কাজ করছেন মহিলা শিল্পীরা 

Purba Bardhaman News: ‘প্রথমে অসুবিধা হলেও…’! এখন মহিলারাও করছেন এই কাজ, রোজগারে আর কোনও বাধা নেই

পূর্ব বর্ধমান: এই গ্রামের সকলেই যুক্ত শোলা শিল্পের সঙ্গে। শোলা শিল্পের উপরে নির্ভর করেই জীবন জীবিকা অতিবাহিত করেন এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বনকাপাশি গ্রাম শোলাশিল্পের জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। প্রতি বছর গ্রামের শোলাশিল্পীরা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বড় বড় দুর্গা প্রতিমা বা মণ্ডপ সাজাতে যান। শুধু দুর্গা পুজো নয়, জগদ্ধাত্রী এবং কালীপুজোর জন্যও রমরমা বাজার থাকে এখানকার শিল্পীদের। এখানকার শিল্পীরা শোলার বিভিন্ন ধরনের চাঁদমালা, শোলার উপর চুমকি বা জড়ি বসিয়ে প্রতিমার সাজ নিয়ে পাড়ি দেন ভিন রাজ্যে। আবার ভিনরাজ্যে শোলার সাজের প্যান্ডেলের জন্যও বরাত পান এখানকার শিল্পীরা।

প্যান্ডেল অথবা শোলার সাজের জন্য পুজোর অনেক আগে থেকে শিল্পীদের অগ্রিম বায়না দিয়ে দিয়ে রাখে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বহু মানুষ।তবে বর্তমানে এই গ্রামের পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও যুক্ত হয়েছেন শোলার কাজের সঙ্গে। সংসার সামলে যেটুকু সময় পান সেই সময় তাঁরা শোলার কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। শোলা কাটা থেকে শুরু করে শোলার উপর চুমকি বসানো সব কাজই এখন শিখে গিয়েছেন মহিলারা। পুরুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহিলারাও বেশ ভালই কাজ করেন। বর্তমানে পুজোর আগে তাঁদের ব্যস্ততাও রয়েছে তুঙ্গে।

এক মহিলা শিল্পী জানিয়েছেন, “এই কাজ শিখে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। আমাদের প্রয়োজনীয় খরচ আমরা এখন নিজেরাই এই কাজ করে তুলে নিতে পারি। প্রথমে অসুবিধা হলেও আমরা এখন এই কাজ শিখে গিয়েছি। আমাদেরও কাজ করতে ভালই লাগে।” পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের অন্তর্গত বনকাপাসি গ্রামের আরেক নাম শোলাগ্রাম। প্রায় আড়াই হাজার মানুষের বেশিরভাগই শোলা শিল্পী। ছোট থেকে বড় সকলেই যুক্ত এই কাজের সঙ্গে।

বর্তমানে বেশ কিছু পরিবারের মহিলারাও এই কাজে সাহায্য করেন পুরুষদের। জানা গিয়েছে এই শোলার কাজ করতে শিল্পীদের দীর্ঘ পরিশ্রম করতে হয়। তবে পরিশ্রম যে রকম হয়, সে রকম শোলার কাজ করে ভাল টাকা উপার্জনও করে থাকেন শিল্পীরা। বর্তমানে শোলা শিল্প এই বনকাপাসি গ্রামের ঐতিহ্য। এখন দেশ ছড়িয়ে বিদেশেও ভাল খ্যাতি রয়েছে এই গ্রামের। বনকাপাসির শোলার সাজ পাড়ি দেয় বিদেশেও।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী