লাদাখ: পূর্ব লাদাখে প্রায় চার বছর ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল দুই দেশের সেনা। অবশেষে ধীরে-ধীরে অচলাবস্থা কাটছে। নতুন চুক্তির আওতায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রন রেখা থেকে সেনা সরাতে শুরু করেছে ভারত ও চিন।
সিএনএন-নিউজ18-কে প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, ডেপসাং ও ডেমচক থেকে অস্থায়ী তাঁবু গুটিয়ে ফেলছে দুই দেশই।
আরও পড়ুন: ভয় ছিল, কেন ততটাও ভয়াল রূপ নিল না দানা? জবাব দিলেন আবহাওয়া দফতরের শীর্ষ কর্তা
দুই বছর আগে চারটি ভিন্ন এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ভারত ও চিন। তৈরি করা হয়েছিল বাফার জোন। বর্তমানে উচ্চপর্যায়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দুই দেশের লোকাল কমান্ডাররা সেনা প্রত্যাহারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রতিরক্ষা সুত্র জানিয়েছে, প্রক্রিয়াটি যদিও সময়সাপেক্ষ। তবে কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, সেনা প্রত্যাহার নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে চুক্তির পরই লোকাল কমান্ডাররা বৈঠকে বসেন। তবে তাঁবু এবং অস্থায়ী কাঠামো সরিয়ে দিলে সেনা এলাকা ছেড়ে চলে যাবে, এমনটা নয়। টহলদারি চলবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই এই চুক্তি হয়।
এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে ফের দ্বিপাক্ষিক সংলাপ শুরু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের কারণে ভারত ও চিনের সম্পর্ক তলানিতে চলে গিয়েছিল। ফের তা স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে।
বৃহস্পতিবার ‘চাণক্য ডিফেন্স ডায়লগ ২০২৪’-এ যোগ দিয়ে এই প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছিলেন, ভারত ও চিন ঐক্যমতে পৌঁছেছে।
দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। এই চুক্তিকে তিনি “উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি” হিসাবে তুলে ধরেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিরক্ষা সংলাপের গুরুত্বের উপরেও জোর দেন তিনি।
চিনের সঙ্গে 3D স্ট্র্যাটেজিতে চলছে ভারত, ডিসএঙ্গেজমেন্ট, ডি-এসক্যালেশন এবং ডি-ইন্ডাকশন। তবে পূর্ব লাদাখে গোটা শীতকাল জুড়েই সেনা মোতায়েন থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সামরিক কর্তারা।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই সময় নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় টহলদারি কমিয়ে দেওয়া হয়। এক সেনা কর্তা বলেছেন, “অনেকগুলি বিষয়ের মোকাবিলা করতে হবে। আমরা ডেপসাং এবং ডেমচকে ২০২০ সালের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছি। তবে অন্যান্য এলাকায় এখনও সমাধানসূত্র নিয়ে আলোচনা চলছে।”
২০২০ সাল থেকেই ডেপসংয়ে উত্তেজনা রয়েছে। চিনা সেনা ওয়াই জংশন এবং পেট্রোল পয়েন্ট ১০-এ তাঁবু খাটিয়ে বসে যায়। ফলে ভারতীয় সেনা PP10, PP11, PP11A, PP12 এবং PP13-এ ঢুকতে পারেনি।
পাল্টা ভারতীয় সেনাও সেখানেই ঘাঁটি বানায়। ডেমচকেও প্রায় একই পরিস্থিতি। সেখানেও পাল্টা ঘাঁটি গাড়ে ভারতীয় সেনা। নতুন চুক্তির আওতায় দুই পক্ষ ফের আগের অবস্থানে ফিরে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।