বাঁকুড়া: ব্রহ্মচারীদের মন্দির। কিন্তু সেখানে কালীপুজো হয় বন্দ্যোপাধ্যায়দের। প্রায় ২৫ পুরুষ ধরে অর্থাৎ ১২০০ বছর ধরে পুজো হয়ে আসছেন মা কালী। একেবারে তন্ত্রমতে। মায়ের সামনে রাখা হয় ২৫ টি নৈবেদ্য। বাঁকুড়া তথা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন কালীপুজো। দারুন ইতিহাস রয়েছে এই মা কালীর। চার দিন ধরে চলে পুজো। বাঁকুড়া জেলার নডড়া গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীপুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। বাড়িতে তৈরি হচ্ছে মায়ের মিষ্টি। চলছে মায়ের চোখ আঁকা।
১২০০ বছর আগে ব্রহ্মচারী এবং বন্দ্যোপাধ্যায়দের এই মেলবন্ধন হয়েছিল এক বিশেষ কারণে। মায়ের ভোগে দেওয়া হয় মাগুর মাছের ঝোল। আনুর থেকে নরোত্তম বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন নডড়া গ্রামে, তারপর এই গ্রামে ব্রহ্মচারীরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দান করেন বেশ কিছু জায়গায় এবং মায়ের পুজো করার অনুরোধ করেন বন্দ্যোপাধ্যায়দের। এভাবেই ১২০০ বছর ধরে চলে আসছে পুজো।
যতগুলি পুরুষ ততগুলি নৈবেদ্যর থালা। বাঁকুড়ার বন্দ্যোপাধ্যায়দের কালীপুজোর এই মৌলিকতা এর আগেও উঠে এসেছে বাঁকুড়া জেলা থেকে। ধারা অব্যাহত রেখে এখনও তন্ত্র মতে চলে আসছে পুজো। কালী মন্দিরের পাশেই রয়েছে ব্রহ্মচারীদের শিব মন্দির। গোটা গ্রাম এই কালীপুজোর অপেক্ষায় থাকে। কালী পুজোর পরের দিন হয় মহাভোজ। প্রায় দশ হাজার মানুষ বসে প্রসাদ গ্রহণ করেন। সত্যি ভাবা যায়! ভারতবর্ষের আধ্যাত্মিক ভাবাবেগ ফুটে উঠেছে এই কালীপুজোতে। ঘটেছে দুই বংশের মেলবন্ধন। প্রায় ১২০০ বছর ধরে পাশাপাশি তাঁদের আধ্যাত্ম চর্চা করে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুনঃ KKR News: কেকেআর ৩ জনকে কিনবে আরটিএম কার্ড ব্যবহার করে! তালিকায় চমকে দেওয়া সব নাম
শক্তি সাধনা,কালীপুজো দোরগোড়ায়। দুর্গাপূজা লক্ষ্মী পুজোর পর এবার অপেক্ষা কালীপুজোর। কালী পুজো এবং দীপাবলি, আসলেই যেন শীতকালের প্রবেশ ঘটে। শুরু হয় পর্যটন মরশুম। আকাশে বাতাসে ছুটি ছুটি ভাব। সেই কারণেই কালীপুজোর ছুটিতে বাঁকুড়া জেলায় ঘুরতে এলে, অবশ্যই একবার আসতে পারেন এই নডড়া গ্রামে। দেখবেন কালীপুজোর বিশালতা, এবং মানুষের খাঁটি ভাবাবেগ। হয়তো খুঁজে পেলেও পেতে পারেন কোন সুপ্ত আধ্যাত্ব রস।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী