কলকাতা: নির্ঘণ্ট মেনে দক্ষিণেশ্বরে চলছে মা ভবতারিণীর পুজো। দুপুরের আরতির পর ভোগ নিবেদন করা হবে দেবীকে। ভোগে রয়েছে, ভাত ও ঘি ভাত, পাঁচ রকমের তরকারি, পাঁচ রকমের ভাজা ও পাঁচ রকমের মাছ। একই সঙ্গে রয়েছে চাটনি, পায়েস এবং পাঁচ রকমের মিষ্টি। ভোগ নিবেদনের পর বিশ্রাম। বিকেলে বৈকালিকে নিবেদন করা হবে হরেক রকমের ফল। রাত ন’টায় দেওয়া হবে বিশেষ অন্নভোগ।
অন্নভোগে থাকবে লুচি, ছানার তরকারি, রাবরি-সহ পাঁচ রকমের মিষ্টি। একসময় এই মন্দিরে বলি হত। কিন্তু বহুকাল তা বন্ধ। সেই থেকে দক্ষিণেশ্বরের ভোগের পদে মাংসও নেই। কালীপুজোয় মায়ের ভোগে থাকে শুক্তো, পাঁচ রকমের ভাজা যেমন- আলু, বেগুন, পটল, উচ্ছে অথবা করলা, ও কাঁচকলা ভাজা, পোলাও। থাকে তিন রকম মাছ রুই, ইলিশ, চিংড়ির পদ, কচি পাঠার মাংস, চাটনি ও পায়েস। শেষ পাতে মুখসুদ্ধি হিসাবে থাকে পান ও জল। দক্ষিণেশ্বর – ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের স্মৃতি বিজড়িত দক্ষিণেশ্বর।
ভবতারিণীর পুজোর আর এক বৈশিষ্ট্য হল, এখানে শাক্ত, বৈষ্ণব ও শৈব, তিন ধারার পুজো একসঙ্গে হয়। যা আর কোথাও দেখা যায় না। এই ত্রিবেণী সঙ্গম ঘিরে আজও একই প্রাঙ্গণে মা কালীর পুজো হয়ে শাক্ত মতে, বৈষ্ণব মতে রাধাকৃষ্ণের পুজো। এবং ১২টি শিবমন্দিরে হয় শৈব ধারার শিব আরাধনা। কালীপুজোর দিন ভোরেই আরতি হয় ভবতারিণীর। সারাদিন দর্শনার্থীরা পুজো দিতে পারেন।
আবার কালীঘাটে কালী-কে পুজো করা হয় মা লক্ষ্মী রূপে। দুর্গাপুজোর চারদিন তিনি পূজিতা হন দুর্গারূপে। তবে বছরের বাকি সব দিনগুলোই কালীরূপেই পুজো করা হয় দেবীকে। দুপুরে কালীঘাটে ভোগে দেওয়া হয় পোলাও-ঘি ভাত-শুক্তো, আলু-বেগুন-পটল-উচ্ছে-কাঁচকলা দিয়ে পাঁচ রকমের ভাজা, পোনা-চিংড়ি মাছ, খেজুর-কাজু-কিশমিশ দিয়ে চাটনি, পায়েস-পান-জল। আর সেই সঙ্গে প্রথম বলির পাঁঠার মাংস। তবে রাতে ভোগে থাকবে নিরামিষ। থাকবে ময়দার লুচি, খিচুড়ি-তরকারি, দু-তিন রকমের ভাজা, রাবড়ি-রসগোল্লা-দই-মিষ্টি-পান-জল।একইভাবে মহাসমারোহে কালীপুজো পালিত হয় তারাপীঠে। সেখানে মা-কে নিবেদন করা হয় ছোলা, সন্দেশ, মিছরির শরবত। কালীপুজোর দিন তারা মাকে পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচ রকম ভাজা, পাঁচ মিশালি তরকারি, মাছ, পাঁঠার মাংস, চাটনি, পায়েস এবং মিষ্টি। পোড়া শোলমাছ মাখাও দেওয়া হয় ভোগে।