দেশ Cloud Chamber: আয়ত্ত্বে আসছে ঝড়ের তাণ্ডব? তৈরি হচ্ছে ক্লাউড চেম্বার, সাইক্লোন দানার মাঝেই বিরাট আপডেট আবহাওয়ার Gallery October 24, 2024 Bangla Digital Desk দানবের মতো তেড়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা বা সিভিয়ার সাইক্লোন স্টর্ম দানা৷ আবহবিদদের অনুমান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। এর প্রভাব পুরী থেকে সাগরদ্বীপ পর্যন্ত থাকবে৷ ল্যান্ডফল-এর সময় দানার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। স্বল্প সময়ের জন্য দমকা হাওয়ার গতি সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে। ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যে আছড়ে পড়বে সাইক্লোন দানা। মধ্য রাতের আগে স্থলভাগের কাছাকাছি এসে এর গতিবেগ কমে সর্বোচ্চ একশ কুড়ি কিলোমিটার হবে। বাংলায় ঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়বে পূর্ব মেদিনীপুরে৷ প্রায় ওড়িশার মতোই হবে সেখানে ঝড়ের গতিবেগ৷ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভারী, অতি ভারী থেকে শুরু করে অত্যন্ত ভারী বর্ষণ হতে পারে৷ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব পড়বে৷ এছাড়াও হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় ভারী বৃষ্টি হবে৷ ভারতের মিশন মৌসুম প্রকল্পের আওতায় আবহাওয়া কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্লাউড চেম্বার তৈরি করা হচ্ছে। এটি হবে এক ধরনের রিমোট কন্ট্রোল, যার মাধ্যমে চাহিদা বা প্রয়োজন অনুযায়ী বৃষ্টিপাত বাড়ানো বা কমানো যাবে এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত আরও অনেক বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। আপাতত আমেরিকা, রাশিয়া, চিন এবং কিছু ইউরোপীয় দেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে। দুই বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প৷ সেপ্টেম্বরে মিশন মৌসম অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় সরকার। এতে শুধু আবহাওয়ার তথ্যই মিলবে না, কিছুটা নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে। এই প্রকল্পের অধীনে একটি ক্লাউড চেম্বার তৈরি করা হবে। চেম্বার তৈরির কাজ করছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজিক্যাল (আইআইটিএম), পুনে। কী এই ক্লাউড চেম্বার, কী কাজ করবে? ক্লাউড চেম্বারটি একটি সিলিন্ডার বা টিউবের মতো একটি বন্ধ ড্রাম, যার ভিতরে বাষ্প এবং অ্যারোসল (জলের খুব ছোট ফোঁটা) ভরা থাকবে। এই ড্রামের মতো কাঠামোর ভিতরে আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হবে যাতে মেঘ তৈরি হতে পারে। অনেক দেশে ক্লাউড চেম্বার রয়েছে। ভারত এমন একটি ক্লাউড চেম্বার তৈরি করার চেষ্টা করছে, যা শুধু বৃষ্টিই ঘটাতে পারে না, ভারতীয় মৌসুমী মেঘেরও গতিবেগ ধরতে পারবে সহজে৷ ক্লাউড চেম্বারের মাধ্যমেও আবহাওয়া পরিবর্তন করা যায়। আশা করা হচ্ছে যে আগামী দুই বছরের মধ্যে বিজ্ঞানীরা খুব উন্নত সিস্টেম তৈরি করতে সক্ষম হবেন যা চেম্বারের ভিতরে রাখা যেতে পারে। বিশ্বের খুব কম দেশেই এমন উন্নত চেম্বার রয়েছে কারণ এটি নির্মাণ এবং নিয়ন্ত্রণ করা খুবই ব্যয়বহুল। বর্তমানে আমেরিকা, সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও চীনে এই ব্যবস্থা রয়েছে। এই পরীক্ষাটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চারটি পর্যায়ে চলে। শেষ পর্যায়ে মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে কাজ করা হয়েছে। সোলাপুরে প্রায়ই কম বৃষ্টি হতো। এই পর্বে দেখা গেছে যে ক্লাউড সিডিং একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ভাল বৃষ্টিপাত দিতে পারে। বৃষ্টিপাত প্রায় ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে এর অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। একটি সম্পূর্ণ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ পরিকাঠামো তৈরি করা হবে, যা শুধু আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেবে না, পরিবর্তনও করবে। যেমন, যেখানে কম বৃষ্টি বা ঝড় বেশি হয়, সেখানে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটি একটি খুব বড় প্রকল্প, তাই ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পাশাপাশি, ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টিং এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজিও এতে জড়িত। যদিও আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে যে দেশগুলি এটির অপব্যবহার করতে পারে, তবে এটি যদি অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য করা হয় তবে অন্যান্য দেশের কোনও আপত্তি নেই। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো দেশ যাতে তার আশেপাশে বিপর্যয় ডেকে আনতে না পারে তা নিশ্চিত করার জন্য, ১৯৭৭ সালে পরিবেশগত পরিবর্তন কনভেনশন তৈরি করা হয়েছিল, যা একটি অস্ত্র হিসাবে আবহাওয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। এই আন্তর্জাতিক চুক্তি বহুবার এ বিষয়ে সতর্ক করেছে।