দেশে বর্ষা প্রত্যাহার চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে এরইমধ্যে ফের বৃষ্টির সতর্কতা। উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলিতে বৃষ্টির দাপট চলবে। গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণে নদ-নদীগুলি ভরা-ভর্তি হাল। তারই মধ্যে বড় আপডেট আবহাওয়ার।মৌসম ভবনের রিপোর্ট বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রত্যাহারের পথে। ফিরোজপুর, সিরসা, চুরু, আজমির, মাউন্ট আবু, দীসা, সুরেন্দ্রনগর, জুনাগড় পর্যন্ত বিস্তৃত এই রেখা। অক্ষাংশ ২১ ডিগ্রি উত্তর এবং ৭২ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্য দিয়ে যেতে চলেছে বর্ষা।দক্ষিণ-পশ্চিম উত্তর প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় একটি ঘূর্ণাবর্ত সঞ্চালন গড় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫.৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কচ্ছ উপসাগর এবং পূর্ব মধ্যপ্রদেশের কাছে একটি বিপজ্জনক ঘূর্ণাবর্ত সঞ্চালন তৈরি হচ্ছে, যার কারণে সোমবারও মুষলধারে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৫ থেকে ৬ দিন উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড এবং ত্রিপুরায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।অন্যদিকে উত্তর-পশ্চিম ভারত এবং মধ্য ভারতের রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা ইত্যাদি রাজ্যগুলির জন্য আগামী এক সপ্তাহের জন্য কোনও সতর্কতা নেই। একই সঙ্গে দক্ষিণ উপদ্বীপ ভারতেও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে যে সোমবার দক্ষিণ-পূর্ব রাজ্য মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, অসম এবং মণিপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।অন্যদিকে দেশের অন্যান্য স্থানে আবহাওয়ার কোনও তেমন সতর্কতা জারি করা হয়নি। আইএমডি জানিয়েছে, বিহার, পূর্ব উত্তর প্রদেশ এবং তাদের আশেপাশের অংশের মতো উত্তর রাজ্যগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।নেপালে ভারী বর্ষণের কারণে সেখান থেকে উৎপন্ন নদীগুলি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আর তার জেরে প্রবল বর্ষণে বিহারে বন্যার আশঙ্কা মানুষকে আতঙ্কে ফেলে দিয়েছে। ৫৬ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোসি ব্যারেজের উপর দিয়ে জল প্রবাহিত হচ্ছে।যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে বলে নিচু এলাকার লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, দিল্লি-এনসিআরে পাট গুটিয়ে এনেছে বর্ষা। সোমবার হালকা মেঘলা আকাশ থাকার সম্ভাবনা।আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এই সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লি এনসিআরে প্রবল বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে গড় বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৭% বেশি ছিল। এই বর্ষা মরশুমে জুন থেকে এখনও পর্যন্ত, দিল্লিতে ১০২৯.৯ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬১% বেশি।বাংলার পূর্বাভাস বলছে, মহালয়ার দিন ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে দু-এক জায়গায়। উত্তরবঙ্গের উপরের পাঁচ জেলায় মহালয়ার দিন থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে।তবে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। বিক্ষিপ্তভাবে কোন জেলার দু এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। আপাতত রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা নেই। ভয় অন্য। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আগামী কয়েকদিনে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়বে। স্বাভাবিকের ওপরেই থাকবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা। বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মূলত হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। আপাতত কয়েকদিন আংশিক মেঘলা আকাশ। কখনো চড়া রোদ এর সঙ্গে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ এখনো বেশি; তাই আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে।
