মালদহ: সস্তায় বিক্রি হচ্ছে কাঠের আসবাবপত্র। কাঠের তৈরি কী নেই এই মেলায়! তবে আশ্চর্যের বিষয় এখানে বাজারের থেকে অর্ধেকের থেকেও কম দামে বিক্রি হচ্ছে কাঠের খাট। যা কিনতে দূর দূরান্তের মানুষ ভিড় করছেন এখানে।বাজারে যে খাটের দাম ৫০ হাজার টাকা, এখানে সেই খাট মিলছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়। কাঠের বক্স খাট থেকে রয়েছে বিভিন্ন নকশা করা খাট। পছন্দ করে মানুষ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
কোথায় এই খাটের মেলা বসেছে জানেন? মালদহের পুরাতন মালদহ পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মহানন্দা নদীর তীরে। এই প্রথম নয়, প্রতি বছর লক্ষীপুজো পরে এই কাঠের মেলার আসর বসে। বিক্রেতা খোকন সূত্রধর বলেন, সবচেয়ে বেশি কাঠের খাটের চাহিদা এই মেলায় বেশি। বাজারের থেকে কম দামে আমরা বিক্রি করি। দূর দূরান্তের প্রচুর লোক আছে কিনতে। এই মেলা কাঠের মেলা নামে বিখ্যাত।
উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের কাঠের আসবাবপত্র ব্যবসায়ীরা এখানে দোকান নিয়ে আসে। মহানন্দা নদীর তীরে শতাধিক দোকান বসেছে এই বছর। কাঠের মেলা হিসাবেই ঐতিহ্য রয়েছে এই মেলার। বর্তমানে খ্যাতিও ছাড়িয়েছে জেলা ও জেলার বাইরে।কালী পুজোর আগের দিন পর্যন্ত এই মেলা থাকে।
বর্তমানে কাঠের মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও প্রাচীন এই মেলা একসময় চারু শেঠের মেলা হিসেবেই পরিচিত ছিল।পুরাতন মালদহের শেঠ পরিবারের সদস্য ছিলেন চারুবাবু। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, প্রায় আড়াইশো বছর আগে চারুবাবু লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে এই মেলার সূচনা করেছিলেন পুরাতন মালদহে। মহানন্দা নদীতে বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। সেই উপলক্ষেই নদীর তীরবর্তী বিশাল এলাকা জুড়ে শুরু হয় মেলা। স্থানীয় বাসিন্দা রবি দাস বলেন, বহু প্রাচীন এই মেলা। চারু বাবুর মেলা নামে বিখ্যাত ছিল। একসময় বাইচ প্রতিযোগিতা হত। এখন কাঠের মেলা নামেই বিখ্যাত।
বর্তমানে মহানন্দা নদীতে বাইচ প্রতিযোগিতা আর হয় না। তবে রয়ে গিয়েছে মেলা। বর্তমানে এই মেলা কাঠের মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।প্রাচীন ঐতিহ্য আজও বজায় রেখেছে পুরাতন মালদহের এই কাঠের মেলা। তাইতো প্রতিবছর জেলা ও জেলার বাইরের বহু ক্রেতা বিক্রেতারা এই মেলায় ভিড় করেন।
হরষিত সিংহ