মালদহ: আধুনিক যুগেও চাহিদা রয়েছে, তাই আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন কুমোরেরা। আজও কালী পুজোর বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মাটির প্রদীপ থেকে ধুনুচি, ঘট-সহ অন্যান্য পুজোর সামগ্রীর। তবে পুরনো পদ্ধতিতে চাকা ঘুরিয়ে মাটির সামগ্রী তৈরি করে চাহিদা মতো যোগান দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল কুমোরদের। তাই এবার মাটির পাত্র তৈরিতেও আধুনিকতার ছোঁয়া।
কুমোরদের সময় বেঁচে যাচ্ছে, অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ মাটির প্রদীপ-সহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করতে পারছেন। এমনকী আধুনিক এই যন্ত্রের সাহায্যে কাজ করায় শক্তি অনেকটাই কম লাগছে। মহিলা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বা শিশু সকলেই কাজ করতে পারছেন। সরস্বতী পাল বলেন, ইলেকট্রিক চাকায় সকলেই কাজ করতে পারছে অল্প সময়ে বেশি জিনিস তৈরি করা যাচ্ছে। এতে আমাদের অনেক সুবিধা হচ্ছে।
আধুনিক এই যন্ত্র আর কিছু নয় ইলেকট্রিক চাকা। এতদিন কুমোর পাড়ায় দেখা যেত বিশাল একটি চাকা লাঠির মাধ্যমে প্রথমে ঘোরানো হচ্ছে তারপর সেখানে মাটির বিভিন্ন আকারের পাত্র তৈরি করা হচ্ছে। এতে অনেক শক্তি অপচয় হয় পাশাপাশি সময় বেশি লাগে। বৃদ্ধ মানুষ বা মহিলারা এই হাতে ঘোরানো চাকা ঘোড়াতে পারতেন না। ফলে বেশি কাজ করা সম্ভব হতো না। ইদানিং ইলেকট্রিক চাকা তৈরি হয়েছে। বিদ্যুতের মাধ্যমে ঘুরছে এই চাকা। এমনকী এই চাকা বসাতে জায়গা অনেক কম লাগছে। যেখানে সেখানে তুলে নিয়ে গিয়ে বসানো সম্ভব। যন্ত্রটি অনেক ছোট হওয়ায় এমনকী ইলেকট্রিক মাধ্যমে চাকা ঘুরছে তাই খুব সহজেই যে কেউ এই চাকায় কাজ করতে পারছেন। দামও খুব একটা বেশি নয়, ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে এই ইলেকট্রিক চাকা পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। কৃষ্ণ পাল বলেন, অল্প সময়ে বেশি করে জিনিস তৈরি করা যাচ্ছে এই ইলেকট্রিক চাকায়। মাটির প্রদীপ ঘট ধুনুচি সমস্ত কিছুই তৈরি হচ্ছে। তবে, বড় মাটির পাত্র তৈরি সম্ভব নয়।
আবার সরকারিভাবেও ইতিমধ্যে কুমোরদের মধ্যে এই ইলেকট্রিক চাকা বিলি করা হচ্ছে। কালীপুজোর আগে মালদহ জেলার প্রতিটি প্রান্তে দেখা যাচ্ছে এই ইলেকট্রিক চাকা ঘুরিয়ে মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছেন কুমোরেরা। অল্প সময় বেশি পরিমাণে কাজ করতে পেরে খুশি সকলেই। এই সময় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মাটির প্রদীপ ধুনুচি-সহ অন্যান্য কিছুর। তাই প্রতিটি কুমোর পাড়াতেই এই সমস্ত জিনিস গুলি এখন জোরকদমে চলছে তৈরির কাজ।
হরষিত সিংহ