Tag Archives: Congress

ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস

ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস সংক্ষেপে কংগ্রেস পার্টি বা কংগ্রেস ভারতের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। ১৮৮৫ সালে এই দল প্রতিষ্ঠা করেন অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম। পরবর্তীকালে কংগ্রেস ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অন্যান্য ঔপনিবেশিক বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।

কংগ্রেস ভারতের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের একটি। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি। কংগ্রেস একটা ‘বড় তাঁবু’র মতো। ভারতের বিভিন্ন ছোট আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল এর সঙ্গে জোটবদ্ধ। কংগ্রেসের নীতিগত অবস্থান কিছুটা মধ্যপন্থী এবং বাম ঘেঁষা বলে মনে করা হয়। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর কংগ্রেস একটি ক্যাচ-অল এবং ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। পরবর্তী ২০ বছর ধরে ভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসেরই আধিপত্য ছিল। পার্টির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, পরিকল্পনা কমিশন তৈরি, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রবর্তন, একটি মিশ্র অর্থনীতি বাস্তবায়ন এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক নীতিগুলিকে সামনে রেখে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেন। নেহরুর মৃত্যুর পর লাল বাহাদুর শাস্ত্রী স্বল্প মেয়াদে দায়িত্ব সামলান।

স্বাধীনতার পর থেকে ১৭টি লোকসভা নির্বাচনে ৭ বার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে কংগ্রেস। ৫৪ বছরেরও বেশি সময় দেশের ক্ষমতা ছিল তাদের হাতে। কংগ্রেস পার্টি থেকে ৬ জন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। প্রথমজন জওহরলাল নেহরু (১৯৪৭ থেকে ১৯৬৪) এবং শেষতম মনমোহন সিং (২০০৪ থেকে ২০১৪)।

১৯৬৯ সালে কংগ্রেসে ভাঙন শুরু হয়। পছন্দের নেতা নিয়ে কংগ্রেস (আর) গঠন করেন ইন্দিরা গান্ধি। বাকি কংগ্রেস পরিচিত হয় কংগ্রেস (ও) নামে। ১৯৭১ সালের লোকসভা ভোটে বিপুল আসনে জয়ী হয় ইন্দিরা গান্ধির কংগ্রেস (আর)। কিন্তু ভাঙন রোধ করা যায়নি। ১৯৭৯ সালে তৈরি হয় কংগ্রেস (আই)। ১৯৮১ সালে এই দলটাকেই নির্বাচন কমিশন কংগ্রেস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। রাজীব গান্ধির নেতৃত্বে ১৯৮৪ সালের লোকসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে কংগ্রেস। কিন্তু ১৯৮৯ সালে ন্যাশনাল ফ্রন্টের কাছে হেরে যায়। পরবর্তীকালে পিভি নরসিমা রাও-এর নেতৃত্বে ফের ক্ষমতা দখল করে কংগ্রেস। তাঁর হাত ধরেই উদার অর্থনীতির দিকে যাত্রা করে দেশ।

এরপর থেকে কংগ্রেসের ওঠা-নামা চলতেই থাকে। ১৯৯৬ সালের লোকসভা ভোটে ফের হারের মুখ দেখতে হয়। ক্ষমতা দখল করে ন্যাশনাল ফ্রন্ট। দীর্ঘ ৮ বছর পর ২০০৪ সালে মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বে লোকসভা ভোটে জয় হাসিল করে ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ)। ২০০৯-এর লোকসভা ভোটেও জয় ধরে রাখে কংগ্রেস। সঙ্গে তৈরি হয় রেকর্ড। ১৯৬২ সালে নেহরুর পর মনমোহন সিংই একমাত্র কংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী যিনি সম্পূর্ণ পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করার পরে পুনরায় নির্বাচিত হন। তবে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে রীতিমতো ভরাডুবি হয় কংগ্রেসের। ৫৪৩ লোকসভা সিটের মাত্র ৪৮ আসনে জেতেন কংগ্রেস সাংসদরা।

কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ দল। সামাজিক ইস্যুতে তারা সমান সুযোগ, স্বাস্থ্যের অধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা, মিশ্র-বাজার অর্থনীতি এবং একটি শক্তিশালী কল্যাণকর রাষ্ট্র নির্মাণের পক্ষে। কংগ্রেস সমসাময়িক অর্থনৈতিক সংস্কারকে সমর্থন করে যেমন উদারীকরণ, বিশ্বায়ন এবং কৌশলগত বিনিয়োগ। আইএনসি গঠনের পর থেকে মোট ৬১ জন এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এঁদের মধ্যে সোনিয়া গান্ধি সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে সভাপতি ছিলেন।

Adhir Ranjan Chowdhury: মমতার বিরোধিতা করে কংগ্রেসেই কোণঠাসা অধীর? সিদ্ধান্ত নেবে হাইকম্যান্ড, কড়া বার্তা খাড়গের

কলকাতা: অধীররঞ্জন চৌধুরী অথবা প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা যতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করুন না কেন, কংগ্রেস হাইকম্যান্ড যে সেই বিরোধিতাকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না, তা স্পষ্ট করে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে৷ এমন কি, ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সমর্থন গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধীর কেউ নন বলেও চাঁচাছোলা ভাষায় জানিয়ে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি৷

মল্লিকার্জুন খাড়গের এই মন্তব্যে স্বভাবতই দলের মধ্যে আরও কোণঠাসা হলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী৷ খাড়গের কড়া অবস্থানের পর অধীর বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নীতিগত বিরোধিতার কথা বলেছিলেন তিনি৷

ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে৷ চুঁচুড়ায় ভোট প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে বাইরে থেকে নতুন সরকারকে সমর্থন করবে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এই মন্তব্য নিয়ে জোর চর্চা শুরু হওয়ার পর হলদিয়ার সভা থেকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘সর্বভারতীয় স্তরে অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছেন৷ ওই জোট দিয়ে আমরা সরকার তৈরি করব, জোটে থাকব আমরা৷ ইন্ডিয়া জোটটা আমি তৈরি করেছিলাম, সেই জোটে থাকব৷’

আরও পড়ুন: মেট্রোর কামরায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা, মহিলা যাত্রী যা করলেন, দেখে তাজ্জব সবাই!

তৃণমূলনেত্রীর এই মন্তব্যের পরই অধীররঞ্জন চৌধুরী প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দাবি করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানকে বিশ্বাস করা যায় না৷ ভবিষ্যতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবস্থান বদলে বিজেপি-কেও সমর্থন করতে পারেন বলেও দাবি করেন অধীর৷

অধীরের এই মন্তব্যে অবশ্য কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে৷ এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে খাড়গে বলেন, ‘২০০৪ সালে তো বামেরাও বাইরে থেকে ইউপিএ সরকারকে সমর্থন করেছিল৷ এরকম অনেকেই তো বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন করে৷ মমতাজি প্রথমে বলেছিলেন উনি বাইরে থেকে সমর্থন করবেন৷ পরে উনি আবার বলেছেন যে ইন্ডিয়া জোটের সরকার গঠন হলে উনি তাতে অংশ নেবেন৷ উনি জোটের সঙ্গে আছে, তা স্পষ্ট৷ অধীররঞ্জন চৌধুরী এই সিদ্ধান্ত নেবেন না৷ সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা আছি, কংগ্রেসের হাইকম্যান্ড আছে৷ আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই চূড়ান্ত হবে৷ কারও যদি দলের এই অবস্থানে আপত্তি থাকে, তাহলে তাঁকে বাইরে যেতে হবে৷’

কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব যে অধীরের এই মন্তব্যকে একেবারেই ভাল ভাবে নেয়নি, মল্লিকার্জুন খাড়গের মন্তব্যেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়৷ স্বভাবতই দলের মধ্যেই চাপে পড়ে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷ খাড়গের মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে অধীর বলেন, ‘আমার বিরোধিতা নৈতিক বিরোধিতা৷ কংগ্রেসকে যে খতম করবে আমি তাঁকে খাতির করব, তা তো হতে পারে না৷ আমার কোনও ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই৷ পশ্চিমবঙ্গে আমার দলকে রক্ষা করার লড়াই আমি থামাতে পারি না৷’

প্রসঙ্গত, বাংলায় ইন্ডিয়া জোট না হওয়ার জন্য নির্বাচনী প্রচারে বার বারই অধীররঞ্জন চৌধুরীকেই দায়ী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা৷ ভোট প্রচার পর্বেও বার বারই অধীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল নেতৃত্বকে তীব্র আক্রমণ করেছেন৷ যদিও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বার বারই বুঝিয়ে দিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ৷ হাইকম্যান্ডের এই বার্তার পর অধীরের অবস্থান বদলায় কি না, সেটাই এখন দেখার৷

Kanhaiya Kumar attacked: কানহাইয়াকে ঘিরে ধরে চড়-থাপ্পড়, ছোড়া হল কালি! খাস দিল্লিতেই আক্রান্ত কংগ্রেস প্রার্থী

নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লির বুকেই প্রচারে বেরিয়ে আক্রান্ত হলেন কংগ্রেস প্রার্থী কানহাইয়া কুমার৷ দিল্লি পূর্ব কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন কানহাইয়া৷ অভিযোগ, এ দিন প্রচারে বেরনোর সময় তাঁকে ঘিরে ধরে মারধর করে সাত থেকে আট জন ব্যক্তি৷ কানহাইয়াকে লক্ষ্য করে কালিও ছোড়া হয়৷

কানহাইয়ার উপরে যারা হামলা চালায়, তাদের মধ্যে দু জনই আবার ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেছে৷ যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে৷ তবে ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল, শুক্রবার৷ দিল্লির নিউ ওসমানপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে৷ হামলাকারীদের দাবি, কানহাইয়া দেশভাগের কথা বলেছেন এবং ভারতীয় সেনার উদ্দেশ্যে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন বলেই তাঁর উপরে এই হামলা চালানো হয়েছে৷

এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন আপ-এর কাউন্সিলর ছায়া গৌরব শর্মা৷ তাঁর দাবি, কানহাইয়া কুমারকে নিয়ে তিনি কর্তার নগরের দলীয় কার্যালয় থেকে বেরনোর সময়ই সাত থেকে আটজন হামলা চালায়৷

আরও পড়ুন: দেশে এই প্রথম, আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত আপ! বড় বিপাকে কেজরিওয়ালের দল

প্রথমে হামলাকারীরা মালা পরানোর অছিলায় কানহাইয়ার কাছাকাছি আসে৷ এর পরই আচমকা তাঁকে ঘিরে ধরে চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করেন তাঁরা৷ এই ঘটনায় তিন থেকে চারজন মহিলাও আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ৷ ধাক্কাধাক্কিতে একজন মহিলা সাংবাদিকও ড্রেনে পড়ে যান৷

আপ-এর ওই মহিলা কাউন্সিলর আরও অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা তাঁকে এবং তাঁর স্বামীকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে৷ আপ কাউন্সিলর যে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তা স্বীকার করে নিয়েছে দিল্লি পুলিশ৷

দিল্লি পূর্ব কেন্দ্রে বিজেপি-র বর্তমান সাংসদ মনোজ তিওয়ারির বিরুদ্ধে লড়ছেন ৩৭ বছরের কানহাইয়া৷ মনোজ তিওয়ারি বাদে এবার দিল্লির কোনও কেন্দ্রেই বিদায়ী সাংসদদের কাউকে টিকিট দেয়নি বিজেপি৷ দিল্লিতে কংগ্রেস-আপ জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়ছে৷ দিল্লি পূর্ব কেন্দ্রে আপের সমর্থনেই লড়ছেন ৩৭ বছরের কানহাইয়া৷ আগামী ২৫ মে, সোমবার দিল্লিতে ভোট৷ তার আগে এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ প্রশ্ন উঠছে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও৷

Lok Sabha Election 2024: ভোটের গোবরডাঙায় হাসপাতাল‌ই মূল ইস্যু, মমতার আশ্বাসে ভরসা রাখবে নাটকের শহর?

উত্তর ২৪ পরগনা: একের পর এক নির্বাচনে ইস্যু হয় এই হাসপাতাল। পাওয়া যায় নানা রকম প্রতিশ্রুতি। কিন্তু তারপরেও আর খোলে না গোবরডাঙার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটি। তা নিয়ে এই মফস্বলের বাসিন্দাদের ক্ষোভ কম নয়। সেই নিয়ে এবার প্রতিশ্রুতি দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ঐতিহ্যবাহী শহর, নাটকের শহর গোবরডাঙায় বসবাসরত লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য সরকারি হাসপাতাল থাকলেও মেলে না পরিষেবা। এবারের লোকসভা ভোটের আগে এই হাসপাতাল খোলার দাবি সেখানকার মানুষের মধ্যে বেশ জোরালো হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বনগাঁয় ভোট প্রচারে গিয়ে গোবরডাঙার সরকারি হাসপাতালটি খোলার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নির্বাচন পর্ব মিটে গেলে গোবরডাঙা পুরসভার মাধ্যমে এই হাসপাতালটি চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর ঘিরে আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা, ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট হলেই বাড়বে বাণিজ্য

করোনা কালীন পরিস্থিতিতে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছিল এটিকে। পরবর্তীতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবেও চালু করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে যায়, তালা বন্ধ অবস্থাতেই কার্যত পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে থাকতে গোবরডাঙার এই হাসপাতালকে। সাড়ে ১৬ বিঘা জমির উপরে তৈরি এই হাসপাতালে একাধিক উন্নতমানের যন্ত্রপাতি এবং নার্স ও ডাক্তারদের থাকার জন্য কোয়ার্টার রয়েছে। ছোটখাটো অপারেশন থেকে শুরু করে ইনডোর-আউটডোরে চিকিৎসা পরিষেবাও চালু ছিল অতীতে।

বন্ধ হাসপাতাল খোলা নিয়ে গোবরডাঙার পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত একসময় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় মুখ খোলায় ভর্ৎসনার শিকার হয়েছিলেন। পরবর্তীতে একাধিকবার আন্দোলনে নেমেছিল গোবরডাঙ্গার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে, গোবরডাঙার প্রবীণ নাগরিকরা। তৈরি হয়েছিল হসপিটাল বাঁচাও কমিটি।কিন্তু কোন‌ওভাবেই চালু করা যায়নি গোবরডাঙা হাসপাতাল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পর অনেকেই আশার আলো দেখছেন।

রুদ্রনারায়ণ রায়

Lok Sabha Election 2024: শিক্ষকদের নিয়ে প্রচারে ঝড় তুললেন শান্তিরাম

পুরুলিয়া: চলছে লোকসভা নির্বাচন। ফলে সর্বত্র দিনরাত এক করে প্রচার করছেন প্রার্থীরা। মিটিং , মিছিল , প্রচারে ঝড় তুলেছে শাসক-বিরোধী সকলেই। প্রতিদিনই প্রার্থীদের চলছে জনসংযোগ। ‌পুরুলিয়ার তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাত এদিন শিক্ষক নেতাদের নিয়ে ঝড়ো প্রচার করলেন।

রাজ্যের শাসক দলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সদস্যরা এদিন পুরুলিয়ার তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতর সমর্থনে প্রচারে নামেন। পুরুলিয়া শহরের ভিক্টোরিয়া স্কুল থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে এই মিছিল শুরু হয়, শেষ হয় শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে। বহু নেতা-কর্মী এইদিনের এই মিছিলে পা মেলান।

আর‌ও পড়ুন: এই গ্রামের মানুষ অন্য কিচ্ছু চায় না, প্রার্থীদের কাছে শুধু একটাই দাবি

এই বিষয়ে তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাত বলেন, রাজ্য সরকার সবসময় মানুষের পাশে রয়েছে। সরকারের নির্দেশ অনুসারে আমরাও সব সময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। আমাদের কর্মীরাও মানুষের হয়ে সব সময় কাজ করেন। ‌ তাই জনসংযোগে যথেষ্ট সাড়া পাওয়া গিয়েছে। মানুষ রাজ্য সরকারের পাশে রয়েছে।

দু-বারের মন্ত্রী, ছয় বারের বিধায়ক শান্তিরাম মাহাত। ৬৯ বছর বয়সেও গোটা জেলায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ‌ প্রচার, মিটিং, মিছিলে রীতিমত ঝড় তুলছেন। প্রথম দিন থেকে নিজের জয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। নির্বাচনী প্রচার পর্বে সেই আত্মবিশ্বাস‌ই ফুটে বের হচ্ছে।

শমিষ্ঠা ব্যানার্জি

Lok Sabha Election 2024: ‘চৌধুরী’ গড়ের পতন ঘটাতে বদ্ধপরিকর পাঠান! ভোটের আগেই আবেগে ভাসছেন ইউসুফ

মুর্শিদাবাদ: বঙ্গ রাজনীতির একটি মিথের অবসান ঘটাতে সুদূর গুজরাট থেকে প্রার্থী হয়ে এখানে এসেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের কাঁধে গুরু দায়িত্ব সঁপেছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বহরমপুর মানেই অধীর চৌধুরী, এই মিথের অবসান ঘটাতে ইউসুফ জোড়া ফুল শিবিরের সবচেয়ে বড় বাজি। কিন্তু এই লক্ষ্যে ইউসুফ পাঠান সফল হবেন নাকি অধীর চৌধুরী তা জানা যাবে আগামী ৪ জুন। তবে তার আগে শনিবার ভোট প্রচারের শেষ লগ্নে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠেন ইউসুফ পাঠান।

বহরমপুরের টানা পাঁচবারের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তবে এবার তৃণমূল ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করায় জোরদার টক্কর হবে এখানে। সম্পূর্ণ ভিন্নক্ষেত্রের মানুষ হলেও ইউসুফ পাঠান’ও গোড়া থেকেই কোমর বেঁধে এই লড়াইয়ে নেছেন। এর মধ্যেই দাদার হয়ে ভোট প্রচারে বহরমপুর ঘুরে গিয়েছেন একসময়ের ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার ইরফান পাঠান।

আর‌ও পড়ুন: চিকিৎসক থেকে প্রার্থী, শর্মিলা সরকারকে নিয়ে প্রতিবেশীরা কী বলছেন?

তবে প্রচারের মাঝেই ঘন ঘন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছেন ইউসুফ। তিনি জানান, বহরমপুর লোকসভায় এবার তৃণমূল জিতবেই। সাধারণ মানুষ তাকে ভরসা করতে শুরু করেছে বলেও তিনি জানান। বহরমপুর লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা তেই গত একমাস ধরে দিনরাত প্রচার করে বেড়িয়েছেন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। গত এক মাস ধরে যে পড়াশোনা করেছেন তার ভিত্তিতে পরীক্ষা আগামী সোমবার, ১৩ মে। আর ফল প্রকাশ ৪ জুন।

কৌশিক অধিকারী

Lok Sabha Election: ভারতে ভোটদানের বয়স আগে ছিল ২১, জানেন কবে থেকে কমে ১৮ হল?

ভারতের নাগরিকদের ভোটদানের ন্যূনতম বয়স সকলেরই জানা, ১৮। নিয়ম অনুযায়ী ১ এপ্রিল ২০২৪-এর মধ্যে যাদের বয়স ১৮ হবে তারাই এ বার লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। সেই অনুযায়ী ১৮ বছরের কাছাকাছি ১ কোটি ৮৪ লক্ষ ভোটার এ বার নাম নথিভূক্ত করেছেন। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশে ভোট দেবেন প্রায় ৮৪ কোটি মানুষ।

আরও পড়ুন: দিল্লির কাছে হারের পরে শাস্তি হল সঞ্জু স্যামসনের, বিপাকে রাজস্থানের অধিনায়ক

দেশে একটা সময় ছিল যখন ভোটদানের জন্য ন্যূনতম বয়স হতে হত ২১ বছর। ১৯৮৯ সালে ভোটদানের ন্যূনতম বয়স তিন বছর কমে দাঁড়ায় ১৮ বছর। বর্তমানে ১৮ বছর বয়স হলেই ভারতের নাগরিকেরা ভোটাধিকার পান। ভোটদানের বয়স কমানোর জন্য লোকসভায় প্রথম প্রস্তাব ওঠে ১৩ ডিসেম্বর ১৯৮৮ সালে। তৎকালীন জলসম্পদ উন্নোয়ন মন্ত্রী বি শঙ্করানন্দ এই প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাব পাশ করাতে সারা দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভার সম্মতি লাগত। তখন পাঁচ রাজ্য ছাড়া সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভাই এতে সম্মতি দেয়, সেগুলি ছিল নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু,পঞ্জাব এবং জম্মু কাশ্মীর।

আরও পড়ুন: গিনেস বুকে নাম তোলার শখ বলে বেছে নিলেন গাছকে, কী করলেন যুবক?

দেশ জুড়ে ২৮ মার্চ ১৯৮৯ সালে ভোটদানের ন্যূনতম বয়স কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের সংবিধানের ৬১তম সংশোধনের পরে ১৯৮৯ সালেই এই নিয়ম কার্যকর করা হয়। এই নিয়ম কার্যকর হওয়ার পরে সেই সময় এক ধাক্কায় ৫ কোটি ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

Lok Sabha Election 2024: সকাল থেকেই রাজনৈতিক দলের ওয়ার রুমে ব্যস্ততা তুঙ্গে, জেলার দুটি আসনেই জোর টক্কর

মালদহ: সকাল থেকেই শুরু হয়েছে জেলার দুটি লোকসভা আসনে ভোট গ্রহণ। মঙ্গলবার দেশজুড়ে তৃতীয় দফার নির্বাচন চলছে। তার মধ্যে আছে পশ্চিমবঙ্গের চারটি আসন। সেই তালিকায় অন্যতম হল মালদহ জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্র। সকাল থেকেই দেশের অন্যান্য প্রান্তের তুলনায় মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট দানের হার বেশ উপরের দিকে।

এদিকে জেলার প্রথম সারির রাজনৈতিক দলগুলির পার্টি অফিসে শুরু হয়েছে তৎপরতা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে নির্বাচনী কাজ। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসে তৈরি হয়েছে ওয়ার রুম। ৮ থেকে ১০ জনের দল তৈরি হয়েছে এই ওয়ার রুমে। দুটি লোকসভা আসনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অভিযোগগুলো এই ওয়ার রুম থেকে দ্রুত নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: মরশুমের প্রথম বৃষ্টির স্বস্তি পেরিয়ে দুঃসংবাদ, ঝড়ে আম কুড়োতে গিয়ে…

মালদহ জেলা বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের ওয়ার রুম তৈরি হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মী থেকে সাধারণ ভোটাররা বিভিন্ন অভিযোগ জানাচ্ছেন এই ওয়ার রুমে এসে। জেলা বিজেপির আইটি সেলের কনভেনার তাপস মুখার্জি বলেন, সকাল থেকেই আমরা এখানে কাজ করছি। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান অভিযোগ আসছে। সেগুলি আমরা দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি।

মালদহ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়েও তৈরি হয়েছে ওয়ার রুম। সেখানেও লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান অভিযোগ এসে পৌঁছচ্ছে। এদিন কংগ্রেসের জেলা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ আবু হাসেন খান চৌধুরী। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অভিযোগ শুনে সেই মত দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আবু হাসেন খান চৌধুরী বলেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হচ্ছে। আশা করছি আমরা দুটি লোকসভা কেন্দ্রেই এগিয়ে রয়েছি।

এদিকে জেলার দুটি লোকসভা আসনেই প্রার্থী না থাকলেও জেলা বামফ্রন্ট কার্যালয়েও এদিন সকাল থেকে জোর তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিচু স্তরের কর্মীরা নানান অভিযোগ জানাচ্ছে দলীয় কার্যালয়ে এসে। সেখান থেকে ভোট পরিচালনা করছেন জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা নিজ নিজ এলাকায় ভোট করতে ব্যস্ত। তবে জেলা কার্যালয়েও কেন্দ্রীয়ভাবে একটি টিম কাজ করছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি শুভদীপ সান্যাল বলেন, আমাদের বিভিন্ন সাংগঠনিক নেতারা নিজ নিজ এলাকায় ভোট করছেন। জেলা পার্টি অফিসেও একটি টিম কাজ করছে। এখনও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে।

হরষিত সিংহ

Lok Sabha Election 2024: একদা গনি গড়ের সব বুথে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

মালদহ: সমস্ত বুথে থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা। করা হবে ওয়েব কাস্টিং। মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের সব বুথে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাত পোহালেই শুরু হবে ভোটগ্রহণ। তার আগে এটাই চুম্বকে একদা গনি গড়ের ছবি।

LIVE : লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ তৃতীয় দফা ভোটগ্রহণ

মালদহ দক্ষিণ লোকসভা আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে মোট ১৯ জন প্রার্থী।‌ ইংরেজবাজার, মানিকচক, সুজাপুর, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগর ও মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জ এবং ফরাক্কা বিধানসভা নিয়ে মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ১৭ লক্ষ ৮২ হাজার ১৫৯ জন। পুরুষ ভোটার ৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫২৪ জন। মহিলা ভোটার ৮ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৮৭ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪৮ জন। দক্ষিণ মালদহে মোট ভোট গ্রহণ কেন্দ্র ১৭৫৯ টি। মহিলা পরিচালিত বুথের সংখ্যা ২৭ টি।

আর‌ও পড়ুন: মথুরাপুরের গণনা কেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি বাম-বিজেপির, কারণ শুনলে অবাক হবেন

২০১৯ সালে কান ঘেঁষে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেন খান চৌধুরী ( ডালু)‌। তিনি পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৭০ টি ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ০৪৮ টি। তৃতীয় স্থানে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৩৫৩ টি। ৭ মে দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হবে। মালদহ জেলা জুড়ে মোট ১৪৪ কোম্পানি কেন্দ্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে নির্বাচনের জন্য। মালদহ দক্ষিণে মোট ভোট কর্মী থাকছেন ৫৭৬৮ জন। এবারেও এখানে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা।

হরষিত সিংহ

Lok Sabha Election 2024: ‘ভদ্র মানুষ’ খলিলুর নাকি আবার ‘হাতে’ আস্থা রাখবে জঙ্গিপুর? পদ্ম ফোটাতে মরিয়া বিজেপিও

মুর্শিদাবাদ: রাত পোহালেই তৃতীয় দফার নির্বাচন। আর এবার উত্তরবঙ্গের পর্ব পেরিয়ে মধ্যবঙ্গে প্রবেশ করছে বাংলার ভোট পর্ব। মঙ্গলবার জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। রবিবার ছিল এই কেন্দ্রগুলির নির্বাচনী প্রচারের শেষদিন। রবিবার সকাল থেকেই জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিভিন্ন জায়গায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা প্রচারে ঝড় তোলেন।

LIVE : লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ তৃতীয় দফা ভোটগ্রহণ

রবিবার সকাল থেকেই খড়গ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় নির্বাচনী প্রচার করেন জঙ্গিপুরের তৃণমূলের প্রার্থী খলিলুর রহমান। খড়গ্রামের বিধায়ক আশিস মার্জিতকে সঙ্গে নিয়ে হুড খোলা গাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী প্রচার সারেন। অন্যদিকে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মর্তুজা হোসেন লালগোলা বিধানসভা এলাকাতে নির্বাচনী প্রচার করেন। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হুডখোলা গাড়িতে তিনি জোরকদমে প্রচার করেন। বাম ও কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা একযোগে ময়দানে নামেন।

আর‌ও পড়ুন: পথ দুর্ঘটনায় আহতদের নিয়ে সেলিমের কাণ্ড দেখে হতবাক সকলে!

এদিকে সংখ্যালঘু প্রধান মুর্শিদাবাদ জেলায় এবার লোকসভা ভোটে পদ্ম ফোটাতে মরিয়া বিজেপি। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রবিবার রোডশো করেন জঙ্গিপুরের বিজেপি প্রার্থী ধনঞ্জয় ঘোষের সমর্থনে। অন্যদিকে মালদহ দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রায়হানের সমর্থনে সামশেরগঞ্জে রোড শো করে প্রচারে ঝড় তোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তাঁকে দেখার জন্য রাস্তার দু’ধারে জনপ্লাবন তৈরি হয়।

কৌশিক অধিকারী

Lok Sabha Election 2024: ‘গনি’ মিথ আজ‌ও অটুট? মালদহ দক্ষিণে গঙ্গা ভাঙন ইস্যুর সঙ্গেই চলছে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা

মালদহ: আজও কি বরকত গনি খান চৌধুরীর নামে ভোট হয় মালদহে? গনি পরিবারের খাসতালুক বলে পরিচিত দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রে এবার তারই যেন লিটমাস টেস্ট। তবে তারই পাশাপাশি এই কেন্দ্রে প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে গঙ্গা ভাঙন ও তাতে বিপর্যস্তদের পুনর্বাসনের বিষয়টি।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আট হাজারের সামান্য কিছু বেশি ভোটে জিতে কোন‌ওরকমে গনি খানের ‘গড়’ রক্ষা করেছিলেন তাঁর ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী। তবে এবার বর্ষীয়ান আবু হাসেম ওরফে ডালুবাবু প্রার্থী হননি। পরিবর্তে গনি খানের তালুক রক্ষার দায়িত্ব এসে পড়েছে ঈশা খানের কাঁধে। যিনি সম্পর্কে ডালুবাবুর ছেলে। অবশ্য ইশা খান এর আগে মালদহের সুজাপুর বিধানসভার বিধায়ক ছিলেন। যে বিধানসভা থেকে প্রথমবারের জন্য নির্বাচিত হয়ে রাজ্য বিধানসভায় গিয়েছিলেন গনি খান।

আর‌ও পড়ুন: ‘দিলীপকে দেখেই রাজনীতিতে আসা’, ঘোষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সুকান্ত

দক্ষিণ মালদহ লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভাগুলির সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে নদী ভাঙন। গত কয়েক বছর ধরে গঙ্গা নদী যেন তার ভাঙনের তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে প্রতিবছর বর্ষাকালে বহু মানুষকে নতুন করে ভিটেমাটি হারাতে হচ্ছে। তাই এখানকার বাসিন্দারা চাইছেন, সবার আগে ভাঙন বিপর্যস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক। সেই সঙ্গে গঙ্গা নদীর ভাঙন ঠেকাতে সামগ্রিক পরিকল্পনা করে গোটা এলাকা জুড়ে কংক্রিটের বাঁধ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন অনেকে।

এই নদী ভাঙন ইস্যুতে একে অপরকে নিশানা করে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে এবার জমজমাট ত্রিমুখী লড়াই দেখা যাচ্ছে। বিজেপি এবারেও প্রার্থী প্রার্থী করেছে গতবারের পরাজিত শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে। শেষ বাজি কোন পক্ষ মারবে তা ৪ জুন ভোট গণনার আগে বলা কঠিন।

দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৭ লক্ষ ৮২ হাজার। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে এই লোকসভা আসন। এরমধ্যে দুটি বিধানসভা মুর্শিদাবাদের। দক্ষিণ মালদহের গড় ধরে রাখার জন্য মুর্শিদাবাদের অন্তর্গত দুটি বিধানসভার উপর প্রবল ভরসা করছে কংগ্রেস। সেই সঙ্গে এই ভোটেই ঠিক হয়ে যাবে আজও গনি খানের নামে মালদহের মানুষ ভোট দেয় কিনা।

হরষিত সিংহ