পাঁচমুড়ার শিল্পী

Bankura News: শুরু হতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটা মেলা, পাশেই পশ্চিমবঙ্গের বৃন্দাবন

বাঁকুড়া : বাঁকুড়ার ঐতিহাসিক গ্রামে শুরু হতে চলেছে “টেরাকোটা মেলা”। এই মেলার দিকে তাকিয়ে থাকবে গোটা রাজ্য। দুর্দান্ত ঘুরে দেখার একটা জায়গা পাঁচমুড়া গ্রাম। পাশেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বৃন্দাবন নামে খ্যাত ত্রিধারা মন্দির। বাঁকুড়া জেলার মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরত্বে পাঁচমুড়া গ্রাম বিখ্যাত টেরাকোটা অর্থাৎ পোড়ামাটির কাজের জন্য। এই গ্রামে আগামী ১৮-২০ অক্টোবর ২০২৪, শুক্র শনি ও রবিবার তিনদিন ধরে অনুষ্ঠিত হবে টেরাকোটা শিল্পের মেলা। কীভাবে পোড়ামাটির পুতুল ও মূর্তি তৈরি হয় দেখতে এবং সংগ্রহ করতে সময় পেলে চলে আসুন এই মেলায়।

পুরোনো এবং বর্ধিষ্ণু ও টেরাকোটা শিল্পীদের গ্রাম হল পাঁচমুড়া। খাতড়া মহকুমার তালডাংরা ব্লকের পাঁচমুড়া ‘টেরাকোটা’ গ্রাম। দেউলভিড়া, আধকড়া, রাধানগর, কানাইপুর, জয়পুর। পাঁচমুড়ার পাশাপাশি রয়েছে এই পাঁচ মৌজা। অনেকেরই বিশ্বাস পাঁচমুড়ার নামকরণও সেই কারণেই এমনটা। পাঁচটি মাথা অর্থাৎ স্থানীয় ভাষায় যাকে “মুড়া” বলে। তবে নামকরণের স্বার্থকতার চেয়ে শৈল্পিক স্বার্থকতা বিপুল এই গ্রামের। মৃৎশিল্পীদের গ্রাম হিসেবে তালডাংরার পাঁচমুড়া গ্রামের নাম-ডাক সর্বত্র ছড়িয়েছে। বাঁকুড়ার পরিচিতি, মাটির হাতি, ঘোড়া, মনসার চালি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমা ও গৃহসজ্জার নানান সামগ্রী, মাটি দিয়ে এই সব কাজ করতেই সিদ্ধহস্ত শিল্পীরা। পাঁচমুড়ার টেরাকোটা পেয়েছে জিআই স্বীকৃতি। পাঁচমুড়ার ঘোড়ার নাম পৌঁছে গেছে বিশ্বের দরবারে।

আরও পড়ুন : পুজো আসছে, জলদস্যুদের সঙ্গে লড়াই করে তৈরি জমিদারবাড়ির দরদালানে ধুলো ঝেড়ে টাঙানো হয় বেলজিয়াম গ্লাসের ঝাড়বাতি

শিল্পী রাসবিহারী কুম্ভকার রাষ্ট্রপতি পুরস্কার লাভ করেন ১৯৬৯ সালে। স্বাভাবিক ভাবেই শিল্পের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় পাঁচমুড়ার মানুষের। এর পরে একাধিক শিল্পী ভারত সরকার ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এই মুহূর্তে গ্রামে প্রায় ৮০ টি কুম্ভকার পরিবার রয়েছে। প্রত্যেকেই টেরাকোটা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়াও শিল্পীরা জানিয়েছেন, টেরাকোটা মেলার হাত ধরে তাদের শিল্প পৌঁছে যাবে গোটা রাজ্যের দরবারে। বারবে স্বীকৃতি এবং বিক্রি নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী তাঁরা।

আরও পড়ুন : হাজার টাকাও ছিল না পকেটে! সেখান থেকেই চমকে দিলেন বাঁকুড়ার তিন বোন! আজ বিরাট ব্যবসা

বাঁকুড়ার হাতি ঘোড়া। নাম তার জগৎ জোড়া। বাঁকুড়া জেলার হাতি ঘোড়ার ঐতিহ্য ধরে রাখার নেপথ্যে এই গ্রামের ভূমিকা অপরিসীম। তিনটি পাড়ায় বিভক্ত এই মৃৎশিল্পী পরিবার গুলি। মূল জীবিকা পোড়া মাটির শিল্প দ্রব্য তৈরি করা। বছরে বারো মাসের মধ্যে এগারো মাস কাজ চলে এই গ্রামে। বিরতি থাকে বৈশাখ মাসে। তবে বাঁকুড়ার পোড়া মাটির ঐতিহ্য যেন এখনও এককভাবে ধরে রেখেছে এই গ্রাম। তবে পুজোর মরশুমে প্রতিবছর এরকম একটি মেলা ডিজার্ভ করে বাঁকুড়ার পাঁচমুড়া গ্রাম।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী