পাঁচমিশালি GK: আজ ভূত চতুর্দশী, কলকাতার সবচেয়ে ভূতুড়ে জায়গা কোনটি জানেন? একবার গেলে সারা জীবন ভয় পাবেন Gallery October 30, 2024 Bangla Digital Desk নামে সিটি অফ জয় হলে কী হবে, আমাদের প্রিয় শহর কলকাতার আনাচ কানাচে শুধু যে আনন্দই লুকিয়ে রয়েছে তা নয়, লুকিয়ে রয়েছে অনেক রহস্য, অনেক ভয়। তা ভয়, রহস্য থাকবে না? নেই নেই করে শহরের বয়স তিনশো পেরিয়ে গেছে অনেক দিন হল। তা এত পুরেনো শহরের পরতে পরতে যে রহস্য লুকিয়ে থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক। আর রহস্যভেদ করতে না পারলেই তা থেকে তৈরি হয় ভয়। লোকে বলে, এই সব ভয় নাকি সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই আমাদের শহরে জাঁকিয়ে বসেছিল। এখনও সেই সব ভুতুড়ে জায়গাগুলি নিয়ে কান ফিসফিসানি কম হয় না। আজও সেসব স্থানে গেলে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে অতি বড় সাহসীরও। কেউ কেউ এসব গুজব বলে উড়িয়ে দিতে চান। কিন্তু হ্যালুইনের গা ছমছমে আবহাওয়ায় শহর কলকাতার এই ভূতুড়ে জায়গাগুলি থেকে একবার ঘুরে আসবেন নাকি? ১৭, হরচন্দ্র মল্লিক লেন, আহিরীটোলাই কলকাতার পুতুল বাড়ি নামে পরিচিত। শতাব্দীপ্রাচীন এই বাড়িটার বেশ নামডাক রয়েছে। খানিকটা নির্মাণ শৈলীর জন্য আর বাকিটা অশরীরীদের সৌজন্য সোশ্যাল মিডিয়া। এই বাড়িতে নাকি ভূত রয়েছে। বাড়ির বারান্দায়, উপরের তলার কুঠুরিতে তাঁদের আত্মাদের দেদার আনাগোনা। তবে ভূত থাকুক বা নাই থাকুক, উত্তর কলকাতার এই বাড়ি নিয়ে মুখে মুখে ঘোরে নানান গল্প। গুজব রয়েছে, এই বাড়িতে নাকি আগেকার দিনে বাবুরা মহিলাদের নিয়ে এসে নির্যাতন চালাতেন। অনেক সময় তাঁদেরকে খুনও করা হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে যখন জলপথে পণ্য পরিবহন হত সেই সময় কলকাতার ঘাটে ঘাটে নৌকা চলত। তার মধ্যে জনপ্রিয় ঘাট ছিল আহিরীটোলা। আর এর পাশের ছিল অনেক গুদামঘর-যুক্ত এই বাড়ি। এখানে নিরাপদে মালপত্র সংরক্ষণ করা হত বলে জানা যায়। এই পুতুলবাড়ি সম্ভবত ১৮০০ সালের প্রথম দিকে বা তারও আগে তৈরি করা হয়। এরপর প্রায় ৭০ বছর ধরে গুদাম হিসাবে ব্যবহৃত হত। এরপর ১৮৬৯ সালে বৈকুণ্ঠ নট্ট এটি ভাড়া নিয়ে শুরু করেন বিনোদনের জন্য। বয়সের ভারে জীর্ণ এই বাড়ির দোতলা ও ছাদজুড়ে রয়েছে বিচিত্র সব পুতুলের মূর্তি। আধখানা মাথা, হাত-কান ভাঙা মূর্তিগুলির অধিকাংশের অবস্থাই অত্যন্ত শোচনীয়। আগাছায় ঢাকা জরাজীর্ণ বাড়ি, সঙ্গে গল্প-সিনেমায় ভূত আর পুতুলের যোগ দেখা জনতা খুব সহজে সবকিছু দুইয়ে দুইয়ে চার করে ফেলে। এই বাড়ির মাথায় একটা পুতুল দাঁড়িয়ে রয়েছে, পুতুলের তৈরী এই বাড়ির নামকরণ করা হয়েছে বলে এই বাড়ার নাম পুতুল বাড়ি। বাড়ির দেওয়ার থেকে উঠোন সবেতেই আগাছা ছেয়ে গিয়েছে। ২০১৩ সালে কলকাতায় ভূতুড়ে বাড়ির লিস্টে পুতুল বাড়ির নাম উল্লেখ করা হয়। বাড়িটি ইতিমধ্যে হেরিটেজ বিল্ডিংস এর তকমা পেয়ে গেছে। যে কোনও সময়। ভূত নয়, মানুষের উৎপাত আটকাতে তাই বাড়ির গেটের পাশে লাগানো হয়েছে ফ্লেক্স। তাতে লেখা, ‘কঠোরভাবে প্রবেশ নিষেধ। ভূত সংক্রান্ত তথ্যগুলি সম্পূর্ণ মিথ্যে।’ তাতেও প্রভাব পড়েনি।