বাঁকুড়া: এক সময়ের রাজ্য দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন তিনি। খেলছেন জাতীয় স্তরে। দীর্ঘ দিন যুক্ত আছেন ক্রীড়ার সঙ্গে। শটপাট এবং ডিসকাস থ্রোতে যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেছেন৷ বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন সানবাঁধা গ্রামের বাসিন্দা শান্তনা সিংহ, রাজ্য ‘আতিয়া পাতিয়া’ মহিলা দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন ২০০৬ সালে। এরপর রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেছেন একাধিক স্পোর্টস যেমন, অ্যাথলেটিক্স, শটপাট এবং ডিসকাস।
রাজ্য স্তরে দুর্দান্ত ফলাফল হলেও সময়ের চাকা জোট এগিয়েছে ঠিক ততটাই যেন, সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে তাঁর। বর্তমানে আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত তিনি। বাড়িতে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বয়স্ক বাবা। নিজের স্পোর্টস কোটা ব্যবহার করেও কোনও লাভ হয়নি বলেই তিনি জানিয়েছেন। না সরাসরি ক্রীড়াবিদ হিসেবেও রোজগার করে অর্থের সচ্ছ্বল প্রবাহ তৈরি করে উঠতে পারেননি৷ বাঁকুড়ার শান্তনার তবুও লড়াই চালাচ্ছেন৷ সব রকম অন্ধকার মুছে ফেলে নিজেকে এখনও ফিট রেখেছেন তিনি। মাঠেও দেখা যায় তাঁকে।
যদিও দোষারোপ নয়। তিনি বলছেন কোনও ভাবে হয়ত মিস করে গেছেন তিনি অথবা নজরে পড়েননি। কারণ তৎকালীন সময়ে স্পোর্টস এর দৌরাত্মে চাকরির সুযোগ পেয়েছেন বহু আবেদনকারী খেলোয়াড়। রাজ্যস্তর হোক কিংবা জাতীয় স্তর, ক্রীড়ার গুরুত্ব কি কমছে? সেই প্রশ্ন বারেবারে উঠছে প্রান্তিক অঞ্চল থেকে। শান্তনা সিংহ বলেন খেলার সঙ্গে ৪ বছর বয়স থেকে যুক্ত থাকার পরও কিছু না পেয়েও আজও তিনি খেলেতে ভালোবাসেন। তবে সেই ভালোবাসায় মরচে পড়েছে বাস্তবতার কারণে। আর্থিক পরিস্থিতির সামাল দিতে, বাঁকুড়ার একসময়ের ক্ষিপ্র এই মহিলা খেলোয়াড় আজ চাইছেন খেলার মাঠ ছেড়ে অফিসের কাজ করতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় সেই সুযোগও পাননি তিনি বছরের পর বছর।
খেলাধুলায় যারা ভাল হয়, তারা দেশের হয়ে খেলার জন্য স্বপ্ন দেখেন। ভারতের মত বিরাট জনসংখ্যা বহুল দেশে সকলের জায়গা হয় না দেশের দলে। বহু প্রতিভা নষ্ট হয় অর্থ এবং প্রতিষ্ঠার অভাবে। এরমধ্যে কাজ করে একাধিক আনুষঙ্গিক ফ্যাক্টর যেমন অঞ্চল, ব্যাক সাপোর্ট এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা। তার জ্বলন্ত উদাহরণ প্রান্তিক বাঁকুড়ার ন্যাশনাল খেলা সান্তনা সিংহ।
Neelanjan Banerjee