অধীররঞ্জন চৌধুরী৷

Adhir Ranjan Chowdhury: ‘বৈঠকে গিয়ে জানলাম আমি প্রাক্তন!’ ভোটে হারের পর দলেও ধাক্কা, অভিমানী অধীর

নয়াদিল্লি: দলের হাইকম্যান্ডের বিরুদ্ধেই এবার অভিমানী অধীর রঞ্জন চৌধুরী৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে যে তাঁর ইস্তফাপত্র যে দল গ্রহণ করেছে, সে সম্পর্কে দলের কেউ তাঁকে কিছুই জানাননি বলে অভিযোগ করেছেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ৷ অধীরের দাবি, গতকাল দলের হাইকম্যান্ডের ডাকা বৈঠকে গিয়েই তিনি জানতে পারেন যে তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

গতকালই দিল্লিতে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক গুলাম আলি মীর সহ হাইকম্যান্ডের নেতারা৷ ওই বৈঠকের পরই জানা যায়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী৷

আরও পড়ুন: ওয়ানাডের ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯! বিজয়নের সঙ্গে কথা মোদির, কাল যাচ্ছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা

অধীর এ দিন দাবি করেছেন, লোকসভা নির্বাচনের পরই তিনি দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের কাছে প্রদেশ সভাপতি হিসেবে তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন৷ যদিও সেই ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি৷ তিনি বলেন, বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার সময়ও জানতাম আমিই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷ কিন্তু বৈঠকে ঢোকার পর গুলাম আলি মীর আমাকে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলে উল্লেখ করেন৷ তখনই বুঝতে পারলাম আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আমার ইস্তফাপত্র যে গৃহীত হয়েছে, সেটা আমাকে জানানোই হয়নি৷

অধীর জানিয়েছেন, গতকালের ওই বৈঠকে রাহুল গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়গেরা থাকবে ভেবেই তিনি গিয়েছিলেন৷ কিন্তু ওই বৈঠকে কে সি বেণুগোপাল ছাড়া শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আর কেউ ছিলেন না৷ অধীর কার্যত অভিযোগের সুরেই বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম আলি মীরের নির্দেশেই বৈঠকে যাও হওয়ার হচ্ছিল৷ বৈঠকে রাজ্যের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য. দীপা দাশমুন্সি, নেপাল মাহাতোর মতো নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷

সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধীর বলেছেন, ‘যেদিন থেকে মল্লিকার্জুন খাড়গে দলের সভাপতি হলেন, কংগ্রেসের সংবিধান অনুযায়ী গোটা দেশে দলের সমস্ত পদ অস্থায়ী হয়ে গিয়েছিল৷ আমার পদও অস্থায়ী হয়ে গিয়েছিল৷ ভোটের সময় আমি দলকে বলেছিলাম যে বাংলায় আসন সমঝোতা করতে হলে আমার তা জানা উচিত৷ কিন্তু আমি বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তৃণমূল তা মানবে না৷ ভোটের সময় মল্লিকার্জুন খাড়গে এ কথাও বলেন যে প্রয়োজনে আমাকে বাদ দিয়েই যা করার করা হবে৷ এই কথায় আমি দুঃখ পেয়েছিলাম৷ ভোটে বাংলায় কংগ্রেসের ফল ভাল না হওয়ায় আমার মনে হয়েছিল আমার দায়িত্ব নেওয়া উচিত৷ মল্লিকার্জুন খাড়গে নিজেই ফোন করে আমাকে দিল্লি আসতে বলেছিলেন৷ মাঝে এআইসিসি-র পক্ষ থেকেই আমাকে ফোন করে বলা প্রদেশ নেতাদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক ডাকতে৷ যেখানে দুটি প্রস্তাব পাস করা হবে৷ আমার সভাপতিত্বেই এই বৈঠক হবে বলে আমি জানতাম৷ গতকালের বৈঠকের শুরুতেই গুলাম আলি মীর আমাকে প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি বলে উল্লেখ করেন৷ তখনই জানতে পারলাম আমি প্রাক্তন হয়ে গিয়েছি!’

নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অধীর৷ তবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় যেভাবে কংগ্রেস কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলবেনই৷ তবে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের আচরণে তিনি হতাশ, তা গোপন করেননি অধীর৷