পাঁচমিশালি IC 814- The Kandahar Hijack Exclusive: ফের শিরোনামে কান্দাহার হাইজ্যাক; কার নির্দেশে অপহৃত বিমানটি ভারত থেকে কান্দাহার পৌঁছেছিল? অবশেষে প্রকাশ্যে এল সত্য Gallery September 4, 2024 Bangla Digital Desk বর্তমানে চর্চার শিরোনামে রয়েছে ‘দ্য কান্দাহার হাইজ্যাক’। আসলে ১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি উড়ান হাইজ্যাক করেছিল জঙ্গিরা। তার উপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে এই ওয়েব সিরিজটি। যা নিয়ে ঘটনার দীর্ঘ ২৫ বছর পরেও শুরু হয়েছে চর্চা। কারণ এই সিরিজটি দেখার পর দর্শকের মনে বেশ কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হল – কে ওই উড়ানটিকে অমৃতসর থেকে উড়ে ভারতীয় আকাশসীমা থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন? আর কেনই বা দিয়েছিলেন? File Photo CNN-News18-এর উত্তর সন্ধান করতে গেলে সরকারি সূত্র থেকে জানতে পেরেছে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের যুগ্ম সচিব জে লালের নাম করে একটি উড়ো ফোন গিয়েছিল। যার জেরেই উড়ানটিকে অমৃতসর থেকে ওড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টা একটু মনে করিয়ে দেওয়া যাক। ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের উড়ান IC-814। ওড়ার ৪০ মিনিটের মধ্যেই মুখোশধারী ৫ ব্যক্তি সেটিকে হাইজ্যাক করে। এরপর অপহরণকারীরা বিমানের ক্যাপ্টেন দেবী শরণকে নির্দেশ দেয় যে, উড়ানের অভিমুখ ঘুরিয়ে পাকিস্তানি বায়ুসীমার মধ্যে নিয়ে যেতে হবে। যদিও সেখানে তারা অবতরণের অনুমতি পায়নি। এরপর উড়ানটিকে অমৃতসরে অবতরণ করানো হয়। সেই সময় বিমানে মাত্র ১০ মিনিটের জ্বালানিই বেঁচে ছিল। এরপর অমৃতসর বিমানবন্দর থেকে জ্বালানি ভরে নিয়ে অপহরণকারীরা উড়ানটিকে আবার লাহোরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও সেবার পাকিস্তানি এটিসি রানওয়ের সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়েছিল। এমনকী তারা নেভিগেশনের ক্ষেত্রে সহায়তা করেনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনুমতি মেলে। বিমানে ফের জ্বালানি ভরা হয় এবং সেটি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে উড়ে যায়। সেখানেও অনুমতি না মেলায় অবশেষে তা গিয়ে অবতরণ করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আল মিনহাদ বায়ুসেনাঘাঁটিতে। উড়ানে থাকা ১৭৬ জন যাত্রীর মধ্যে ২৭ জনকে মুক্তি দেয় অপহরণকারীরা। এর মধ্যে ছিল ২৫ বছর বয়সী তরুণ রুপিন কাটিয়ালের দেহও। যাঁকে কুপিয়ে খুন করেছিল জঙ্গিরা। সব শেষে তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের কান্দাহার বিমানবন্দরে গিয়ে নামে উড়ানটি। এরপর তৎকালীন অটল বিহারি বাজপেয়ী সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে আসে অপহরণকারীরা। এরপর ৩০ ডিসেম্বর আহমেদ ওমর সইদ শেখ, মাসুদ আজহার এবং মুস্তাক আহমেদ জারগারের নামে তিন জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে মুক্ত করা হয় পণবন্দিদের। সরকারি সূত্রের মতে, কেন্দ্রের যুগ্ম সচিব জে লালের নাম করে যে ভুয়ো কলটি এসেছিল, তাতে অমৃতসরের শ্রীগুরু রামদাসজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (সেই সময় রাজা সানসি বিমানবন্দর)-এর কর্মীদের একপ্রকার জোর করেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, ব্যারিকেড সরিয়ে উড়ানটিকে অবতরণ করার অনুমতি দিতে হবে। এরপর অমৃতসরে অবতরণ করার পরে ক্যাপ্টেন উড়ানে জ্বালানি ভরতে চান। সূত্রের দাবি, জঙ্গিদের কবল থেকে উড়ানটিকে বাঁচাতে কোনও রকম চেষ্টা করা হয়নি। কারণ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তখনও বোঝেননি যে, উড়ানটি অপহরণ করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, সেই সময় ক্যাপ্টেন অসহায় বোধ করছিলেন। ফলে উড়ানটিকে এবং তার আরোহীদের বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টাও করেছিলেন। সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের থেকে একটি ফোন কল আসে। বলা হয় যে, উড়ানটিকে থামাতে হবে এবং ট্যাঙ্কারগুলি ধীরে ধীরে এগোতে হবে। যাতে অপহরণকারীরা ভাবে যে, জ্বালানি ভরতে আসছে তারা। কিন্তু এরই মাঝে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আরও একটি ফোন আসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিবের কাছ থেকে। তিনি চেয়েছিলেন, উড়ানটি যেন মাটিতেই থাকে। যাতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। আর স্থানীয় পঞ্জাব পুলিশও যাতে সতর্ক হতে পারে। Photo: Netflix