বিনোদন এক সময় অন্ধ সেজে ভিক্ষা করতেন; ‘পিকে’ ছবিতে কয়েক সেকেন্ডের দৃশ্যই ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে এই অভিনেতার ! Gallery April 2, 2024 Bangla Digital Desk বিভিন্ন সময়ে বাণিজ্যনগরী মুম্বই বহু তারকার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। আর তার প্রমাণ তো আমাদের সামনেই রয়েছে। যেমন- বস্তি থেকে এসে বলিউডের নামকরা তারকা হয়েছেন জ্যাকি শ্রফ। আবার এক সময় বাস কন্ডাক্টর হিসেবে কাজ করতেন রজনীকান্ত। যিনি ভারতীয় সিনেমার অন্যতম বড় তারকা। এই রকম দৃষ্টান্ত রয়েছে ভূরি ভূরি। আজ এমনই একজনের কথা বলব যিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন গুজরান করতেন। অথচ আমির খানের ‘পিকে’ ছবি তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। কথা হচ্ছে মনোজ রায়ের! এক সময় দিল্লির যন্তরমন্তরে ভিক্ষা করে দিনযাপন করতেন মনোজ রায়। আমির খানের ‘পিকে’ ছবিতে মাত্র ৫ সেকেন্ডের জন্যই দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আর সেই ছোট্ট দৃশ্যই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। মনোজের জীবনটাও অনেকটাই সিনেমার মতো! বাস্তব জীবনে অভিনয় করতে করতেই তাঁর কাছে সুযোগ চলে আসে রুপোলি পর্দায় অভিনয় করার। আজ তাঁর সেই গল্পই শুনে নেওয়া যাক। মনোজ রায়ের বাবা পেশায় দিনমজুর। জন্মের পরপরই মাকে হারিয়েছিলেন অভিনেতা। এরপর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে বাইরে বেরিয়ে টাকা রোজগার করতে বাধ্য হন তিনি। লেখাপড়ায় ইতি টেনে ভিক্ষা করতে থাকেন। এরপর কাজের সন্ধানে দিল্লি পাড়ি দেন। কিন্তু সেখানেও তাঁর জীবনে নেমে আসে হতাশা। ফলে ফের ভিক্ষাবৃত্তি করবেন বলেই ঠিক করেন। তবে দিল্লিতে অন্ধ সেজে ভিক্ষা শুরু করেন। কীভাবে তিনি ‘পিকে’ ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন, সেটা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন মনোজ রায়। তাঁর কথায়, “যখন আমি যন্তরমন্তরে ভিক্ষা করছিলাম, তখন দু’জন আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন যে, আমি অভিনয় জানি কি না? সেই সময় তাঁদের বলেছিলাম যে, আমি অন্ধ হওয়ার ভান করে দিনে দু’বার খাবার জোগাড় করতে পারি।” এরপর ওই দুই ব্যক্তি মনোজকে ২০ টাকা এবং তাঁদের ফোন নম্বর দিয়ে চলে যান। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মনোজ যখন ‘পিকে’-তে ভিখারির ভূমিকার অভিনয়ের জন্য অডিশন দিতে নেহরু স্টেডিয়ামে পৌঁছেছিলেন, সেখানে আরও সাত জন ওই একই চরিত্রের জন্য অডিশন দিতে এসেছিলেন। স্মৃতিচারণ করে মনোজ বলেন, “আমি অভিনেতা কিংবা চলচ্চিত্রের কথা ভাবিনি। শুধু জানতাম যে, নির্বাচিত হলে আমি খেতে পাব।” মনোজ রায় অডিশনে নির্বাচিত হন এবং ৫ সেকেন্ডের দৃশ্যে অভিনয়ের সুযোগ পান। আর এরপরেই রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান মনোজ রায়। ওই ছবিতে স্বল্প সময়ের জন্য অভিনয় করে যে অর্থ তিনি উপার্জন করেছিলেন, তা তাঁর ভাগ্য বদলে দিয়েছিল। গ্রামে ফিরে একটি দোকান কেনেন মনোজ। তিনি বলেন, “আমার দোকানের কাজ রয়েছে। সেই সঙ্গে একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং একজন সুন্দর বান্ধবীও আছেন।” গ্রামের মানুষ তাঁকে ভালবেসে ‘পিকে হানি সিং’ বলে ডাকেন। প্রসঙ্গত ‘পিকে’ একটি ব্লকবাস্টার ছবি। বক্স অফিস থেকে মোট ৭২২ কোটি টাকা আয় করেছে। আমির খান ছাড়াও ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত ও অনুষ্কা শর্মা।