কলকাতা: কোনওভাবেই আর শেষরক্ষা হল না৷ কালীপুজোর দিনই মর্মান্তিক মৃত্যু হল ২২-এর যুবকের৷ গত সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ লেকগার্ডেন্স সুপার মার্কেটের কাছে বস্তিতে আগুন লাগে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। রাণা নস্কর নামে ২২ বছর বয়সী এক যুবক গুরুতর আহত হন। তাঁকে বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকেই চলছিল জীবনমরণ লড়াই৷ শেষমেশ গুরুতর জখম যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল কালীপুজোর সকালেই৷
প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের অগ্নিকাণ্ডে মারাত্মকভাবে জখম রানা নস্কর আজ সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ মারা গিয়েছেন৷ টালিগঞ্জ এম আর বাঙুর হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি৷ পেশায় ফুড ডেলিভারি বয় রানার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়৷ জানা গিয়েছে, গোটা শরীর আগুনে পুড়ে গিয়েছিল৷ আগুনের হলকা ফুসফুসও পুরো ঝাঁঝরা করে দেয়৷ ৯৯ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বাঙুর হাসপাতালে আইসিএ-তে চিকিৎসাধীন ছিলেন৷ আজ ভোররাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি৷
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছিলেন, প্রতিদিনের মতো গত সোমবারওও ফুড ডেলিভারি কর্মী রাণার স্কুটির ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হচ্ছিল। সেখান থেকেই প্রথমে শর্ট সার্কিট হয়। এরপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাণা ওই সময়ে উপরের ঘরে শুয়ে ছিল। সবাই বেড়িয়ে পড়লেও রাণা আটকে পড়ে। সেই সময় একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে থাকে। আর এই আগুনেই গুরুতর আহত হন রাণা। শেষ পর্যন্ত দোতলার ছাদ থেকে ঝাপ দিয়ে নিচে নামে।
সাড়ে পাচটা নাগাদ রাণা নস্করের মা রান্নাঘরে রান্না করছিলেন। বাসন ধোয়ার জন্য তিনি ঘর থেকে বের হন। সে সময় বিকট শব্দে সিলিন্ডার ফেটে যায় । সে সময় ঘরে ছিলেন রাণা লস্করের বোন এবং তার বোনঝি ঘরের মধ্যেই ছিলেন। রানা তখন দোতালার ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। আগুন হঠাৎ করে ছড়িয়ে পড়ার আগেই রানার বোন তার কন্যাকে নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারলেও রানা বেরোতে পারেনি। পরে তাকে কোনওভাবে উদ্ধার করে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে চলছিল মৃ্ত্যুর সঙ্গে লড়াই৷ কালীপুজোর দিন ভোরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷