কলকাতা: যাত্রার সময় যাত্রীদের সুরক্ষা ও সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়াই উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের প্রধান লক্ষ্য। এর জন্য তার পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ ও উন্নীতকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে, যাতে সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্যের উচ্চ মানদণ্ড পূরণ করা যায়। ভারতীয় রেলওয়ের আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টা অনুযায়ী, উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে তার রুটগুলিতে চলাচল করা ট্রেনগুলিতে প্রচলিত আইসিএফ কোচগুলিকে আধুনিক লিংকে হফম্যান বুশ (এলএইচবি) কোচে রূপান্তর করার কাজ চালাচ্ছে।
এই আধুনিক এলএইচবি কোচগুলি ফায়ার অ্যান্ড স্মোক ডিটেকশন সিস্টেম (এফএসডিএস), ফায়ার ডিটেকশন সাপ্রেশন সিস্টেম (এফডিএসএস)-এর পাশাপাশি অ্যারোসল ভিত্তিক ফায়ার ডিটেকশন সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা সজ্জিত। বর্তমানে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধীনে মোট এলএইচবি রেকের সাথে ৬২ জোড়া ট্রেন পরিচালন করা হচ্ছে (নতুন প্রবর্তন সহ)। এলএইচবি কোচগুলি সংঘর্ষ প্রতিরোধী প্রযুক্তি দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছে, যার ফলে দুর্ঘটনার সময় প্রাণহানি কম হয়। এছাড়াও, উচ্চ গতির সময় দক্ষ ব্রেকিং ব্যবস্থার জন্য প্রত্যেকটি কোচে রয়েছে একটি করে “অ্যাডভান্সড নিউমেটিক ডিস্ক ব্রেক সিস্টেম”।
মোট ১০৬০টি এলএইচবি এসি কোচে এফএসডিএস, ১৫৩টি পাওয়ার কার এবং ৬৮টি প্যান্ট্রি কারে এফডিএসএস স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি ২৬৭টি এসি কোচ অ্যারোসল ভিত্তিক ফায়ার ডিটেকশন সিস্টেম দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে। ট্রেনে আগুন শনাক্তকরণ ব্যবস্থার ফলে অনাকাঙ্খিত অগ্নিকাণ্ডের সম্মুখীন হওয়া ট্রেনের যে কোনও কোচের অবস্থান নিরীক্ষণে সাহায্য হয় এবং এর প্রতিরোধের জন্য অ্যালার্ম বাজাতেও সাহায্য করে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শনাক্তকরণের পূর্বাভাস এবং নির্ভরযোগ্য সতর্কবাণী আতঙ্ক ও আঘাত প্রতিরোধ করতে পারে, যার ফলে ট্রেন পরিষেবায় ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি কম হয়।
সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে সমস্ত পাওয়ার কার, প্যান্ট্রি কার এবং এসি কোচগুলিকে পর্যায়ক্রমিকভাবে উপযুক্ত অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা দ্বারা সজ্জিত করা হচ্ছে।রেলের নিরাপত্তার উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং এর উন্নয়ন করার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালানো হয়। পাশাপাশি, সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ, সুরক্ষা প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিগত ত্রুটির দুর্বল স্থানগুলি চিহ্নিত করতে এবং যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধের উপায় প্রদান করতে নিয়মিত বিরতিতে রেলের পরিকাঠামোর পর্যায়ক্রমিক সুরক্ষা অভিযান, সুরক্ষার পরীক্ষা-নিরীক্ষা/পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।