নয়াদিল্লি: আরজি কর হাসপাতালের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্যও। রাজ্য এবং সিবিআই উভয়ের তরফেই স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় এদিন৷ আরজি করের ঘটনার এক সপ্তাহ পরে ফের স্টেটাস রিপোর্ট নেওয়া হবে, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে আরজি করের ঘটনায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ, জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত।
এদিন বৃহস্পতিবার আরজি কর মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে। রাজ্যের তরফে আদালতে হাজির ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। সুপ্রিম কোর্টে এদিন চিকিত্সকদের আইনজীবী বাংলার আন্দোলনকারী ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘ডাক্তাররা কাজে ফিরবেন, কিন্তু তাঁরা যেন ব্যাকক্ল্যাশের মুখে না পড়তে হয়। আমরা জানতে পেরেছি বাংলার আন্দোলনকারী ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং প্রশাসন।’’
এ প্রসঙ্গে সিজেআই জানান, ‘‘এক সপ্তাহ পর তাঁরা কাজে ফিরলে কোনও সমস্যা হলে আমাদের জানাবেন।’’ রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলও জানান, ‘স্বাভাবিক অবস্থায় যেন ফিরে আসে পরিস্থিতি।’’ ৯ তারিখের ঘটনা। আজ ২২। ১৩ দিন চিকিৎসকরা কাজে যোগ দেয়নি দিল্লি এইমসে। ধৈর্য ধরে চিকিত্সকদের কথা শোনার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানান চিকিত্সকদের আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, এদিনের শুনানিতে, দেহ উদ্ধারের ১৪ ঘণ্টা পর কেন এফআইআর রুজু করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের আইনজীবী জানান, ‘‘আমরা গেজেট নোটিফিকেশন মেনেই ইউডি কেস রুজু করে তদন্ত শুরু করেছি। সব পদক্ষেপ মেনেই করা হয়েছে’’। এই প্রসঙ্গে সিজেআই বলেন, ‘‘আপনাদের কথা মানছি। কিন্তু এফআইআর রাতে রুজু করা হল। দেহ উদ্ধারের ১৪ ঘণ্টা পর কেন এফআইআর রুজু করা হল? ’’। উত্তরে সিব্বল জানান, ‘‘পরিবারের কথা শুনেই এফআইআর করা হয়েছে।’’ সিজেআই ফের প্রশ্ন করেন, ‘‘অধ্যক্ষের তো উচিত ছিল কলেজে এসেই সঙ্গে সঙ্গেই এফআইআর করা’’।
অভিযুক্তের পলিগ্রাফ টেস্ট করা হবে এসিজেএম শিয়ালদহের কাছে। এমনটাই এদিন জানাল শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘অভিযোগকারীর পলিগ্রাফ টেস্ট করার অনুরোধ করা হয়েছে এসিজেএম শিয়ালদহের কাছে। ২৩ অগস্ট ৫টার মধ্যে এসিজেএমকে এ নিয়ে নির্দেশ দিতে হবে।’’ তিনি আরও জানালেন, ‘‘ডিস্ট্রেস কল সিস্টেম, ডিউটি আওয়ার্সের রেগুলেরাইজ্শন, কমপেনসন ডিস্ট্রেস ফান্ডের গঠন করার বিষয়টি কমিটি বিচার করে দেখতে পারেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, এটিএফের কাছে যাতে সবাই নিজেদের মতামত দিতে পারে, তার জন্য একটি পোর্টাল খুলবে’’।
আরজি কর কাণ্ডের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা যাবে, জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে, কিন্তু রাজ্যকে একটা বিষয় দেখতে হবে যাতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের, যেন প্রতিবাদ করতে দেওয়া হয়। আরজি করের প্রতিবাদ করা যাবে৷ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সংগঠিত করা যাবে। এক সপ্তাহ পরে পরবর্তী স্টেটাস রিপোর্ট নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে কোনও রকম পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ।’’