পশ্চিম বর্ধমান: একটা সময় ছিল যখন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সময় ব্যাপক চাহিদা ছিল মাটির সরার। বহু বাড়িতে মাটির সরার ওপর আঁকা লক্ষ্মীতে ধনদেবীর আরাধনা করা হত। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। এখন বাড়িতে পুজোর জন্য ছোট বড় বিভিন্ন মাপের প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে চাহিদা কমেছে মাটির সরার।
আগে প্রচুর পরিমাণে মাটির সরা তৈরি করে রাখতেন মৃৎশিল্পীরা। আসানসোলের মহিশীলার কুমোরপাড়ায় মাটির সরার ওপর বিভিন্ন আঙ্গিকে লক্ষ্মীর ছবি আঁকতেন তারা। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দু’দিন আগে থেকে বিভিন্ন বাজারে এই মাটির সরা বিক্রি করা হত। কিন্তু বর্তমানে বাজার ছেয়ে গিয়েছে ছোট বড় বিভিন্ন মাপের লক্ষ্মী মূর্তিতে। ফলে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর জন্য তৈরি মাটির সরা দেখা এখন আর তেমন পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন: কৃষ্ণনগরে মণ্ডপের পিছন থেকে যুবতীর দগ্ধদেহ উদ্ধার, ফেসবুক পোস্টে ভয়ঙ্কর তথ্য
মহিশীলার এক মৃৎশিল্পী বলছেন, আগে প্রচুর পরিমাণে তিনি মাটির সরা তৈরি করতেন। কিন্তু এখন হাতেগোনা ৫০ থেকে ৬০টি মাটির সরা তিনি তৈরি করেন। প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে তিনি কোজাগরী লক্ষীপুজোর আগে এই মাটির সরা তৈরি করে আসছেন। তবে এখন কিছু পারিবারিক পুজোগুলি এই মাটির সরা ব্যবহার করে। নিয়মিত ক্রেতা ছাড়া এই মাটির সরা বিক্রি কমে গিয়েছে অনেকটা।
আরও পড়ুন: নদীর পাড়ে বালি চাপা দেওয়া তরুণীর দেহ! পুরুলিয়ায় হাড় হিম করা ঘটনা, রহস্য
অন্যদিকে এক ক্রেতা বলছেন, মাটির সরায় কোজাগরী লক্ষী পুজো মূলত ওপার বাংলার ঐতিহ্য। পারিবারিক সূত্র ধরে তাদের মাটির সরায় লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে। সেই নিয়ম তারা এখনও ধরে রেখেছেন। তবে আগামী প্রজন্ম এই নিয়ম ধরে রাখবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি। যদিও এখনও তারা পারিবারিক ঐতিহ্য বাঁচিয়ে লক্ষ্মীপুজোয় মাটির সরা কিনে নিয়ে যান। অন্যদিকে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় মাটির সরার চাহিদা যে আগের মত নেই, তা মেনে নিয়েছেন তিনিও।
নয়ন ঘোষ