প্রতিকূল ভৌগলিক পরিস্থিতিতে কাজ করে চমকে দিল ভারতীয় রেল

Indian Railway: প্রতিকূল ভৌগলিক পরিস্থিতিতে কাজ করে চমকে দিল ভারতীয় রেল

কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি (সিআরএস) শ্রী সুমিত সিংঘল  ভৈরবী এবং হর্তকির মধ্যে ১৬.৭২৫ কিলোমিটার সদ্য স্থাপিত বিজি লাইনে মালবাহী এবং যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য অনুমোদন প্রদান করেন। এর আগে সিআরএস গত মাসের শেষের দিকে উল্লিখিত সেকশনের সতর্কতামূলক পরিদর্শন সম্পূর্ণ করেছিলেন।

নির্মীয়মান ৫১.৩৮ কিমি লম্বা ভৈরবী-সাইরাং নতুন রেলওয়ে লাইন প্রকল্পের একটি অংশ হল এই সেকশন। সফল পরিদর্শন এবং গতি পরীক্ষণের পর সিআরএস নতুন করে স্থাপিত রেললাইন দিয়ে সর্বাধিক ৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে ট্রেন চলাচলের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। নতুন করে স্থাপিত লাইনটি এই রুট দিয়ে আরও বেশি পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের চলাচলের ক্ষেত্রে সহায় করবে।

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন প্রাণী চোখ বন্ধ করেও দিব‍্যি সব দেখতে পায়? নামটা খুব চেনা, চার পায়ে হাঁটে, ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন

ভৈরবী ও হর্তকির মধ্যে নতুন করে স্থাপিত বিজি লাইন সেকশনে ২০টি মেজর ব্রিজ ও ২৭টি মাইনোর ব্রিজ এবং ০৩টি রোড ওভার ব্রিজ ও একটি রোড আন্ডার ব্রিজ রয়েছে। এই সেকশনে ১৩ টি টানেল/কভার্ড ওয়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সেকশনটি ভূকম্পীয় অঞ্চল নং. V-এ পড়ে, যার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২১১২.৮২৩ মিলিমিটার। এই মুখ্য লাইনে অধিকতম ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে এবং লুপ লাইনে ৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিতে ট্রেন পরিচালনের জন্য সেকশনটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সেকশনটিতে কার্ভড ট্র্যাকের মোট  শতাংশ ২৭.০৩। ৪০ ও ৪২ নং ব্রিজে ব্যালাস্ট লেস ট্র্যাক দেওয়া হয়েছে এবং সমগ্র সেকশনটি লেভেল ক্রসিং গেট থেকে মুক্ত। সেকশনটিতে এমএসিএল সিগনালের সঙ্গে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং প্রদান করা হয়েছে। স্টেশনের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ২৫ ওয়াট ভিএইচএফ সহ ওএফসি সিস্টেম থাকবে। হর্তকি রেলওয়ে স্টেশনে নতুন এফওবি, ওয়েটিং হল, ২য় শ্রেণির ওয়েটিং রুম, কভার্ড প্ল্যাটফর্ম, পুরুষ ও মহিলার জন্য পৃথক শৌচালয় রয়েছে।

আরও পড়ুন: ফের আগুন আতঙ্ক ট্রেনে! কামরার নীচ থেকে বেরোচ্ছে ধোঁয়া, হাওড়া-তারকেশ্বর মেইন লাইনে বিপত্তি

কঠিন ভূখণ্ডে নির্মীয়মান ভৈরবী-সাইরাং রেলওয়ে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে একাধিক টানেল এবং ব্রিজ। এই প্রকল্পে টানেলের মোট দৈর্ঘ হলো ১২৮৫৩ মিটার। প্রকল্পটিতে মোট ৫৫টি মেজর ব্রিজ এবং ৮৯টি মাইনোর ব্রিজ রয়েছে। প্রকল্পটির সবচেয়ে উঁচু পিয়ার অর্থাৎ সাইরাং স্টেশনে প্রবেশের সময় ব্রিজ নং. ১৯৬-এর পিয়ার পি-৪ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। এই পিয়ারের উচ্চতা ১০৪ মিটার, যা কুতুব মিনারের উচ্চতা থেকে ৪২ মিটার অধিক। এই প্রকল্পের অধীনে রয়েছে চারটি স্টেশন যথাক্রমে হর্তকি, কাওনপুই, মুয়ালখং এবং সাইরাং।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা জানিয়েছেন ৫১.৩৮ কিমি লম্বা ভৈরবী-সাইরাং নতুন রেল লাইন প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হওয়ার পর মিজোরামের জনগণকে উন্নত সংযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি অঞ্চলটিতে ক্ষুদ্র মাপের শিল্প বিকাশে সাহায্য করবে এবং রাজ্যের পর্যটন শিল্পকেও উৎসাহিত করবে।

আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের জের! রাজ্যজুড়ে সরকারি মেডিকেল কলেজ ও ইনস্টিটিউট গুলি নিয়ে বড় পদক্ষেপ স্বাস্থ‍্য দফতরের

এই প্রকল্পটি স্থানীয় জনগণের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য পাহাড়ি রাজ্যটিতে যাত্রী ও বিভিন্ন উপকরণ তথা সামগ্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে ব্যয়ের হার যথেষ্ট হ্রাস করাটা নিশ্চিত করবে। মিজোরামের রাজধানী এবং অসমের নিকটবর্তী স্থানগুলির মধ্যে ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস হবে। এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ দেশের দূর দূরান্ত অঞ্চলে যাওয়ার সুবিধা লাভ করবেন এবং অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর বাধাহীন সরবরাহ লাভ করবেন।