বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ হওয়ার দাবি৷

Bangladesh: অন্তর্বর্তী সরকারের উপরে চটলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতারা? উঠল নিরপেক্ষ হওয়ার দাবি

Arun Anand

ঢাকা: বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া সরকারবিরোধী রক্তক্ষয়ী আন্দোলন আর তার পরেই ক্ষমতার পালাবদল। হাসিনা সরকার তথা আওয়ামি লিগের পতনের পরই সেই দেশের দায়িত্ব পেয়েছে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। মহম্মদ ইউনুসের তত্বাবধানে এই সরকার বর্তমানে বাংলাদেশকে পরিচালনা করছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সহায়ক হিসেবে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ইতিমধ্যেই হাসিনা সরকারকে উৎখাতের দিক থেকে তারা দেশে অন্যতম প্রধান ভূমিকা নিয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ যেমন কাউকেই সমর্থন করছেন না। ছাত্রদের এই দলের লক্ষ্য হল, বাংলাদেশে এমন এক সরকার গড়ে তোলা, যারা দেশে সুশাসন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে এবং স্বৈরাতান্ত্রিক মনোভাব থেকে দূরে থাকবে।

আরও পড়ুন: এক দেশ, এক নির্বাচনের প্রস্তাবে ছাড়পত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা, শীতকালীন অধিবেশনেই বিল পেশ?

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতাদের মতে দেশে এক নিরপেক্ষ সরকার গঠন হোক। ইতিমধ্যেই বিএনপির বেশ কিছু সমর্থক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাটোরে আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে নিহতদের পরিবারের সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে মত বিনিময় সভায় সম্প্রতি বিএনপির সমর্থকেরা অতর্কিতে হামলা চালায়। নাটোরের অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ঘটনাটি ঘটে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মতে, বিএনপি তাঁদের ভয় পাচ্ছে, তারজন্যই তারা সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা হাসনাতের কথা শুনলেই বুঝতে পারা যায়, তাঁদের সংগঠন বাংলাদেশে অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির সমর্থকদের সঙ্গে তাদের ঘন ঘন সংঘাত এটি আরও প্রকট করে তুলেছে ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটাই উদ্দেশ্য দেশে অগণতান্ত্রিকতা, ফ্যাসিবাদের উচ্ছেদ। সঙ্গে এমন এক স্বতন্ত্র সরকারের উন্মোচন যা বাংলাদেশকে সঠিক দিশা দেখাবে। বিগত কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশে যে টালমাটাল পরিস্থিতি তা নিয়ে চিন্তিত গোটা বিশ্বের রাজনীতি। হাসনাত আব্দুল্লাহ বিএনপিকেও একহাত নিয়েছেন, তাঁদের কপটতা ও গুণ্ডাবৃত্তির জন্য। হাসনাতের মতন, সরকার ফিরে ফিরে আসে। তাঁর মতে ফ্যাসিবাদের সিম্বল, বিভিন্ন ইস্যু তৈরী করে মানুষকে ব্যস্ত রাখা। ফোকাস থেকে সরিয়ে আনা। হাসনাত আরও জানান, বিএনপি কি করছে বোঝা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থা মারাত্মক টালমাটাল অবস্থা দিয়ে চলছে। অন্তর্দেশীয় কোলাহল থেকে শুরু করে বহির্বিশ্বে বিপুল ঋণ। সব দিক থেকে অসুবিধার ভিতরে থাকা এই দেশ ছাত্র বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন আর অন্তর্বর্তী সরকারের দেখানো পথে এগোচ্ছে। বিএনপি যে দেশের পক্ষে অশুভ এক শক্তি তা তাঁর কথাতেই পরিষ্কার।

যেখানে বাংলাদেশ গোটা এক অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে দাঁড়িয়ে, সেখানে দলগুলির এই পারস্পরিক কলহ, আগুনে যেন ঘৃতাহুতি করে চলেছে। বলাই চলে ছাত্ররা গোটা বাংলাদেশকে বর্তমানে চালনা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থনে বেশ খানিকটা স্বাধীনতা পেলেও, তাদের নিজেদের ভুলে তাঁরা প্রায়ই ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে অথবা ভুল পদক্ষেপ নিচ্ছে। যার ফলে বিএনপির মতন বিরোধী শক্তিগুলিও সুবিধা পাচ্ছে বিভিন্ন দিক থেকে আক্রমণ শানানোর। বিএনপির একের পর কাজ বাংলাদেশকেও বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিরপেক্ষ সরকারের আশা করলেও, তাদের গতিপ্রকৃতি এখনো পরিষ্কার নয়। অনেকের মতে, তারা কি চায় তারা নিজেরাও জানে না। বর্তমানে বাংলাদেশ পড়ে আছে এক বিশাল যাঁতাকলে। ছাত্রদের শাসন কোনদিকে গতি নেবে তা জানে না কেউই।