সেবক দেবশর্মা, মালদহ: মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে রাত্রের ডিউটি চলার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং নার্সদের হেনস্থা, গালিগালাজ। অভিযোগ এলাকারই এক তৃণমূলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে ।
সূত্রের খবর, অবিনাশ দাস নামে ওই নেতা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে মঙ্গলবার রাত সোওয়া দশটা নাগাদ নার্সিং স্টেশনে ঢুকে হঠাৎ করে কর্তব্যরত নার্সদের দিকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেন। অশ্রাব্য গালিগালাজ শুরু করেন। উপস্থিত মেডিক্যাল অফিসার প্রভাকর সাহা, ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকেও ধাক্কাধাক্কি ও হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও সেখানে উপস্থিত অন্যান্য চিকিৎসক এবং জিডিএ কর্মীরা ওই নেতাকে আটকে দেন। এরপরই খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। ঘটনার খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঙ্গে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেন।
এই ঘটনার পরে আতঙ্কে রয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকরা। ইতিমধ্যেই নিগৃহীত নার্সিং কর্মী এবং হাসপাতালের পক্ষ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রভাকর সাহা বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি এক রোগীর খোঁজ করতে এসে আমার সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। উপস্থিত নার্সদেরকেও অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকে হেনস্থা করা হয়। এরপর সেখানে উপস্থিত নার্সদেরকেও তিনি মারতে যান। আমরা তাতে বাধা দিই। এরপরেই ওই ব্যক্তি আমাদেরকে খুনের হুমকি দেয়। আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’
আরও পড়ুন: আরজি কর তদন্তে সিবিআই-কে সাহায্য করতে সিজিও-তে কুণাল, কী তথ্য দেবেন তৃণমূল নেতা?
অভিযোগ, অবিনাশ দাস নামে ওই তৃণমূল নেতাকে হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী এবং হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তাজমুল হোসেনের সঙ্গে আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে এক সঙ্গে হাঁটতে দেখা গিয়েছে। যদিও ডাক্তার বা নার্সদের উপর হামলা বা নিগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী। তাঁর পাল্টা দাবি, দুইদিন ধরে স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি। সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছিলেন না। এনিয়ে খোঁজ নিতে গেলে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল বিধায়ক তাজমুল হোসেন অবশ্য ধৃতের সঙ্গে দলের যোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, মিছিলে অনেকেই পাশে এসে স্লোগান দেয়। ধৃতের সঙ্গে তাঁর বা দলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ এক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ করেছে। হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালের ঘটনা নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন তাজমুল হোসেন।