রাজ্যসভাতেও চাপে বিজেপি? কতটা লাভবান হবে কংগ্রেস?

BJP equation in Rajya Sabha: রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল বিজেপি! কতটা বিপাকে পড়বে মোদি সরকার, কী বলছে অঙ্ক?

নয়াদিল্লি: রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল বিজেপি৷ শনিবার রাজ্যসভার চার সাংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যসভায় বিজেপির শক্তি কমে দাঁড়াল ৮৬৷

যে চার সাংসদের মেয়াদ শনিবার শেষ হয়েছে তাঁরা হলেন রাকেশ সিনহা, রাম শাকাল, সোনাল মানসিং এবং মহেশ জেঠমালানি৷ এই চার সাংসদকেই শাসক দলের পরামর্শে মনোনীত করেছিলেন রাষ্ট্রপতি৷ পরবর্তী সময়ে রাজ্যসভায় বিভিন্ন ইস্যুতে এনডিএ সরকারকেই সমর্থন জানিয়েছেন তাঁরা৷

এই চার সাংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ সংখ্যা কমে দাঁড়াল ৮৬৷ এনডিএ-র সাংসদ সংখ্যা দাঁড়াল ১০১৷ রাজ্যসভায় মোট সদস্য সংখ্যা ২৪৫৷ বর্তংমানে অবশ্য রাজ্যসভায় ২২৫ জন সাংসদ রয়েছেন৷ ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৩ জন সাংসদের সমর্থন৷ অর্থাৎ, এনডিএ-র হাতে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে ১২ জন সাংসদ কম রয়েছেন রাজ্যসভায়৷

আরও পড়ুন: এনডিএ-২, ইন্ডিয়া-১০! সাত রাজ্যে উপনির্বাচনে একপেশে দাপট বিরোধীদের, ধাক্কা বিজেপির

অন্য বিরোধী শিবির ইন্ডিয়া ব্লকের হাতে রয়েছে ৮৭ জন সাংসদ৷ এর মধ্যে কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ২৬, তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ১৩ জন সাংসদ৷ পাশাপাশি ডিএমকে, আপ-এর হাতে রয়েছে দশ জন করে সাংসদ৷

অন্যদিকে বিআরএস-এর মতো কিছু দল রয়েছে যারা বিজেপি অথবা কংগ্রেস, কোনও দলের সঙ্গেই নেই৷ এ ছাড়াও কয়েকজন নির্দল সাংসদও রয়েছেন৷

বর্তমান সমীকরণের ফলে রাজ্যসভায় কোনও বিল পাস করানোর জন্য বিজেপির অন্তত ১৩টি ভোট প্রয়োজন৷ এর জন্য বিজেপির প্রধান ভরসা হতে পারে জগন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং এআইডিএমকে৷ ওয়াইএসআর কংগ্রেসের হাতে রয়েছেন ১১ জন সাংসদ এবং এআইডিএমকে-র হাতে রয়েছে চারজন সাংসদ৷ অতীতে এই দুই দলই বিজেপির জোট সঙ্গী থাকলেও গত ডিসেম্বর মাসেই লোকসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে তারা৷

জগন রেড্ডি অবশ্য এর আগে বিজেপিকে বিভিন্ন বিল পাসের ক্ষেত্রে ইস্যু ভিত্তিক সমর্থন দিয়েছে৷ ফলে জগনের দলের ১১ সাংসদের সমর্থন পাওয়া বিজেপির নিশ্চিত৷ অতীতে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতোই বিজেপিকে ইস্যু ভিত্তিক সমর্থন দিয়েছে নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল বা বিজেডি৷ কিন্তু সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি তাদের ওড়িশায় ক্ষমতাচ্যুত করার পর এনডিএ-কে তারা আর সমর্থন করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন নবীন পট্টনায়েক৷

এর পরেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে সমস্যা হলে মনোনীত সদস্যদের সমর্থন চাইতে পারে বিজেপি৷ সাধারণত এই মনোনীত সদস্যরা শাসক দলকেই সমর্থন করে থাকেন৷ এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় ২০টি আসন ফাঁকা রয়েছে৷ তার মধ্যে ১১ জন সাংসদ বিভিন্ন রাজ্য থেকে নির্বাচিত হয়ে আসবেন৷ এর মধ্যে দুটি করে আসন ফাঁকা রয়েছে মহারাষ্ট্র, অসম এবং বিহারে৷ একটি করে আসন ফাঁকা রয়েছে হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং ত্রিপুরায়৷ এর মধ্যে অসম, বিহার, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ত্রিপুরা থেকে সাতটি আসনে নিশ্চিত জয় পাওয়ার মতো বিধায়ক সংখ্যা রয়েছে বিজেপির হাতে৷ সঙ্গী দলগুলির বিধায়কদের পুরো সমর্থন পেলে মহারাষ্ট্র থেকেও দুটি আসনই জিততে পারে বিজেপি৷

বিজেপি যদি এই ৯টি আসনেই জেতে এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থন পায়, সেক্ষেত্রে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের মতো সংখ্যা পেয়ে যাবে৷ এ ছা়ড়াও জম্মু কাশ্মীর থেকে রাজ্যসভার চারটি আসন ফাঁকা রয়েছে৷ জম্মু কাশ্মীরেও কয়েক মাসের মধ্যে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ তেলঙ্গানা থেকে রাজ্যসভার আসনটি সম্ভবত কংগ্রেসই জিতে নেবে৷ সেক্ষেত্রে রাজ্যসভাতেও বিরোধী দলনেতার পদটির জন্য দাবি জানানোর মতো সংখ্যা চলে আসবে কংগ্রেসের হাতে৷