দুর্ধর্ষ পুষ্টিগুণ! উপকার শুনলে মুঠো মুঠো ওষুধ ছেড়ে খাবেন মুঠো মুঠো এই শুকনো ফল। কিন্তু আগে জানুন কখন আর ঠিক কী ভাবে খাবেন। দেখে নিন যা বলছেন বিশেষজ্ঞ।সুস্থ থাকতে ড্রাইফ্রুটের উপকারিতা কে না জানে। তবে বাকি সব ড্রাইফ্রুট সময় ও নিয়ম মেনে খেলেও এই একটি ড্রাইফ্রুটকে আমরা প্রায়ই একটু হেলাফেলার চোখেই দেখে থাকি। টাইম পাস হিসেবে প্রায়ই আমরা এই একটি ড্রাইফ্রুট খাই হয়ত কিন্তু আদৌ কী জানি এর ফলে শরীরে ঘটে যাচ্ছে।দশ টাকায় প্রচুর পাওয়া যায়। আর এতেই রয়েছে এত বেশি ভিটামিন এবং খনিজ যে যাঁরা এটি খাবেন নিয়ম মেনে তাঁরা এর থেকে চাইলে কাজু, কিশমিশ এবং আমন্ডের মতোই শক্তি পেতে পারেন।আজ এই প্রতিবেদনে আমরা চিনাবাদাম ও তার উপকারিতা নিয়ে কথা বলছি। ১০ টাকা দামের এই শুকনো ফল খাওয়ার ১০টি উপকারিতা রয়েছে। যা অনেকেরই একেবারেই অজানা।চিনাবাদামে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। এটি খেলে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভাল হয় এবং হজম প্রক্রিয়ারও উন্নতি হয়। এছাড়া এটি হাড় মজবুত করতেও কাজ করে। আসুন জেনে নিই, চিনাবাদাম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং কী ভাবে এটি খাওয়া উচিত।আলপিনো হেলথ ফুডস-এর সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা চেতন কানানির মতে, চিনাবাদাম এর চর্বিযুক্ত উপাদানের ‘অস্বাস্থ্যকর’ ভেবে অনেকেই এড়িয়ে যান। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।চিনাবাদাম আসলে অসম্পৃক্ত চর্বির একটি ভাল উৎস, যা হৃদয়-স্বাস্থ্য দেখভালে দুর্দান্ত কার্যকরী বলে মনে করা হয়। এই চর্বিগুলি প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন ই এবং বি ভিটামিনে পরিপূর্ণ, যা শক্তি বৃদ্ধি এবং একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেমে দেয়।তাঁর কথায়, “চিনাবাদাম হল প্রোটিন এবং ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস, বিশেষ করে ব্যস্ত জীবনযাপনের জন্য একদম পারফেক্ট পুষ্টিকর খাবার। যাঁরা প্রোটিন গ্রহণ বাড়াতে আগ্রহী অথচ ওজন বা রোগ ব্যাধি চান না, তাদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত সমাধান”৷১. পুষ্টিগুণে ভরপুর: এটি খেলে আপনার শরীর শুধু একটি নয় বরং একগুচ্ছ পুষ্টি পাবে। এতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাসিয়ামের মতো খনিজ উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।২. হার্টের স্বাস্থ্য: চিনাবাদামে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায় এবং ভাল কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়। এর ফলে হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকে এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমে।৩. ওজন কমাতে সহায়ক: চিনাবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে, যা আপনাকে দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধার্ত রাখে না। এই কারণে আপনি কম ক্যালোরি গ্রহণ করেন এবং এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।৪. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে: চিনাবাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ডায়াবেটিস রোগীরা সন্ধ্যার নাস্তায় চিনাবাদাম খেতে পারেন।৫. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : চিনাবাদামে রেভেরাট্রল এবং ভিটামিন ই এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আপনাকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে এবং কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে দেয় না।৬. মস্তিষ্কের জন্য: এতে নিয়াসিন (ভিটামিন বি 3) এবং রেসভেরাট্রল রয়েছে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং স্মৃতিশক্তিকে তীক্ষ্ণ করে। এর পাশাপাশি যারা চিনাবাদাম খান তাদের অ্যালঝাইমারের মতো রোগের ঝুঁকিও কম থাকে।৭. হজমের জন্য: চিনাবাদামে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার, যা পরিপাকতন্ত্রের উন্নতিতে সাহায্য করে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না।৮. হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য: চিনাবাদামে ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে যা হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। এটি খেলে বাতের মতো হাড়ের রোগের ঝুঁকি কমে।৯. প্রোটিন সমৃদ্ধ: চিনাবাদামে প্রোটিন থাকে, যা পেশী তৈরি ও মেরামত করতে সাহায্য করে।১০. ত্বকের জন্য: চিনাবাদামে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। এটি খেলে তাড়াতাড়ি বার্ধক্য হয় না। ত্বকে বলিরেখা দেখা যায় না।যেভাবে খাবেন: অন্যান্য শুকনো ফলের মতো চিনাবাদামও সারারাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে পারেন। এ ছাড়া তেল ছাড়া ভুনা করে টিফিনে বা স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন। তবে খোসা ছাড়ানো চিনাবাদাম ভুনা করে খেতে পারলে ভাল হবে। এ কারণে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না।
