ঝাড়গ্রাম: রাত হলেই গ্রাস করে শাল জঙ্গলের নিস্তব্ধতা। কেবলমাত্র শোনা যায় শাল গাছের পাতা থেকে শিশিরের জল জমা হয় ঠস-ঠস করে পড়ছে মাটিতে। সকালে ঘুম ভাঙলে জঙ্গলের শীতের আমেজ পুরো উপভোগ করা যায়। সন্ধ্যা নামলেই ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। জঙ্গলের মাঝে বন ফায়ার শরীরকে উষ্ণ করে। বন্ধু-বান্ধবে মিলে আনন্দ করার যদি ইচ্ছা থাকে, তাহলে পর্যটকদের জন্য সেরা ডেস্টিনেশন হতে পারে শাল জঙ্গলের মধ্যে বনবাসী হোম-স্টে।
কলকাতা থেকে খুব একটা দূরে নয়, কাছেই রয়েছে এই হোম-স্টে। ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের শুশনিতে, ঝাড়গ্রাম শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ ছোঁয়ার মধ্যে দিয়ে বিলাশ বহুল হোম-স্টে, যেখানে পর্যটকদের থাকার জন্য ৪টি কটেজ রয়েছে। রাত হলেই জঙ্গলের মধ্যে বাহারি আলোর দিয়ে সেজে উঠেছে হোমস্টে-টির কোনায় কোনায়।
জঙ্গলের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি জঙ্গলের মধ্যে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখার জন্য হোম-স্টের ভেতরে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। জঙ্গলমহলের মূলবাশি,আদিবাসী মানুষজনের মুখরোচক খাবার চাইলেও পর্যটকদের জন্য উপলব্ধ এই হোম-স্টেতে। কলকাতা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে সোজা চলে আসতে হবে ঝাড়গ্রাম। ঝাড়গ্রাম শহর ঢোকার মুখে সারদাপিঠ বিদ্যালয়ের মোড় থেকে জামবনির রাস্তা ধরে চলে আসতে হবে বেনাগেড়িয়া। বেনাগাড়িয়া থেকে বা হাতে সবুজ শাল জঙ্গলের মধ্যে চলে গিয়েছে কালো পিচের রাস্তা।
আরও পড়ুনঃ রোজের রান্না-চা-দুধে চিনি খান? একমাস টানা চিনি খেলে কী ঘটে শরীরে? জানলে মুহূর্তে শিউরে উঠবেন
রাস্তা ধরে কিছুটা যাওয়ার পর ডান হাতের লাল মোরাম রাস্তা ধরে শুশনি গ্রামের ভেতর হয়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে এই হোম-স্টেতে। অথবা হাওড়া থেকে সোজা ট্রেনে চলে আসতে হবে ঝাড়গ্রাম। ঝাড়গ্রামে নেমে টোটো বা যে কোনও গাড়ি ভাড়া করে সোজা পৌঁছে যাওয়া যেতে পারেন বনবাসীতে। বনবাসীতে রাত্রি যাপনের পাশাপাশি সহজেই চলে যেতে যাওয়া যায় চিল্কিগড় কনকদুর্গা মন্দিরে। সকাল সকাল কনকদুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণ বেড়ানোর পাশাপাশি পুজো দেওয়ার পর চলে যেতে পারেন বেলপাহাড়ি। সারাদিন বেলপাহাড়িতে জমিয়ে বেড়ানোর পর ঝাড়গ্রাম শহর হয়ে ফিরে আসতে পারেন বনবাসীতে।
কলকাতা থেকে চাইলে অগ্রিম বুকিং করে নিতে পারে পর্যটকরা। বনবাসী হোমস্টের ফোন ও হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে বুকিং করা সম্ভব। বনবাসী হোমস্টের বুকিং নম্বর হল ৯৮০০৬৩৫৭৬০/৮৭৬৮৯৭৫২৩৩। কংক্রিটের জঙ্গল ছেড়ে শাল জঙ্গলের মধ্যে এক অন্যানুভূতি উপভোগ করতে চাইছেন। শীতের আমেজে বন ফায়ারে জঙ্গলের মধ্যে মেতে উঠতে চাইছেন। তাহলে সেরা ডেসক্রিপশন হতে পারে বনবাসী হোমস্টে।
বুদ্ধদেব বেরা