সন্দেহ নেই যে সুদীর্ঘকাল ধরে আমাদের দেশে সোনা বিনিয়োগের প্রথম পছন্দ। বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল ফিজিক্যাল গোল্ডের মতো ডিজিটাল গোল্ডও বিনিয়োগের বাজারে নিজের বেশ ভাল মতো জায়গা করে নিয়েছে। রয়েছে বন্ড, ইটিএফ, গোল্ড ফান্ডের মতো নানা বিকল্প। তার পরেও এগুলোর কোনওটাই এখনও পর্যন্ত দোকান থেকে সোনা কেনার জনপ্রিয়তাকে টেক্কা দিতে পারেনি।বিবাহের মরশুমের কথা বাদ দিলেও উৎসবের মরশুম, ধনতেরসের মতো প্রথা উদযাপন এর সুদৃঢ় উদাহরণ। সোনার গহনার কদর এ দেশে কখনও কমে না।লোকেরা বিভিন্ন কারণে সোনার গহনা কেনে, যেমন পরার ইচ্ছা বা যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানের জন্য। যেহেতু একজনের মালিকানায় থাকা সোনার উপরে কোনও নির্দিষ্ট পরিমাণ ধার্য নেই, তাই অনেক লোকের কাছেই সোনা একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ।এই প্রেক্ষাপটে সোনা শুধুমাত্র গয়নাই নয়, মুদ্রা, বার এবং অন্যান্য রূপেও বিনিয়োগের মাধ্যম হয়ে ওঠে। সোনার গহনা এবং অলঙ্কার রাখার সীমা CBDT ১১ মে ১৯৯৪-এ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। যা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও স্পষ্ট করে যে অনুমোদিত সীমার মধ্যে রাখা সোনার জন্য জমার প্রমাণের প্রয়োজন নেই।উপরের সার্কুলারে বলা হয়েছে যে সোনার গয়না এবং আনুষঙ্গিক সোনা বাজেয়াপ্ত করা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, যদি – – তদন্তকারী অ্যাসেসি তার সম্পত্তি ট্যাক্স রিটার্নে এমন স্বর্ণালঙ্কার ও অন্য অলঙ্কার প্রকাশ করে। – যদি একজন মূল্যায়নকারী সম্পদ করের জন্য দায়বদ্ধ না হয়, তবে নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত সোনার অলঙ্কার এবং গহনা বাজেয়াপ্ত করা হবে না।– সম্পদ কর রিটার্নে ঘোষিত সোনার অলঙ্কার এবং গহনাগুলির মোট ওজনের অতিরিক্ত বাজেয়াপ্ত করা হবে, যদি নির্ধারণকারীকে সম্পদ করের অধীন বলে গণ্য করা হয়।যখন সোনার গয়না এবং অলঙ্কার বাজেয়াপ্ত করা হয়, তখন মূল্যায়নকারীকে ক্রয়ের জন্য তাদের আয়ের উৎসের ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। আয়কর আইন, ১৯৬১-এর ধারা 115BBE-তে উল্লেখিত হারে ধারা ৬৯B-এর অধীনে সমষ্টিগতভাবে করযোগ্য, যদি নির্ধারণকারী একটি ব্যাখ্যা জমা না দেয় বা অপর্যাপ্ত প্রদান করে। এর সম্মত হার হল ২৫% ও ৬০%। এই ধরনের ট্যাক্সে, ১০% জরিমানা এবং ৪% HEC যোগ করা হয়।গহনা এবং অলঙ্কারগুলির পরিমাণের নির্দিষ্ট সীমা নিম্নরূপ যা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থাকতে পারে – – বিবাহিত মহিলা ৫০০ গ্রাম – অবিবাহিত মহিলা ২৫০ গ্রাম – পুরুষ ১০০ গ্রামউপরের নিষেধাজ্ঞাগুলি শুধুমাত্র সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য, যাদের অনুসন্ধানের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অন্য কারও (পরিবারের সদস্য নয়) কোনও গহনা পাওয়া গেলে কর কর্মকর্তারা তা নিতে পারে।সোনা কেনার উপর GST – সোনা কেনার উপর ৩% এবং চার্জের উপর ৫% GST ধার্য করা হয়। কেউ যদি নতুন গহনার জন্য সোনার (বার বা কয়েন) ব্যবসা করে, তাহলে অদলবদল করা সোনার ওজন পর্যন্ত আর কোনও জিএসটি আরোপ করা হয় না। শুধুমাত্র অতিরিক্ত ওজনের মান জিএসটি সাপেক্ষে। তবে সোনা বিক্রির উপর কোনও জিএসটি ধার্য করা হবে না।সোনা বিক্রির উপর আয়কর – সোনার গহনা/বুলিয়ন/গোল্ড ইটিএফ/গোল্ড এমএফ-এর বিক্রয় ‘মূলধন লাভ’ শিরোনামের অধীনে করযোগ্য। কেউ যদি সোনা কেনার তিন বছরের মধ্যে বিক্রি করে, তাহলে লাভকে স্বল্পমেয়াদি মূলধন লাভ (STCG) হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আয়ের উপর STCG প্রয়োগ করা হয় এবং আইনের নির্দিষ্ট স্ল্যাব হার অনুযায়ী কর দেওয়া হয়। কেউ যদি সোনা কেনার তিন বছর পরে বিক্রি করে তবে লাভকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন লাভ (LTCG) বলা হয়। LTCG ২০.৮% (২০% প্লাস একটি ৪% সেস) হারে ট্যাক্স ধার্য করা হয় এবং ক্রয়ের খরচের সুবিধা দেওয়া হয় (ক্রয়ের বছর থেকে বিক্রির বছর পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি খরচ কভার করতে)।দীর্ঘমেয়াদি মূলধন লাভ কর (LTCG) – সোনা কেনার তিন বছর পর বিক্রি করা হলে দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভ কর প্রযোজ্য। সোনার লাভের উপর LTCG হল সূচীকরণ সুবিধা সহ ২০% (ইনডেক্সেশন একটি বিনিয়োগের ক্রয় মূল্যে সামঞ্জস্য রাখতে ব্যবহৃত হয় যাতে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব প্রতিফলিত হয়)। এটি বন্ধ করা যেতে পারে যদি বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ নেট সরকারি ট্যাক্স বেনিফিট বন্ড, যেমন – ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বন্ড, REC বন্ড ইত্যাদি কেনার জন্য ব্যবহার করা হয়।
