের যবনিকা পতন ঘটছে যেন।

শিল-নোড়ার সঙ্গে শুধু খাবারের স্বাদ নয়, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও জড়িয়ে ছিল। গ্রীষ্মের অলস দুপুরে শিল কাটতে আসতেন কারিগররা। ছেনি দিয়ে ঠুকে ঠুকে বাদ দিতেন শিলের বাড়তি অংশ। শিল-নোড়ার মতো এখন তাঁরাও বিলুপ্ত প্রায়। বেছে নিচ্ছেন অন্য রুটিরুজি।

শুধু শিল কাটার কারিগররা নন, কাজ হারিয়েছেন অনেক মহিলাও। শিল-নোড়া তৈরিতে মূলত যুক্ত থাকতেন মহিলারাই। দৈনিক হারে মজুরি মিলত। গ্রামাঞ্চলে এখনও শিল-নোড়ার চল রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে তাও কমছে।

শিল-নোড়ায় মশলার মসৃণতা নির্ভর করে রাঁধুনির হাতের উপর। তাছাড়া পেষাই করার কারণে পুষ্টিগুণও বজায় থাকে। কিন্তু মিস্কার গ্রাইন্ডারে তা হবার উপায় নেই। একবার-দু’বার পিষলেই মুহূর্তে মশলা ধুলো। গরমও হয়ে যায় খুব। ফলে পুষ্টিগুণ বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না।

শিল-নোড়ায় মশলা পেষা এক ধরণের ওয়ার্কআউট। হাত তো বটেই, শরীরের উপরের অংশের ব্যায়াম হয়। চাপ পড়ে কোমরেও। আজকের ব্যস্ত জীবনযাত্রায় ব্যবহারকারীর অনেক উপকার হতে পারত। কিন্তু শিল-নোড়াকে বাদ দেওয়ার ফলে ঐতিহ্যবাহী স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুইই গিয়েছে।