কলা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং উপকারী একটি ফল, যা খাওয়া শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ভারতে জনপ্রিয়তম ফল এই কলা। সস্তা ও পুষ্টিতে ভরপুর এই ফলটি হামেশাই খেয়ে থাকেন অনেকে। বাচ্চাদের এই ফলটি খাওয়াতেও উৎসাহী হন বাবা-মা-রা।কিন্তু কলা যখন তখন খেলেই কি মিলবে পর্যাপ্ত উপকার? কলা কখন খাবেন জানেন? এই দুর্দান্ত পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ ফলটি খাওয়ার সেরা সময় কখন? কেউ কেউ সন্ধ্যা বা রাতে যে কোনও সময় এই ফলটি খান। কিন্তু হেলথলাইন ডট কম পরামর্শে জানিয়েছে ঠিক কোন সময়ে কলা খাওয়া ভাল ও উপকারী।এই সময়ে এবং এভাবে কলা খান: সকালের জলখাবারের কলা খাওয়া আপনার জন্য উপকারী হতে পারে, কিন্তু ব্রেকফাস্ট হিসেবে শুধু কলা খাওয়া ঠিক নয়। এমন অবস্থায় সকালের জলখাবারের আগে বা পছন্দমত কোনও সময়ে কলা খেতে পারেন।লোকাল 18 কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড মোহিত বলেন, “কলা এমন একটি ফল যা সস্তার পাশাপাশি উপকারীও। এটি সব ঋতুতে পাওয়া যায়। ভারতের প্রতিটি অঞ্চলেও পাওয়া যায় এই ফল। শক্তি সমৃদ্ধ এই ফলটি খেলে শরীর থেকে অনেক ধরনের রোগ দূর হয়। ভিটামিন এ, সি, ভিটামিন বি৬, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট পাওয়া যায় এই ফলটিতে।”শুধু কলা খাবেন না: অনেকেই ব্রেকফাস্টের সময় সকালের কাজের তাড়াহুড়োয় শুধুমাত্র একটি কলা খেয়ে নিতে পছন্দ করেন, কিন্তু এই অভ্যাস এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে হেলথলাইন ডট কম।পরামর্শ অনুযায়ী বলা হচ্ছে শুধু কলা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এর কারণ, কলায় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক শর্করা থাকে। এটি শুধুমাত্র সেবন করলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। তাই সকালের জলখাবারে শুধুমাত্র কলা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।আপনার ডায়েটে এই জিনিসগুলি অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে: এক্ষেত্রে সকালের জলখাবারে কলা খেতে চাইলে আপনি এই ফলটিকে বিভিন্ন উপায়ে ব্রেকফাস্টের ডায়েটে যোগ করতে পারেন।ব্রেকফাস্টে আপনি চাইলে স্মুদি হিসেবে কলা খেতে পারেন। আবার চাইলে ওটমিলের ওপরে টুকরো টুকরো করে কাটা কলা দিয়ে খেতে পারেন। এর সঙ্গে আপনি উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যোগ করেও কলা খেতে পারেন।ফাইবার-ভিটামিন-খনিজগুলির সেরা উৎস কলা: কলা ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজগুলির একটি ভাল উৎস। একটি মাঝারি আকারের কলায় প্রায় ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে।উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত এই ফলটি সকালের ব্রেকফাস্টের সময় খাওয়াই সবথেকে উপকারী। তবে, একইসঙ্গে জেনে রাখা ভাল যে কলায় প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, তাই খালি পেটে কলা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।কলা খাওয়ার উপকারিতা: কলায় পটাশিয়াম, ফাইবার এবং ভিটামিন বি৬ এবং সি এর মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে একাধিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এগুলি স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবেই তাই উপকারী বিবেচিত হয়।সকালের জলখাবারে এগুলি অন্তর্ভুক্ত করলে তাই তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও, উচ্চ ফাইবার, উচ্চ কার্ব-যুক্ত খাবারটি কার্যকরী প্রোটিন উৎসও বটে। এই ফল খেলে রক্তে শর্করা এবং ক্ষুধাবোধের মাত্রা উন্নত করতে পারে।কলা খাওয়ার আগে এই বিষয়গুলি মনে রাখবেন: প্রাতঃরাশের জন্য কলা খাওয়া নিঃসন্দেহে একটি ভাল বিকল্প হতে পারে। তবে প্রচুর পরিমাণে কলা খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়িয়ে দিতে পারে।এই কারণে টাইপ 2 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এর পাশাপাশি এটি বেশি কার্বোহাইড্রেটযুক্ত জিনিসের সঙ্গে খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।শর্তত্যাগ: শুধুমাত্র আপনাদের সচেতনতার উদ্দেশ্যেই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে। আমরা এই লেখায় সাধারণ জ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবনের কিছু সাধারণ তথ্য শেয়ার করেছি মাত্র। আপনি যদি কোথাও আপনার স্বাস্থ্য, জীবন ও বিজ্ঞানের যোগ সম্পর্কিত কিছু পড়েন তবে তা গ্রহণ করার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
