রেশম গুটি দিয়ে ব্যান্ডেজ

North Dinajpur News: যুগান্তকারী! রেশম গুটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ব্যান্ডেজ, ক্ষত শুকবে মাত্র ৮-১০ দিনে! মিলল পেটেন্টও

উত্তর দিনাজপুর: এবার রেশম গুটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ব্যান্ডেজ। এই অভিনব ব্যান্ডেজ তৈরি করে এবার পেটেন্ট পেল রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়। যে কোনও চিকিৎসাতেই রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ কিংবা ফোলা কমাতে বা যে কোনও আঘাতে ব্যান্ডেজ ব্যবহার করা হয়। ব্যান্ডেজ ক্ষত পরিষ্কার করে, সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে তুলো নয়, এবার রেশম গুটির ব্যান্ডেজ তৈরি করলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। গবেষকদের দাবি, রেশম কীটের গুটি দিয়ে তৈরি নতুন ধরনের এই ব্যান্ডেজ অগ্নিদগ্ধ রোগীদের ক্ষত শুকাতে ভীষণ কার্যকরী। এটি অগ্নিদগ্ধ রোগীদের মৃত্যুর হারও অনেক কমিয়ে দেবে বলে ।

আরও পড়ুন: মৃতের শেষ ইচ্ছাপূরণে এক হয়ে গেল দুই দেশ, বিএসএফের তৎপরতায় ভাইয়ের শেষ দেখা পেলেন বোন

গবেষকরা জানাচ্ছেন, এটি রেশম কীটের গুটি দিয়ে পাঁচটি স্তরের সিলভার ন্যানো পার্টিকল সমন্বিত এক ব্যান্ডেজ ৷ আগুনে পোড়া ক্ষতস্থানে যেসব ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটায়, তারা একাধিক ড্রাগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ৷ এই ব্যান্ডেজে থাকা বিভিন্ন উপাদান সেসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভীষণ কার্যকরী৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরিকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. অমিতকুমার মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে পৌলমী দাম, ড. আবুল সাদাত, শুভজিৎ সাউ ও ঋত্বিক মণ্ডল এই বিশেষ ব্যান্ডেজ তৈরি করেছেন ৷ এই আবিস্কারের পেটেন্ট পেতে তাঁরা কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে আবেদনও করেছিলেন৷ অবশেষে তাঁদের করা সেই আবেদনের ভিত্তিতে তাঁরা পেটেন্ট লাভ করেন।

বর্তমানে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের জন্য যে ব্যান্ডেজ ব্যবহার হচ্ছে, তাতে ক্ষত শুকোতে ১৮ থেকে ২১ দিন সময় লেগে যায় ৷ কখনও বা তারও বেশি ৷ কিন্তু গবেষকদের দাবি, সিল্ক কোকুন দিয়ে তৈরি এই ব্যান্ডেজে আট থেকে ১০ দিনের মধ্যেই আগুনে পোড়া ক্ষত শুকিয়ে যাবে৷ যেহেতু কোকুনের সঙ্গে মানবত্বকের খানিকটা সামঞ্জস্য রয়েছে, তাই এই ব্যান্ডেজ ক্ষতস্থানে একটা অক্সিজেনিক এনভায়র্নমেন্ট তৈরি করে৷ তাতে ক্ষত আরও তাড়াতাড়ি শুকোয় ৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের একটি তথ্য বলছে, ভারতে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অগ্নিদগ্ধ হন ৷ এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মানুষের মৃত্যু হয়৷

শহরের থেকে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা গ্রামাঞ্চলে বেশি ঘটে৷ জানা যায় এই ব্যান্ডেজ অনেকটাই কস্ট এফেক্টিভ হবে৷ এই ব্যান্ডেজ ব্যবহার করলে রোগীদের বেশিদিন চিকিৎসাধীন থাকতে হবে না৷ অন্য ব্যান্ডেজ কিংবা তুলোও কিনতে হবে না৷ এতে তাঁদের লাভই হবে৷ বর্তমানে থার্ড ডিগ্রি বার্নের ক্ষত শুকোতে কমপক্ষে তিন সপ্তাহের বেশি সময় লাগে৷ সেটাও রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে৷ এই কোকুন ব্যান্ডেজ যদি ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ক্ষত শুকিয়ে দিতে পারে, তবে সেটা যুগান্তকারী বিষয় হবে।

পিয়া গুপ্তা