বছরের পর বছর এই বাঁধের উপরে এই ঝুপড়িতেই থাকেন শেখ আবুতালেবের পরিবার৷

South 24 Parganas flood: বার বার বাড়ি গিলেছে মুড়িগঙ্গা, হতভাগ্য পরিবারের ঠিকানা এখন নদী বাঁধ

বিশ্বজিৎ হালদার, নামখানা: এক, দু বার নয়৷ তিন তিন বার প্রকৃতির রোষে মাথার উপরের ছাদ হারিয়ে নদী বাঁধেই আশ্রয় নিয়েছে একটি পরিবার৷ নদীর তাণ্ডবে সর্বস্ব হারিয়ে হতভাগ্য পরিবারটির এখন ঠিকানা দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার নামখানা ব্লকের বুধাখালির রাজনগর শ্রীনাথগ্রামের আইলা নদী বাঁধ।

প্রায় ১০ ফুট নদী বাঁধের উপর ত্রিপল টাঙিয়ে ছোট্ট দুটি ঝুপড়ি বানিয়েছেন শেখ আবুতালেব। এই ঝুপড়িতে দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে বসবাস করেন মান্নান পরিবারের পাঁচ সদস্য। তাঁদের সঙ্গে চার বছরের এক শিশুও রয়েছে। অথচ এক সময় তাঁর টালি চাপানো চার চালা মাটির বাড়ি ছিল। সেই বাড়ি আজ নদীগর্ভে চলে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: পলিগ্রাফ টেস্টে সম্মতি দিল আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয়, খুলবে রহস্যের জট?

এ বিষয়ে ৮২ বছরের বৃদ্ধ শেখ আবুতালেব বলেন, “প্রায় ২৫ বছর আগে মুড়িগঙ্গা নদীর তীরে সাজানো একটি বাড়ি ছিল। হঠাৎই এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর সেই বাড়িটি নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। এরপর নদীর বাঁধ থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে সরে এসে আরও একটি ঘর তৈরি করা হয়। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আমপানের সময় সেই ঘরটিও ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ধার দেনা করে তৃতীয়বারের জন্য আরও একটি ছোট্ট বাড়ি বানানো হয়। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় সেই বাড়িটিও মুড়িগঙ্গা নদী গিলে খেয়ে নেয়। এরপর থেকে বাড়ি তৈরি করার জন্য আর জমি খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারণ মুড়িগঙ্গা নদী এখন ভাঙতে ভাঙতে প্রায় এক কিলোমিটার এগিয়ে এসেছে। তাই আইলা নদী বাঁধের উপর কোনরকম ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, “ঝড় বৃষ্টির রাতে পরিবারের কেউ ঘুমোতে পারে না। খাটের উপরে বসে কোনওরকম রাত জেগে কাটাতে হয়। সরকারের দিকে পরিবারের সবাই তাকিয়ে রয়েছে। সরকারই গড়ে দিতে পারে স্থায়ী ঠিকানা।”

নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অভিষেক দাস বলেন, “পরিবারটি এত প্রতিকূলতার মধ্যে রয়েছে, বিষয়টি জানা ছিল না। সত্যিই যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে নিশ্চিতভাবে পরিবারের স্থায়ী ঠিকানার ব্যবস্থা করা হবে।”