পটনা: শনিবার বিহারের মুজফফরপুরের মিনাপুর থেকে উদ্ধার হয় সুটকেসবন্দি এক শিশুর দেহ। ঘটনার ভয়াবহতায় শিউরে ওঠে গোটা এলাকা থেকে পুলিশ-প্রশাসন। সুটকেস উদ্ধারের পর স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেয়। শুরু হয় তদন্ত। গঠন করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)।
তদন্তে উঠে আসে নিজের মেয়েকে খুন করেছে খোদ মা। অভিযুক্ত কাজলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেরায় কাজল স্বীকার করে নেয়, সে পরকীয়ায় লিপ্ত। স্বামীকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রেমিক চায়নি মেয়ে সঙ্গে আসুক। কাজলের নতুন করে ঘর বাঁধার স্বপ্নে বাঁধ সাধছিল ছোট্ট মেয়েটি। আর তাই ‘কাঁটা’ পথ থেকে সরিয়ে দিল কাজল। নিজের হাতে নিজের মেয়ের গলা কেটে খুন করল তরুণী। এরপর মৃতদেহ একটি সুটকেসে ভরে মুজফফরপুরে একটি ঝোপে ছুড়ে ফেলে দেয়। জেরায় কাজল জানায়, মেয়েকে খুনের ছক কষেছিল ‘ক্রাইম পেট্রল’ দেখে।
শনিবার মুজফফরপুরের মিনাপুর থেকে ৩ বছর বয়সী মিষ্টির সুটকেসবন্দি দেহ উদ্ধারের পর-ই বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) জোরকদমে তদন্ত শুরু করে। ফরেন্সিক দলকে নিয়ে মৃত শিশুর বাড়িতে পৌঁছান তদন্তকারী দল। বাড়ির মেঝে, ছাদ, ওয়াশ বেসিনে রক্তের দাগ দেখতে পান ফরেন্সিক তদন্তকারীরা। যদিও সেখানে ছিল না শিশুটির মা কাজল। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, ঘটনার দিন সে স্বামী মনোজকে ফোন করে জানিয়েছিল, এক আত্মীয়ার বাড়িতে যাচ্ছে।
এরপর, স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মনোজ। তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। কাজলের ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করা হয়। শেষপর্যন্ত প্রেমিকের বাড়ি থেকে আটক করা হয় কাজলকে। মুজফফরপুর পুলিশের প্রধান অবধেশ দীক্ষিত জানিয়েছেন, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে কাজল। জানিয়েছে, গত দু’বছর ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তার। মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলেও প্রেমিক বাধা দেন। কী করবে, বুঝে উঠতে পারেনি কাজল। শেষে ছুড়ি দিয়ে মেয়ের গলার নলি কেটে খুন করে দেহ সুটকেসে ভরে বাড়ির পাশেই ফেলে দেয় সুটকেস। দীক্ষিত আরও জানিয়েছেন, কাজল বাড়ি থেকে রক্তের দাগ মুছে ফেলার সবরকম প্রচেষ্টাই করেছিল, কিন্তু ফরেন্সিক দল ঠিক-ই রক্তের দাগ খুঁজে পায়। খুনের অস্ত্র-ও মিলেছে।