Wayanad Tragedy: ওয়ানাড বিপর্যয় থেকে শিক্ষা, পশ্চিমঘাটের ৫৭ হাজার বর্গকিমি এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংবেদনশীল’ হিসাবে ঘোষণার প্রস্তাব কেন্দ্রের

কেরালা: ওয়ানাড বিপর্যয়ের রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই পশ্চিমঘাটের প্রায় ৫৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংবেদনশীল এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য খসড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র সরকার।

এই অঞ্চলের মধ্যে পড়ছে ওয়ানাডের ১৩টি গ্রাম এবং কেরলের প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা। নিউজ 18-এর হাতে এসেছে ৩১ জুলাই কেন্দ্রের জারি করা খসড়া বিজ্ঞপ্তিটি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমঘাটের প্রায় ৩৬ শতাংশ এলাকাকে পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য জানানোর জন্য ৬০ দিন সময় দিয়েছে কেন্দ্র। এরপর চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্ত রাজ্য ভিত্তিক বা সম্মিলিত নির্দেশ হিসাবে জারি করা হবে। খসড়া বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই বলা হয়েছে।

মোট ৬টি রাজ্য – মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, গোয়া এবং গুজরাতের ৫৬,৮২৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংবেদনশীল’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এর ফলে একাধিক বাণিজ্যিক কার্যকলাপে বিষিনিষেধ আরোপ করা হবে। এর মধ্যে কেরলের ৯,৯৯৪ বর্গকিমি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তার মধ্যে পড়ছে ওয়ানাডের ১৩টি গ্রাম।

এই নিয়ে ষষ্ঠবার খসড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র সরকার। ২০২২ সালের জুলাইয়ে শেষবার খসড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে পরামর্শ করে বিজ্ঞপ্তি চূড়ান্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল কমিটিও।

ব্যাপক ব্যাণিজ্যিকীকরণ এবং ‘পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকা’ হিসাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা না করাকেই ওয়ানাড বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। খসড়া বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ানাডের ১৩টি গ্রামকে সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল – পেরিয়া, থিরুনেলি, থন্ডারনাড, থ্রিসিলারি, কিদাঙ্গানাদ, নুলপুঝা, অচূরানাম, চুন্ডেল, কোট্টপ্পাদি, কুন্নাথিদাভাকা, পোজুথানা, থারিওদ এবং ভেল্লারিমালা।

আরও পড়ুন- জমে দুর্ভোগ! কী ভাবে আটকানো যায় বন্যা? জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্য সচিব

২০১৩ সালে একটি উচ্চ পর্যায়ের ওয়ার্কিং গ্রুপ এই অঞ্চলের বিপদের কথা জানিয়ে রিপোর্ট জমা দেয়। তার পর থেকে ৬টি রাজ্য জুড়ে বিস্তৃত পশ্চিমঘাট অঞ্চলকে সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার প্রক্রিয়া চলছে। চূড়ান্ত ঘোষণার পর থার্মাল প্ল্যান্ট, খনির কাজ, রেড ক্যাটাগরির শিল্প এবং ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ বন্ধ হয়ে যাবে।

পশ্চিমঘাটের গুরুত্ব: পশ্চিমঘাট ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ ভূতাত্ত্বিক ভূমিরূপ এবং গোদাবরি, কৃষ্ণা, কাবেরি এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি নদীর উৎপত্তিস্থল। উত্তরের তাপ্তি ন্দী থেকে দক্ষিণের কন্যাকুমারী পর্যন্ত ৬ টি রাজ্যের প্রায় ১৫০০ কিমি জুড়ে বিস্তৃত। গড় উচ্চতা ৬০০ মিটারের বেশি। এই এলাকাকে বাঁচিয়ে রাখতে খনন, বালি উত্তোলন ইত্যাদির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। কোনও তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির অনুমোদনও দেওয়া হবে না।