কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে যে নবান্নে গিয়েও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক না করেই চলে এসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা, সেই নবান্নতেই সোমবার লাইভ স্ট্রিমিং করেই বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী-জুনিয়র চিকিৎসকরা। গত ১২ সেপ্টেম্বর নবান্নের সেই বৈঠক বাতিলের পর অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে দু’বারের চেষ্টায় বৈঠক হয়েছিল। তবে, সেই বৈঠকেরও লাইভ স্ট্রিমিং হয়নি। এবং রফাসূত্রও মেলেনি। আন্দোলনের নানান ধরন পরিবর্তনের মাধ্যমে অবশেষে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব অবশেষে শনিবার ধর্মতলায় অনশন মঞ্চে যান। ফোনে সরাসরি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘ প্রায় এক ঘণ্টা কথা হওয়ার পর ঠিক হয় সোমবার বিকেল পাঁচটায় শুরু হবে বৈঠক। কিন্তু সেই বৈঠক যে রাজ্য সরকার সরাসরি সম্প্রচার করবে, তা কোনও ভাবেই আগে প্রকাশ করা হয়নি। ফলে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার শুরু হতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়।
এদিন বৈঠকের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ”সবাই চলে এসেছে। ১ মিনিট আগে কি শুরু করতে পারি বৈঠক? তোমাদের প্রথমে ধন্যবাদ জানাই আজ সময়ে এসেছ বলে। তোমাদের যারা অনশন করছ, তারা ভাল আছে তো? আশা করি আপনাদের দাবি বাড়াবেন না। প্রতিদিন তো এটা হতে পারে না। সবাই চাইছে পরিস্থিতির বদল হোক। আপনারা শুরু করুন।” এরপরই নিজেদের বক্তব্য জানাতে শুরু করেন দেবাশিস হালদাররা।
প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর নবান্নের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘নবান্নের গেট থেকেও যাঁরা এলেন না, তাঁদের ক্ষমা করলাম… আমি সাধ্যমত চেষ্টা করলাম।’ এরপর মমতা বলেন, ‘বাইরে থেকে ইনস্ট্রাকশন আসছিল, নেগোশিয়েট করবে না, মিটিংয়ে যাবে না।’ মমতা বলেন, ‘আশা করি জনগণ আমাদের ক্ষমা করবেন, আমাদের অনেক অপমান করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ জানতেন না, এর মধ্যে একটা রং আছে।’
কেন লাইভ স্ট্রিমিং সেদিন করেননি, তা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিচারাধীন মামলা নিয়ে আমরা লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারি না।’ প্রশাসন জানিয়েছিল, চিকিৎসকরা ৩০ জন আসবেন বলে, ৩৪ জন পৌঁছন নবান্নে। যেখানে নবান্ন, ১৫ জনকে আনার কথা বলেছিল। প্রসঙ্গত, আজও ১০ জন জুনিয়র ডাক্তারকে ডাকা হলেও নবান্নে গিয়ে পৌঁছন ১৭ জন। যদিও তাঁদের সকলকেই বৈঠকে যোগ দিতে দেয় রাজ্য সরকার। তবে, আজকের বৈঠকের অন্যতম চমকের বিষয় হয়ে রইল বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং।