পূর্ব বর্ধমান : পুজোর আগে ঝুঁকি নিয়ে শাড়ি বুনতে হচ্ছে তাঁতিদের। তাঁতিদের পরিস্থিতি বর্তমানে এক্কেবারে ভয়াবহ। তবে একসময় জেলার তাঁতিদের হাতে বোনা তাঁতের শাড়ির ব্যাপক কদর ছিল। জেলার বেশ কিছু তাঁতি তাঁত বুনে রাষ্ট্রপতির কাছে পুরস্কারও পেয়েছিলেন। তবে এখন আর হাতে বোনা তাঁতের শাড়ির সেই কদর নেই। তাঁতিদের হাতে বোনা তাঁতের শাড়ির কদর তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বছর খানেক আগেও এইসময় অর্থাৎ পুজোর আগে তাঁতের শাড়ির চাহিদা থাকতো তুঙ্গে। রাত দিন পরিশ্রম করে তাঁতিরা শুধুমাত্র ব্যস্ত থাকতেন শাড়ি তৈরিতে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে, লক্ষ লক্ষ টাকার অর্ডার পেতেন শিল্পীরা। পুজোর আগে জোরকদমে চলত নানান ধরনের তাঁতের শাড়ি তৈরির কাজ। তবে এখন ঝুঁকি নিয়ে শাড়ি তৈরি করতে হচ্ছে শিল্পীদের। এই প্রসঙ্গে তাঁত শিল্পী তপন বসাক জানিয়েছেন, “পুজো এগিয়ে আসছে বলে মনেই হচ্ছেনা। আগে এই সময় হুটোপাটা লেগেই থাকত। শাড়ির ব্যাপক চাহিদা ছিল। সারাক্ষণ কাজ চলত তাঁতের। কিন্তু এখন শাড়ির চাহিদা নেই। কয়েকটা শাড়ি তৈরি করেছি , ব্যাবসাদাররা বলেছে প্রয়োজন হলে নেবে।”
আরও পড়ুন : এই প্রথম বর্ধমানের সেপাই ঘোড়া সাজাবে কলকাতার পুজো প্যান্ডেল, দেখুন
পুজো এগিয়ে আসতেই আনন্দে মেতে ওঠেন প্রায় সকলেই। পুজো নিয়ে থাকে এক আলাদা উত্তেজনা, উন্মাদনা। সেরকমই বছর কয়েক আগেও শাড়ি তৈরি করে হাসিখুশি ভাবে পুজোয় দিন কাটাতেন তাঁত শিল্পীরা। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। পুজো যত এগিয়ে আসছে ততই চিন্তা বাড়ছে শিল্পীদের। চিন্তা বাড়ছে তার কারণ, চাহিদা নেই শাড়ির কমেছে বিক্রি। কাজ হারাতে হয়েছে জেলার বহু তাঁতিকে। উপার্জন একেবারে নেই বললেই চলে। রোজগারের তাগিদে অনেকেই পাড়ি দিয়েছেন ভিন রাজ্যে।
আরও পড়ুন : বর্ধমানে তৈরি কাঠের পুতুল এবার পাড়ি দেবে মুম্বাই
তাঁতের কাজ ছেড়ে উপার্জনের তাগিদে শিল্পীদের বেছে নিতে হয়েছে অন্য রাস্তা। তবে এখনও বিক্রি হওয়ার আশায় ঝুঁকি নিয়েই শাড়ি বুনেছেন বেশ কিছু তাঁতি। শাড়ি তৈরির সামগ্রী কেনার জন্য অল্প স্বল্প দেনাও করতে হয়েছে বেশ কিছু শিল্পীকে। কিন্তু এখন শুধু বিক্রির অপেক্ষায় তাঁরা রয়েছেন। লকডাউনের পর থেকে বদলে গিয়েছে জেলার তাঁত শিল্পীদের পরিস্থিতি।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
একরকম যেন হারিয়ে যেতে বসেছে দীর্ঘদিনের পুরানো শিল্প। পুজোর আগে মন খারাপ জেলার তাঁতিদের।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী