Chandrima Bhattacharya on junior doctors: ‘পিছনে রাজনীতির খেলা’, জুনিয়র চিকিৎসকদের নিশানা করলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা

কলকাতা: রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসা নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের অনড় মনোভাবের পিছনে রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে৷ এমনই গুরুতর অভিযোগ তুললেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ সরাসরি জুনিয়র চিকিৎসকদের নিশানা করে মন্ত্রী বলেন, রাজনীতি লুকিয়ে রয়েছে বলেই এই ধরনের ঘটনাপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে৷ যিনি নির্য়াতিতা হয়েছেন, মায়ের কোল ছেড়ে চলে গিয়েছেন, সেই মেয়েটি বিচার পাক, এটা তাঁরা চাইছেন না৷

শুধু তাই নয়, আলোচনা চেয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ করবে কি না, অথবা অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্য সরকার এবার আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে কি না, তারও স্পষ্ট জবাব দেননি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী৷ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে মন্ত্রী শুধু বলেন, যা হবে আপনারা জানতে পারবেন৷

আরও পড়ুন: কোনও শর্ত মেনে আলোচনা নয়, জানালেন মুখ্যসচিব! জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি খারিজ করল নবান্ন

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা কাটাতে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য সরকারের৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, গতকাল বিকেল পাঁচটার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে জুনিয়র চিকিৎসকদের৷ যদিও আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকৎসকরা গতকাল দুপুর থেকে একটানা স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসে রয়েছেন৷

এই অচলাবস্থা কাটাতে এ দিন ফের জুনিয়র চিকিৎসকদের আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়ে ই মেল করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ৷ তার পাল্টা জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, আলোচনায় বসার জন্য রাজ্যকে তাদের চার দফা শর্ত মানতে হবে৷ এর মধ্যে অন্যতম শর্ত ছিল,সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা এবং বৈঠকের লাইভ সম্প্রচারের দাবি৷ যদিও এ দিন সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্যসচিব জানিয়ে দেন পূর্ব নির্ধারিত কোনও শর্ত মেনে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে না৷

এই প্রসঙ্গেই রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা প্রশ্ন করতে চাই, ভোর ৩.৪৫-এ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ফোন আসা কি স্বাভাবিক? এর পিছনে কি রাজনৈতিক উদেশ্য আছে? আজ দুপুর ৩. ২১- এ মুখ্যসচিব মেল করে ৬টায় আলোচনায় আসতে বললেন৷ তার উত্তর এল ২ ঘণ্টা বাদে। রাজ্য সরকার খোলা মনে আলোচনায় বসতে চাইছে। কোনও শর্ত দিয়ে খোলা মনে বসা যায় না। আসলে এর পিছনে রাজনীতির খেলা আছে। আমরাও চাই মেয়েটি বিচার পাক৷ আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দেব। মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু নেতিবাচক পদক্ষেপ করেননি। রোগীদের বঞ্চনা করা হচ্ছে, এটা ঠিক নয়। জুনিয়র চিকিৎসকদের বলব, রাজনৈতিক প্ররোচনায় না গিয়ে যে মহৎ পেশায় আছেন, তাতে যোগ দিন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলুন। শর্ত এবং আলোচনা, পাশাপাশি চলতে পারে না। আমরা মানুষের সামনেই পুরোটা রাখছি৷ আমরা চেয়েছিলাম খোলা মনে আলোচনা৷’

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, এর পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনা চেয়ে নতুন করে আর জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে কোনও প্রস্তাব পাঠান হবে কি না৷ পাশাপাশি, কাজে না ফিরলে রাজ্য সরকার আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবে কি না, সেই প্রশ্নও করা হয় মন্ত্রীকে৷ জবাবে তিনি শুধু বলেন, ‘কোনও পদক্ষেপ করা হলে অথবা নতুন করে জুনিয়র চিকিৎসকদের ই মেলের জবাব দেওয়া হলে সবাই জানতে পারবেন৷’

যদিও তাঁদের আন্দোলনের পিছনে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা৷ মন্ত্রীর অভিযোগের জবাব দিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিকেই ঢুকতে দিইনি৷ তৃণমূল, বাম, কংগ্রেস, বিজেপি- প্রথম দিন থেকে কোনও নেতাকেই আমরা আন্দোলনে ঘেঁষতে দিইনি৷ আমরাও খোলা মনেই আলোচনা চেয়েছিলাম৷’