কলকাতা: ভয়ঙ্কর ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলেন কলকাতার তরুণী। প্রতি মুহূর্তে বিপদের হাতছানি। একটা সময় বেঁচে ফেরার সব আশাই কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অপেক্ষায় ছিলেন। এসে গেল সেই সুযোগ। তারপরই কলকাতায় পালিয়ে এলেন তিনি। কথাগুলো বলতে গিয়ে এখনও ভয়ে আতঙ্কে কেঁপে কেঁপে উঠছিলেন সেই তরুণী।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। কলকাতার উত্তরে কালিন্দীতে কেরল থেকে আসা এক কেরলের এক যুবক একটি ক্যাফে খোলেন। সেখানে নিয়মিত যেতেন তরুণী। কেরলের ওই যুবককে দেখে আকৃষ্ট হন তরুণী। তারপর বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। একটা সময় ঘর বাঁধার স্বপ্ন দুচোখ ভরে দেখতে শুরু করলেন।
যুবকও সংসার করার জন্য বিরিয়ানির রেস্তোরাঁ খুললেন চেন্নাইয়ে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই পুঁজির সমস্যা হচ্ছিল। ত্রাতা হয়ে উঠলেন তিনি। যুবককে সাহায্য করা এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে পড়াশোনা করার জন্য তরুণীও পৌঁছে গেলেন চেন্নাই। কিছুদিন সব ঠিকঠাকই চলছিল। এরমধ্যেই তরুণী হঠাৎ আবিষ্কার করলেন যুবকের ঘরে মাদক। ঘরে মাদক কোত্থেকে এল? এই প্রশ্ন করতেই রূপ বদলে যায় যুবকের। চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। চোখ লাল হয়ে যায়।
এরপর থেকেই তরুণীর প্রতি ব্যবহারে পরিবর্তন এসে গিয়েছিল। তরুণীর মোবাইল কেড়ে নেয় ওই যুবক। ভেঙে ফেলা হয়। এর ফলে তিনি আর কারও সাথেই যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। কিন্তু এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। তরুণীর অভিযোগ রীতিমতো মারধর করা হত তাঁকে।
যুবক শুধুমাত্র মাদকাসক্ত ছিলেন তাই নয়। রীতিমত মাদকচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এর জন্য একবার ব্যঙ্গালোরে ধরাও পড়েছিল পুলিশের কাছে। কিন্তু তরুণী তখন বিশ্বাস করেননি। পরে তিনি জেনেছিলেন কলকাতায় আসার আগে দুবাইতে ও সোনা পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল সে।
আস্তে আস্তে প্রেমিকের মুখোশ খুলতে থাকে তরুণীর কাছে। আর প্রেমিকও তো তত হিংস্র হয়ে ওঠে। এই খবর যাতে বাইরে না বেরোয় তার জন্য তাঁকে পুড়িয়ে মারার ছক করা হয় বলে তরুণীর অভিযোগ। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাড়ির ছাদ থেকে একদিন ঝাপ মারতে যায় তরুণী। এই দেখে পাড়া-প্রতিবেশীরা খবর দেয় পুলিশে।
পুলিশ আসতেই সেই সুযোগে কলকাতায় চলে আসেন তরুণী। তবে সেখানে বিষয়টা শেষ করতে নারাজ তিনি। অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আইনের দারস্থ হয়েছেন তরুণী। তিনি বলেছেন, “এর শেষ দেখেই ছাড়ব।”