কলকাতা হাই কোর্ট

Daughter Kidnapping Case: ‘নিজের মেয়েকেই অপহরণ বাবার’! হাইকোর্টের দ্বারস্থ শিশুর মা, স্বামীর অফিসকর্মীদের আদালতে হাজিরা, তোলপাড়

কলকাতা: নিজের মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে। স্বামীর বিরুদ্ধে সন্তান অপহরণের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, সন্তানকে ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছেন স্বামী। তিনি যে কোনও সময় বিদেশে চলে যেতেন পারেন। তাঁকে যে কোনও উপায়ে আটকানো হোক। পুলিশও স্বামীকে খুঁজে পাচ্ছে না। হাইকোর্টে ওই মায়ের আবেদন, সন্তানকে ফিরিয়ে দিক আদালত।

সন্তান নিয়ে ‘পলাতক’ ওই ব্যক্তিকে খুঁজতে দেশ জুড়ে তল্লাশি করতে বলে বিচারপতি দেবাংশু বসাক ডিভিশন বেঞ্চ। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তকারী অফিসারকে ওই ব্যক্তির খোঁজ শুরু করতে হবে। সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে যে কোনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবে পুলিশ।

এবার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার নামী কোম্পানির শীর্ষ আধিকারিকদের এজলাসে হাজিরা দিতে হল শুক্রবার। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ডিভিশন বেঞ্চে হাজির হলেন কোম্পানির ডিরেক্টর, কোম্পানি সিকিউরিটি ও এইচ আর ম্যানেজার। কারণ সেই সংস্থায় কাজ করছেন বাবা। মায়ের করা মামলায় পুলিশ সন্তানের হদিশ দিতে ব্যর্থ। তাই বাবার লোকেশন ট্র্যাক করতে কোম্পানির আধিকারিকদের তলব  হাইকোর্টের।

আরও পড়ুন: অভিনেতার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ! বাড়িতে ডেকে ঘরবন্দি করে হেনস্থা অভিনেত্রীকে

২০১২ সালে কলকাতার হাইল্যান্ড পার্কের বাসিন্দা অঙ্কন সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয় শ্রাবণী দত্তের। ২০২২ সাল থেকে তাঁদের সম্পর্কে ভাঙন ধরে। আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন স্বামী ও স্ত্রী। তাঁদের পাঁচ বছরের কন্যা সন্তান কার কাছে থাকবে, তা নিয়ে কোর্টে মামলা দায়ের হয়। কন্যার অভিভাবকত্বের অধিকার নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বাবা। নিম্ন আদালত জানায়, ওই নাবালিকা মায়ের কাছেই থাকবে। তবে ছুটির দিন তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারবেন বাবা। মায়ের দাবি, কোর্টের ওই নির্দেশ তিনি মেনে নেন। কয়েক সপ্তাহ ঠিক ভাবেই চলছিল। ১২ মে ২০২৪ এক রবিবার শপিং মলে যাওয়ার পথে মেয়েকে ছিনতাই করে নিয়ে যান স্বামী। ওই মহিলার বক্তব্য, একটি গাড়িতে করে এসে তাঁর স্বামী মেয়েকে তুলে নিয়ে যান। তার পর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া য়নি।

ওই ঘটনায় নিম্ন আদালত শিশু-সহ বাবাকে হাজিরার নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় অঙ্কনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তাতেও কাজ না হওয়ায় শিশুকন্যাকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে ‘হিবিয়াস কর্পাসে’র অধীনে মামলা করেন শ্রাবণী।

বিচারপতি দেবাংশু বসাকের পর্যবেক্ষণ, ওই ব্যক্তি নিউটাউনের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করেন। ওই সংস্থার পক্ষে তাঁর হদিশ দেওয়া সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তির ডিরেক্টরকে সহযোগিতার নির্দেশ দেয় আদালত। ডিরেক্টর জানান, অঙ্কন অফিসে গিয়ে কাজ করছেন না। তিনি বাড়ি থেকে কাজ করছেন। ডিভাইস বলছে, ওই ব্যক্তি রাজ্যের বাইরে চলে গিয়েছেন। এর আগে তিনি মুম্বই থেকে বসে অফিসের কাজ করেছেন। আবার ওই ব্যক্তির ডিভাইস চালু হলে বলা সম্ভব তিনি ঠিক কোথায় রয়েছেন।

সন্তানের মায়ের আইনজীবী কৃষ্ণেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কাছ থেকে ওই ব্যক্তির মোবাইল নম্বর, ইমেল আইডি, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর-সহ সমস্ত তথ্য নিয়ে অবিলম্বে খোঁজার কাজ শুরু করুক। আগামী ২৮ অগাস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন পুলিশকে রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে।