সবজি ডিজাইনার 

Bankura News: তরমুজ, শসা এবং গাজর দিয়ে ময়ূর, কুমির! কম উপার্জনেও ভালবাসাকে আঁকড়ে শিল্পী

বাঁকুড়া: দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে এক অনন্য শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এই ব্যক্তি। বাড়ি কলকাতায় হলেও এই শিল্প চর্চা করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন বাঁকুড়ায়। প্রায় ৩২ বছর আগের কথা। বাঁকুড়ার জনপ্রিয় এক ব্যবসায়ীর পৃষ্ঠপোষকতায় করতেন এমন সব সুন্দর কাজ। আবারও ফিরে এলেন বাঁকুড়া। এবার তৈরি করলেন ময়ূর, তাও আবার তরমুজ, গাজর , শসা এবং আনারস দিয়ে। সবজি কেটে ডিজাইন তৈরি করার এই শিল্প দেখা যায় না খুব একটা। তবে শিল্পী তরুণ চট্টোপাধ্যায় এই কাজ করছেন দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ। এই শিল্পের না ভেজিটেবল ডিজাইনিং। গাজর দিয়ে ময়ূরের ঠোঁট, শসা দিয়ে ময়ূরের মাথা থেকে গলা এবং আনারস দিয়ে দেহ। এছাড়াও লাউ কেটে বানাচ্ছেন কুমির।

শিল্পী তরুণ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল বলে স্নাতক করতে পারেননি। তখনই ডিজাইনিং নিয়ে একটি ডিপ্লোমা করেন এবং তারপর থেকেই এই কাজ করে চলেছেন।  শুরুর দিকে  বাঁকুড়াতেই পেয়েছেন সবচেয়ে বেশি কাজ এবং ভালবাসা। যে কারণে আজও ফিরে এসেছেন বাঁকুড়ায়।

আরও পড়ুন: টোটো বন্ধ নানা জায়গায়, শান্তিনিকেতন ঘুরে দেখতে নয়া উদ্যোগ, এবার কিসে চেপে ঘুরবেন বোলপুর

আরও পড়ুন: ৭ দিন কোনও খোঁজ নেই! হঠাৎ মাঝসমুদ্রে… গায়ে কাঁটা দেওয়া ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ১৩ মৎস্যজীবী

সবজি ডিজাইনার তরুণ সব রকমের অনুষ্ঠান বাড়িতেই কাজ করে থাকেন যেমন, বিয়ে বাড়ি, অন্নপ্রাশন, বিবাহ বার্ষিকী এবং পৈতে। এই মৌলিক শিল্প চর্চা খুবই বিরল বলেই স্বীকার করেছেন তরুণ। তিনি জানান, দক্ষিণবঙ্গে তিনিই একমাত্র যে এই শিল্পকে চালিয়ে যাচ্ছেন যদিও বর্তমান প্রজন্মকে শেখানোর চেষ্টা করে হতাশ হয়েছেন তিনি। অর্থের মাপকাঠিতে বিচার করে এই শিল্পের সেরকম প্রসার ঘটেনি। আজও মাসে ১০ টা কাজ করে মাত্র ২০ হাজার মতো উপার্জন করতে পারেন তরুণ। তাও প্রতি মাসে ১০ টা কাজ পাওয়া যথেষ্ট কঠিন।

ফ্রেশ সবজি কেটে একটু একটু করে বিভিন্ন সবজির টুকরো ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলা হয় একটার পর একটা জীবজন্তু। নিজের গোটা জীবনে এই শিল্পচর্চা করেই উপার্জন করে চালিয়েছেন জীবন-জীবিকা। এখন বয়স হয়েছে তরুণ বাবুর, শরীরের পোশাক হয়েছে মলিন, হাতের ঘড়িতে পড়েছে জং তারসঙ্গে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চোখের ছানি, তবে কি ভবিষ্যৎ এই শিল্পের? উত্তরটা হয়ত সবারই জানা।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী