লাইফস্টাইল Periods and Woman: পিরিয়ডসের অসহ্য যন্ত্রণা শরীরকে ঘিরে ধরে, শরীর হারায় শক্তি, কী করে সেই সময়ে পারফর্ম করেন মহিলা অ্যাথলিটরা Gallery October 7, 2024 Bangla Digital Desk প্রকৃতি এক বিশেষ কায়দায় তৈরি করেছে মহিলাদের শরীর। আসলে মহিলাদের শরীরে বিশেষ এক জৈবিক চক্র দেখা যায়। আর তাতে একটু সমস্যা হলেই গোটা শরীরের কার্যকারিতা নষ্ট পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালে অর্থাৎ মেয়েদের বয়স ১২ থেকে ১৫ বছর হলে তাদের মেনস্ট্রুয়েশন বা প্রথম ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়। আর তা চলে ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত। Photo- Representative এমনকী মেনস্ট্রুয়েশন হল মেয়েদের নারীত্বের সবথেকে বড় প্রতীক। যাদের এখনও পিরিয়ডস হয়নি, তারা পূর্ণ রূপে নারী হয়নি। এমনটাই মনে করা হয়। Photo- Representative মেনস্ট্রুয়েশন বলতে যতটা সহজ মনে হয়, তা কিন্তু একেবারেই নয়। কারণ মাসিক চক্র বা ঋতুস্রাবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে একাধিক জটিলতা। যার জেরে প্রতি মাসে মেয়েদের অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। আর সেই যন্ত্রণা শুধু শরীরেই আটকে থাকে না। তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে মস্তিষ্ক এবং মনেও। পিরিয়ডসের ঠিক আগে থেকে পিরিয়ডস একেবারে শেষ হওয়া অবধি পেট ব্যথা, ক্র্যাম্প, মুড স্যুইং এবং উত্তেজনার মতো সমস্যা হতে থাকে। Photo- Representative এই পরিস্থিতিতে কেউ কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে, পিরিয়ডসের সময় খেলা পড়ে গেলে কোন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় একজন মহিলা অ্যাথলিট বা মহিলা ক্রীড়াবিদকে। আর যন্ত্রণাদায়ক এই মুহূর্তটি যে কোনও মহিলা ক্রীড়াবিদের জীবনে উত্থান-পতন আনতে পারে। সেই বিষয়টাই দেখে নেওয়া যাক। Photo- Representative পিরিয়ডের ক্র্যাম্পের জন্য ২০১২ সালে রৌপ্য পদক হাতছাড়া হয়েছিল ভারতের সুপারস্টার মহিলা অ্যাথলিট মেরি কমের। এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। স্ক্রোল ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে যে, লন্ডন অলিম্পিক্সে ৫১ কেজি ক্যাটাগরিতে সেমি-ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিশ্ববন্দিত ভারতীয় বক্সার মেরি কম। মনে করা হয়েছিল যে, ভারতের জন্য অন্ততপক্ষে ১টি রৌপ্য পদক জিততেন মেরি। Photo- Representative ২০১২ সালে লন্ডনে সেমি-ফাইনালে নিকোলা অ্যাডামসের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেরি কম। আর নিজের ঘরের মাঠ বলেই নিকোলা বেশ ভাল জায়গায় ছিলেন। কিন্তু সেই সময় মেরি কমও নিজের কেরিয়ারের শীর্ষেই ছিলেন। কিন্তু অদৃষ্ট অন্য কিছুই নির্ধারণ করে রেখেছিল। যার ফলে সেমি-ফাইনাল ম্যাচের এক দিন আগেই পিরিয়ডস হয়েছিল মেরির। যার ফলে তীব্র ব্যথা এবং ক্র্যাম্প শুরু হয়েছিল তাঁর। যা মেরি কমের শরীরের জন্য মারাত্মক হয়ে যায়। Photo- Representative অলিম্পিক গোল্ড কোয়েস্ট-এর স্পোর্টস সায়েন্সের প্রাক্তন প্রধান ডা. নিখিল লেটলি বলেন যে, যখন মহিলাদের পিরিয়ড হয়, তখন তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই তুলনামূলক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। তাঁদের শরীরে আলস্য আসে। আর পেশিও শিথিল হতে শুরু করে। আর এই সমস্ত কিছুর প্রভাব পড়ে পারফরম্যান্সের উপরেও। যার জেরে রৌপ্য পদক হাতছাড়া হয়েছিল মেরি কমের। তবে অবশেষে ব্রোঞ্জের পদকই মেরি কমের ঝুলিতে আসে। Photo- Representative সম্প্রতি ২০২৪-এর অলিম্পিক্সে ওয়েটলিফটার মীরাবাঈ চানু ৪৯ কেজি ওজনের ক্যাটাগরিতে চতুর্থ স্থান লাভ করেছিলেন। আর এর কারণ হিসেবে তিনি পিরিয়ডসকেই দায়ী করেছেন তিনি। কিন্তু কেন হয় পিরিয়ডস? বেঙ্গালুরুতে প্র্যাকটিস করেন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. পূর্ণী নায়ায়ণন। তিনি বলেন যে, দেহের জননতন্ত্র যাতে মসৃণ ভাবে কাজ করতে পারে, তার জন্য প্রতি মাসে মেনস্ট্রুয়েশন হয়। ডা. পূর্ণীর কথায়, প্রত্যেকটা মেয়ের মেনস্ট্রুয়েশন হয় তাদের ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সে। Photo- Representative যখন পিরিয়ডস শুরু হয়, তখন জরায়ুর প্রাচীরে লাইনিং তৈরি হতে থাকে। এটাকে এন্ডোমেট্রিয়াম বলা হয়। প্রথম ২ সপ্তাহের জন্য এটা তৈরি হতে থাকে। তখন যন্ত্রণা সেরকম থাকে না। কিন্তু ১৪ থেকে ১৫ দিন পরে গর্ভাশয় থেকে ডিম্বাণু বেরিয়ে জরায়ুর দিকে আসতে থাকে। আর ডিম্বাণু বেরিয়ে আসার ফলে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এই সময়ে ইউটেরাইন ওয়াল লাইনিং বৃদ্ধি করতে থাকে। Photo- Representative পিরিয়ডসের চারটি পর্যায়ইউটেরাইন লাইনিং এবং ফ্লুইড যখন রক্তের সঙ্গে বেরিয়ে আসে, তখন সেটিকে পিরিয়ড ফেজ বলা হয়। যা স্থায়ী হয় ৩ থেকে ৭ দিন। আবার ফলিকুলার ফেজ শুরু হয় পিরিয়ডসের পরেই। পিরিয়ডসের প্রথম দিন থেকে তা স্থায়ী হয় পরবর্তী ১৩-১৪ দিন পর্যন্ত। এক্ষেত্রে প্রচুর হরমোন শরীর থেকে নির্গত হয়। যা জরায়ুর লাইনিংকে মোটা বানিয়ে দেয়। Photo- Representative এর পাশাপাশি ফলিকল গর্ভাশয়ের পৃষ্ঠে বেড়ে উঠতে শুরু করে। সাধারণত প্রতি মাসে একটি ডিম্বাণুর জন্য একটি ফলিকল প্রস্তুত হয়। আর ওভ্যুলেশন শুরু হয় পিরিয়ডসের প্রথম দিন থেকে ১৪ অথবা ১৫-তম দিন নাগাদ। এই সময়টায় তা শুক্রাণুর দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। সব শেষে আসে ল্যুটিয়াল ফেজ। Photo- Representative খেলার আগে পিরিয়ড হলে সেই অবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য মহিলা ক্রীড়াবিদদের কী কী করা উচিত, তা ব্যাখ্যা করেছেন নিশা মিলার। তিনি ভারতের প্রাক্তন অলিম্পিক সাঁতারু। তাঁর কথায়, বার্থ কন্ট্রোল পিল অথবা কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল মহিলাদের ওভ্যুলেশন ফেজ বন্ধ করে দিতে পারে। তাই নিশার পরামর্শ, এই ধরনের পিলের সাহায্যে মহিলা অ্যাথলিটরা পিরিয়ডস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। যদি জানা থাকে, কবে পিরিয়ডস হবে, তাহলে সেই সময়ে এই পিল ব্যবহার করা যাবে। তবে এটা করতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শেই। Photo- Representative