#সাও পাওলো: প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান একবার বলেছিলেন আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ থামাতে পারে একটাই মানুষ। শক্তি প্রদর্শন করলে চলবে না। লাগবে ভালোবাসা এবং ফুটবল। রিগান যে ভুল কথা বলেননি সেটা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন পেলে। এমন সব অর্জন আছে যা যুক্তিকে হার মানায়। কিংবা আর কখনো সেসব কীর্তির পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
যেমন ধরুন তিনবার বিশ্বকাপ জয়। পেলের এই কীর্তি ছুঁতে পারেনি আর কোনো ফুটবলার। অথবা পেশাদার ফুটবলে ১ হাজার গোল।ক্যারিয়ারকে উত্তুঙ্গ উচ্চতায় তুলে তারপর ফুটবল ছেড়েছেন। শুধু শিরোপাজয় নয় পেলেকে নিয়ে অনেক ‘মিথ’-ও আছে। যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার গল্প তার মধ্যে একটি। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে ঘুরপাক খাচ্ছে সে গল্প।
আরও পড়ুন – পেলের কফিনে ফুটবল রেখে শেষ ভালোবাসা জানাবেন মা! তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ব্রাজিলে
ঐতিহাসিকেরা অবশ্য এখনো প্রশ্ন করে চলছেন, কালোমানিক কি সত্যিই যুদ্ধ থামিয়েছিলেন? ১৯৬১ সালে তাঁকে ‘জাতীয় সম্পদ’ ঘোষণা করা হয়েছিল। বিদেশি ক্লাবে বেচতে নিষেধ করা হয়েছিল। এতে পেলেকে যথেচ্ছ ব্যবহার করে টাকা কামাইয়ের সুযোগটা পেয়ে যায় সান্তোস। ১৯৬৯ সালে আফ্রিকা সফরে বের হয় সান্তোস। এর দুই বছর আগেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয় নাইজেরিয়ায়।
দেশটির পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো বিচ্ছিন্নতাবাদের লক্ষ্যে এক জোট হয়ে ‘বায়াফ্রা’ রাষ্ট্র গঠন করেছিল। এই যুদ্ধে মারা গিয়েছিল ২০ লাখেরই বেশি সাধারণ মানুষ। ঘরছাড়া হয় আরও ৪৫ লাখ। কিংবদন্তি বলে, সান্তোস দল পা রাখার পর বন্দুকের গর্জন থেমে গিয়েছিল। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতি রাখে দুই পক্ষ।
?️ The man who stopped a war-Pelé
In 1969,during the Nigerian Civil War a 48-hour ceasefire was called by the Nigerian government and the secessionist state of Biafra so they could watch Pele and Santos draw 2-2 with a Nigerian Super Eagles XI.
?Icon#FIFAWorldCup|#Pele|#BRA pic.twitter.com/mPlO1fKTJP
— FIFA World Cup Stats (@alimo_philip) December 29, 2022
এর মধ্যে প্রীতি ম্যাচে নাইজেরিয়ার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে সান্তোস। জোড়া গোল করেছিলেন পেলে। দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন উঠে দাঁড়িয়ে সম্মাননা। কয়েক ঘন্টার জন্য রক্তপাত থেমে গিয়েছিল শুধুমাত্র পেলের ম্যাজিক দেখার জন্য। এমন ছিল ফুটবল সম্রাটের মহিমা। ২০০৫ সালে টাইম ম্যাগাজিন এ নিয়ে লিখেছিল, ‘বড় বড় কূটনীতিবিদরা দুই বছর চেষ্টা করেও আফ্রিকার ভয়ংকরতম এই রক্তপাত থামাতে পারেননি।
কিন্তু ১৯৬৯ সালে নাইজেরিয়ায় ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে পা রাখার পর তিন দিনের জন্য যুদ্ধ থেমেছিল। আজ পেলের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ আফ্রিকা মহাদেশও। পেলে শুধু একজন ফুটবলারের নাম নয়। মানুষের ভালোবাসা এবং ঐক্যতার প্রতীক হিসেবেও থেকে যাবেন।