মেরঠ: সবার জন্য শিক্ষা। নিম্নবিত্ত, গরিব ঘরের শিশুরাও যেন বঞ্চিত না হয়। এটাই সরকারি স্কুলগুলির মূল লক্ষ্য। শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার জন্য নিয়মিত শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। এর সঙ্গে বিনামূল্যে বই-খাতা, মিড ডে মিলের মতো একাধিক প্রকল্পও চালু করেছে সরকার।
শিশুদের শিক্ষা দেওয়াই শিক্ষকের কাজ। ছোট ছোট শিশুদের গড়েপিটে মানুষ বানান তাঁরা। কিন্তু অনেক শিক্ষকই চাকরি পাওয়ার পর নিজেদের আসল রঙ দেখাতে শুরু করেন। কামাই, ছুটির পর ছুটি, স্কুলে এলেও ক্লাসে না যাওয়া – সোজা কথায় সরকারি চাকরির ফায়দা তোলেন তাঁরা। সম্প্রতি এমনই এক শিক্ষককে সাসপেন্ড করলেন মেরঠের বেসিক এডুকেশন অফিসার আশা চৌধুরী।
মেরঠের পরীক্ষিতগড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। চাকরি পাওয়ার পর একপ্রকার স্কুলে আসাই ছেড়ে দিয়েছিলেন ওই শিক্ষিকা। নিয়োগের পর ২৯২০ দিনের মধ্যে তিনি স্কুলে এসেছিলেন মাত্র ৭৫৯ দিন। বাকি দিনগুলি তিনি ছুটিতে ছিলেন। কিন্তু নিয়মিত বেতন জমা হয়েছে অ্যাকাউন্টে। টাকাও তুলেছেন তিনি। শিক্ষা দফতরের কর্তারা দেখেছেন, ওই শিক্ষিকা স্কুলে না এলেও তাঁর উপস্থিতি রেকর্ড হয়েছে নিয়মিত। এই কারণেই বেতন জমা হচ্ছিল।
তদন্ত করতেই ঝুলি থেকে বেরল বিড়াল: শিক্ষিকার নাম সুজাতা যাদব। ঘনঘন ছুটি নিতেন তিনি। ছুটির আবেদন মঞ্জুরও হয়ে যেত। তখনই নজরে আসে বিষয়টা। বেসিক এডুকেশন অফিসার স্কুলে এসে তাঁর উপস্থিতির খাতা পরীক্ষা করে দেখেন, বিদ্যালয়ে না এলেও প্রতিদিন তাঁর উপস্থিতি ঠিকই রেকর্ড হয়েছে। এরপর ঘটনার তদন্ত করতে ত্রিস্তরীয় কমিটি গঠন করা হয়। সাময়িক বরখাস্ত করা হয় শিক্ষিকাকে।
তদন্তে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ধরম সিংয়ের কারণেই সুজাতার এই বাড়বাড়ন্ত। স্কুলে না এলেও তিনিই সুজাতার উপস্থিতি বজায় রেখেছিলেন। তদন্তে আরও উঠে আসে, প্রধান শিক্ষক সবকিছু জানার পরেও চুপ ছিলেন। এমনকী তদন্ত কমিটির সামনে তথ্য গোপনও করেছিলেন তিনি। এরপরই প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকা সুজাতা যাদবকে সাসপেন্ড করেন বেসিক এডুকেশন অফিসার আশা চৌধুরী।