ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা

Manik Saha: উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রকে আরও সহজ করার লক্ষ্য! মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যে বড় প্রতিশ্রুতি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর

আগরতলা: শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অগ্রাধিকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকারও। এজন্য শিক্ষাক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

আগরতলা টাউন হলে রাজ্যের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে সিএম-সাথ (CM SATH) প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই বৃত্তি প্রকল্পের উদ্বোধনের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে সফল হওয়া কৃতি ছাত্রছাত্রীদের তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সিএম-সাথ প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: আসছে নিম্নচাপ..! তৈরি ‘শিয়ার জোন’..! রাজ্যে রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা, আগামী ২৪ ঘণ্টায় কী হতে চলেছে বাংলায়? আইএমডি দিল বড় আপডেট

শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি ও কর্মসূচি তৈরি করা এবং প্রকৃত অর্থে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। এর পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করা, অবহেলিত, দরিদ্র, জনজাতি, মহিলা ও সংখ্যালঘুদের শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করা, যোগ্য ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ, ঋণ ইত্যাদির মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা এবং রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে জাতীয় শিক্ষানীতি ও সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।

উল্লেখ্য, এই প্রকল্পে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের মেধাক্রম অনুযায়ী ১০০ জন শিক্ষার্থীকে ২ বছরের জন্য ৫ হাজার টাকা করে এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ফলাফলের মেধাক্রম অনুসারে ১০০ জন শিক্ষার্থীকে ৩ বছরের জন্য মাসিক ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পে ব্লকস্তরে ১৫২ জন, নগর পঞ্চায়েত স্তরে ১২ জন, পুর পরিষদ স্তরে ২৬ জন এবং আগরতলা পুর নিগম স্তরে ১০ জন করে মোট ২০০ জন সুবিধাভোগীকে নির্বাচন করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রতিটি জেলার জেলা শিক্ষা আধিকারিকের মাধ্যমে এই ২০০ জন সুবিধাভোগীকে নির্বাচন করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটি একটি বৃত্তিমূলক প্রকল্প, যা পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবে। আর্থিক অভাবে কোন শিক্ষার্থীর পড়াশোনায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সে লক্ষ্যেই এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য প্রথম বছরে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় বছরে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা এবং তৃতীয় বছর থেকে ৩ কোটি টাকা করে ব্যয় করা হবে।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তা কার্যকরও করছে।

দশম শ্রেণী পাশ ৩০ জন সেরা ছাত্রছাত্রীকে নিট, জেইই ইত্যাদি পরীক্ষার জন্য উন্নতমানের কোচিং নিতে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘সুপার-৩০’ নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের জন্য প্রতিবছর ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হচ্ছে। নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘ত্রিপুরা সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন’ এবং ‘ম্যাথ ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন’ চালু করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মৌলিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘নিপুন ত্রিপুরা’ প্রকল্প চালু করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজ্যে ২০২২ সালে ‘বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প’ চালু করা হয়। রাজ্যে এখন পর্যন্ত ১২৫টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। নবম শ্রেণী উত্তীর্ণ প্রায় ১ লক্ষ ছাত্রীদের মধ্যে বাইসাইকেল প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্যের তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।