লাইফস্টাইল Without Sugar Lifestyle: টানা ১৪ দিন চিনি না খেলে কী হয় শরীরে? জানলে অবাক হবেন, ‘এইগুলো’ করবেন আপনিও Gallery August 27, 2024 Bangla Digital Desk রোজকার জীবনের খাদ্যতালিকায় কোনো না কোনোভাবে চিনি থাকেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, অ্যালকোহল ও তামাকের মতো চিনিও আসক্তিকর। কারণ, চিনি সরাসরি রক্তে মিশে যায় এবং অতি উচ্চ মাত্রার ফ্রুকটোজ তৈরি করে নেশা সৃষ্টি করে। বেশি চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার খেলে খুব ক্লান্ত লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে, চিন্তাশক্তি কমে আসতে শুরু করে, শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে। জনপ্রিয় পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহ জানান, অতিরিক্ত চিনি খেলে লিভার, অগ্ন্যাশয় এবং অন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। সঙ্গে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। অত্যধিক ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে, অনেক দিনের অভ্যাস থাকলে হঠাৎ চিনি ছেড়ে দেওয়া কঠিন! অল্প সময়ের জন্য ছেড়ে দেখুন। বদল আসবে শরীরে! কী হবে টানা ১৪ দিন চিনি না খেলে, জানেন? অনেকেই আছেন, যাঁরা সচেতন ভাবে চিনি ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ ওজন কমানোর ইচ্ছায়, কেউ আবার ডায়াবেটিসের ভয়ে চিনি খাওয়া বন্ধ করছেন। কর্মব্যস্ত জীবনে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, ঘুমের ঘাটতি, অত্যধিক মানসিক চাপের কারণে শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক রোগব্যাধি। হজমের সমস্যা, নিদ্রাহীন রাত কাটানোর মতো সমস্যা দূর করতে পারে ১৪ দিন চিনিমুক্ত থাকতে পারলে। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু আশ্চর্য উপকারিতাও আপনি পাবেন। ১৪ দিন চিনিমুক্ত থাকলে আপনার শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব খেয়াল করতে পারবেন ধাপে ধাপে। ১-৩য় দিন: প্রথম তিনটি দিন সবচেয়ে কঠিন। কারণ, প্রথমে আপনার শরীরকে চিনি না খাওয়াতে অভ্যস্ত করাতে হবে। কিন্তু কোনো ‘নেশাদ্রব্য’ হঠাৎ করে বন্ধ করলে শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ সময় মাথাব্যথা, পেটব্যথা, ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। চিন্তার কিছুই নেই, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ সময় চিনির যে ক্ষতিকর উপাদান শরীরে জমা ছিল, শরীর তা নিষ্কাশনের কাজ শুরু করবে। তবে শরীরের অন্য সব প্রক্রিয়া চলতে থাকবে স্বাভাবিক নিয়মে। ৪-৭ম দিন: মনোযোগ ও শক্তি বৃদ্ধি হয় চতুর্থ দিন থেকে। এ সময় আপনি শারীরিক শক্তি ও মনোযোগ ফিরে পেতে শুরু করবেন। সপ্তম দিনে নিজেকে শক্তিশালী ভাবতে থাকবেন। আপনার মনোযোগ আগের চেয়ে বেড়ে যাবে। ৮-১০ম দিন: শরীর চিনিমুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার পাচনতন্ত্র দারুণভাবে কাজ করতে শুরু করবে। এটা অষ্টম দিন থেকেই শুরু হবে। এ সময় অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্য খুঁজে পেতে শুরু করে। পেট ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা কমতে শুরু করে। ১১-১৪তম দিন: খিদে কমে যাবে এবং ঘুম ভালে হবে দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে। এ সময় আপনার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করবে। চিনি শরীরের ঘুমচক্রে বিঘ্ন ঘটায়, তাই আপনার নিদ্রাহীনতা দূর হয়ে ভালো ঘুম হবে। এ সময় খিদে কমে গেলে আপনার বারবার খেতে ইচ্ছা করবে না বলে ওজনও কমে যাবে। চিনিবিহীন থাকার দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা ১৪ দিনের চিনিমুক্ত জীবন শুরু করলে আপনি দীর্ঘমেয়াদি কিছু সুবিধাও পাবেন। যেমন হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমবে, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে, রক্তে শর্করার মাত্রা থাকবে স্থিতিশীল। শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, কিডনির সমস্যা, চোখের সমস্যা দেখা দেয় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসক বলেন, “অত্যধিক চিনি খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। এটি ব্যক্তির মুড পরিবর্তন, ক্লান্তি এবং বৌদ্ধিক দুর্বলতাও সৃষ্টি করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী চিনি গ্রহণ হৃদরোগ, মানসিক রোগ এবং বিভিন্ন ক্যানসারের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এছাড়াও, এটি স্থূলতা এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে এবং প্রজনন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।” যদিও চিকিৎসকেরা আমাদের স্বাস্থ্যের উপর চিনির নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সবসময়ই সতর্ক করেন, কিন্তু একথাও ঠিক যে আমাদের খাদ্য থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া এত সহজ নয়। কারণ চিনি অল্প বিস্তর প্রায় সব খাওয়ারেই থাকে। এসব নিয়ন্ত্রণে থাকবে ১৪ দিন চিনি না খেলে। ত্বকের স্বাস্থ্যও ভালো হবে খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়ার ফলে। ব্রণ ও একজিমা কমতে শুরু করবে। অকালবার্ধক্য ঠেকানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। মেজাজ ও স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি খেয়াল করবেন। এ ছাড়া বিষণ্নতা দূর করতেও এটি মোক্ষম দাওয়াই। কাজকর্মে মনোযোগ পাবেন বেশি।