বিনোদন Bollywood Actor Life Story: মাত্র ৫-এ পিতৃহারা, বাস কন্ডাক্টরি করে পেট চালানো, চোখের সামনে ছেলেকে জেলে যেতে দেখা… তারকা হয়েও দেউলিয়া সেই নায়ক Gallery June 10, 2024 Bangla Digital Desk প্রবল জনপ্রিয়, একইসঙ্গে অসম্ভব সম্মানীয়। অনস্ক্রিন অভিনয় দক্ষতার জন্য মানুষের ভালবাসা পেয়েছেন সারা জীবন। পাশাপাশি অফস্ক্রিন ব্যক্তিত্বের কারণে অঢেল সম্মান পেয়েছেন। জমিদারের পরিবারে জন্মেও পেটের টানে সবরকম কাজে নিয়োগ করেছেন নিজেকে। ১৯২৯ সালের ৬ জুন জমিদার পরিবারে জন্ম বলিউডের এই তারকার। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবা দিওয়ান রঘুনাথ দত্তকে হারান তিনি। দেশভাগের পর পাকিস্তান থেকে লখনউতে চলে আসেন। তারপর, কিশোর বয়সে, মা কুলবন্তীদেবী দত্তের সঙ্গে মুম্বই আসেন। জয় হিন্দ কলেজে পড়াশোনা করেন তারকা। কিন্তু মা এবং তাঁর খাওয়াপড়ার জন্য চাকরির প্রয়োজন পড়ে যায়। পড়াশোনা করতে করতেই বাস কন্ডাক্টর হিসেবে চাকরি নেন। তারপর ১৯৫৪ সালে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। আজ ৯০ বছরের সেই অভিনেতার জীবনের ওঠাপড়া নিয়ে কথা বলব আমরা। তিনি অবশ্য কেবল অভিনয় করেই নিজের দক্ষতা প্রকাশ করেননি। ছবি নির্মাতা এবং রাজনীতিবিদও বটে। কথা হচ্ছে, সুনীল দত্তের। স্নাতকের পর সুনীল রেডিও সিলনে রেডিও জকির চাকরি পান। টক শো ‘লিপটন কি মেহফিল’ হোস্ট করতেন, এবং একদিন, তিনি পরিচালক রমেশ সায়গালের নজরে পড়েন। সুনীলের কণ্ঠস্বর এবং ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে ছবিতে বড় ব্রেক দেন। ১৯৫৫ সালের ছবি ‘রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম’-এ অভিনয় করেন সুনীল। পরবর্তীতে, সুনীল বিআর চোপড়ার ‘এক হি রাস্তা’ (১৯৫৬) এবং মেহবুব খানের কাল্ট ছবি ‘মাদার ইন্ডিয়া’ (১৯৫৭) দিয়ে তারকার খ্যাতি পান। অন্যান্য জনপ্রিয় হিটগুলির মধ্যে রয়েছে ‘সাধনা’ (১৯৫৮), ‘গুমরাহ’ (১৯৬৩), ‘ওয়াক্ত’ (১৯৬৫), এবং ‘পড়োসন’ (১৯৬৮)। ৬০-এর দশকের শেষের দিকে সুনীলও প্রযোজক হয়ে ওঠেন এবং তিনি ‘রেশমা অউর শেরা’ প্রযোজনা করছিলেন। প্রাথমিকভাবে, ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন সুখদেব, কিন্তু দত্ত ছবিটি নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন। তাই তিনি পরে ছবিটি নিজেই পরিচালনা করার এবং আবার শ্যুট করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭১ সালের ২৩ জুলাই মুক্তি পেয়ে ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। একটি সাক্ষাত্কারে সুনীল জানিয়েছিলেন, এই ছবির ব্যর্থতার পর তিনি দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন। গাড়ি বিক্রি করতে হয়েছিল। এমনকি ঋণ পরিশোধের জন্য বাড়িও বন্ধক রাখতে হয়েছিল। সুনীলের কথায়, ‘‘সেই সময় আমি দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলাম। আমাকে আমার গাড়ি বিক্রি করে বাসে যাতায়াত শুরু করতে হয়েছিল। আমার বাচ্চাদের স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি গাড়ি রেখেছিলাম। এমনকি আমার বাড়িও বন্ধক ছিল।’’ সুনীলের প্রত্যাবর্তন হয় ১৯৭৩ সালের ‘হীরা’ ছবিটি দিয়ে। তারপর একে একে ‘নাগিন’ (১৯৭৬), এবং ‘জানি দুশমন’ (১৯৭৯)-এর মতো বেশ কয়েকটি সফল সিনেমা করে তাঁর হাল ফেরে। তবে ১৯৮০-এর দশক থেকে সুনীল আর নায়কের ভূমিকা পান না। পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে রোজগার করতে থাকেন। ১৯৯৩ সালে অভিনয় জগৎ থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। এরই মাঝে ছেলে সঞ্জয়ের হাজতবাসের মতো ঘটনায় ফের কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাঁকে। কিন্তু সঞ্জয়েরই ছবি ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ (২০০৩) দিয়ে ফের ছবির জগতে পা রাখেন সুনীল। ১৯৮১ সালে সুনীলকে এক বছরের জন্য মহারাষ্ট্র সরকার মুম্বইয়ের শেরিফ হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। ২০০৪ সালে তিনি মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হন এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম মুম্বই থেকে সংসদের সদস্য ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৫ মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সুনীল।