বিদেশ Yahya Sinwar: খতম ইয়াহিয়া সিনওয়ার, ‘খান ইউনিসের কসাই’-ই ৭ অক্টোবরের ‘বিগ প্রজেক্ট’-এর মাস্টারমাইন্ড, কীভাবে হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল জানুন Gallery October 18, 2024 Bangla Digital Desk খতম ইয়াহিয়া সিনওয়ার। হামাস প্রধানকে নিকেশ করল ইজরায়েল। গত বছরের ৭ অক্টোবর মিউজিক কনসার্টে হামলা চালিয়ে ১২০০-এর বেশি ইজরায়েলিকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে অপহরণের পিছনে এই ইয়াহিয়াই ছিলেন মাস্টারমাইন্ড। অসংখ্য ইজরায়েলিকে খুন করেছেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। নৃশংসতার জন্য তাঁকে ‘খান ইউনিসের কসাই’ নামে ডাকা হত। দুই ইজরায়েলি সেনাকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই দশকেরও বেশি সময় ইজরায়েলি জেলে ছিলেন। ২০১১ সালে গিলাদ শালিদ চুক্তিতে ছাড়া পান তিনি। বৃহস্পতিবার গাজায় ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে নিকেশ করার পর ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী বলেন, “গণহত্যাকারীকে খতম করা হল।“ ইয়াহিয়ার মৃত্যুতে ইজরায়েলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, “বিশ্বের জন্য ভাল দিন। এবার মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরতে পারে।’’ Photo: Reuters ১৯৬২ সালে খান ইউনিসে জন্মগ্রহণ করেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। তাঁকে হামাসের সবচেয়ে আপোষহীন নেতা হিসাবে দেখা হয়। আশির দশকের শুরুতে গাজার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে দখলদার বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। একাধিকবার ইজরায়েলি সেনার হাতে গ্রেফতারও হন। স্নাতক হওয়ার পর ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দিয়ে দল তৈরি করতে শুরু করেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। পরবর্তীকালে এই দলের নাম হয় ‘কাসাম ব্রিগেড’, যা হামাসের সামরিক শাখা নামে পরিচিত হয়। ১৯৮৭ সালে শেখ আহমেদ ইয়াসিনের হাত ধরে জন্ম নেয় হামাস। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন ইয়াহিয়া সিনওয়ারও। পরের বছরই তাঁকে গ্রেফতার করে ইজরায়েলি সেনা। দুই ইজরায়েলি সেনা এবং চার প্যালেস্তেনীয় গুপ্তচরকে হত্যার অভিযোগে চারটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থাৎ প্রায় ৪২৬ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয় তাঁকে। ২৩ বছর ইজরায়েলের জেলে কাটান ইয়াহিয়া সিনওয়ার। জেলেই হিব্রু ভাষা শেখেন। ইজরায়েলি রাজনীতি সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হন। এরপর ২০১১ সালে বন্দী বিনিময় চুক্তিতে মুক্তি পান ইয়াহিয়া। ফের যোগ দেন হামাসে। দ্রুত পদোন্নতি হয় তাঁর। ২০১২ সালে ইয়াহিয়া হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর মেম্বর হন। কাসাম ব্রিগেডের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ২০১৭ সালে ইসমাইল হানিয়ের উত্তরসূরি নির্বাচিত হন ইয়াহিয়া। হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর প্রধান কার হয় তাঁকে। Photo: Reuters ২০২২ সাল থেকে ইজরায়েল হামলার পরিকল্পনা শুরু করেন ইয়াহিয়া। নাম দেন ‘দ্য বিগ প্রজেক্ট’। এর জন্য ইরানের কাছে আর্থিক এবং সামরিক সাহায্য চেয়ে চিঠি লেখেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সেই সব চিঠি সামনে এনেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ইরানের উচপদস্থ সরকারি আধিকারিক এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আল খোমেইনিকে ইয়াহিয়া বলছেন, “আমি কথা দিচ্ছি, এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করব না। আপনাদের এক পয়সাও বাজে খরচ হবে না। আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করবই।’’ এরপর তেল আভিভ-সহ বেশ কয়েকটি সামরিক ও বেসামরিক এলাকায় হামলার পরিকল্পনা করে হামাস। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে হামলা হয়নি। এরপর ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজরায়েলের একটি মিউজিক কনসার্টে হামলা করে হামাস।