পুরুলিয়া : বঙ্গবাসীর কাছে আবেগের অন্য নাম দুর্গাপুজো। সারাটা বছর এই চারটে দিন এর অপেক্ষায় থাকে আপামর বাঙালি। এই সময় অনেকেই ঠাকুর দেখার পাশাপাশি বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করে থাকেন। আর কাছে পিঠে বেড়ানোর অন্যতম সেরা ঠিকানা হচ্ছে লাল মাটির জেলা পুরুলিয়া। সারা বছরই এই জেলাতে পর্যটকেরা ভিড় জমান।
দুর্গাপূজার সময় একটু অন্যরকম বেড়ানোর আমেজ নিতে অনেকেই এই জেলাকে বেছে নেন। কারণ শরৎ-এর আকাশ আর সুন্দরী অযোধ্যার অপরূপ দৃশ্য মন মাতিয়ে তোলে পর্যটকদের। তাই হাতে যদি এক দুটো দিন ছুটি থাকে তাহলে চটপট প্ল্যান করে ফেলুন পুরুলিয়ার উদ্দেশ্য। পাহাড় ঝর্ণা মেলবন্ধনে গড়ে উঠেছে এখানে পর্যটন কেন্দ্র গুলি। এছাড়াও বেড়ানোর পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চারের সঙ্গে দুর্গা পুজোর স্বাদ উপভোগ করতে হলে আসতে হবে পুরুলিয়ার এই রাজবাড়িতে।
পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা প্রান্তিক একটি গ্রাম হল ঝালদার রাজা হেঁসলা। ডুমরাবুরু পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই হেঁশলা রাজবাড়ি। দুর্গম পথ পেরিয়ে আসতে হয় এখানে। মাঝেমধ্যেই এই রাজবাড়ির প্রাঙ্গণে পাহাড় থেকে নেমে আসে বন্যপ্রাণ। কপাল ভালো থাকলে তাদেরকেও কাছ থেকে দেখতে পাওয়া যায়। রাজ পরিবারের সদস্যদের দাবি , এই রাজবাড়িথেকেই উৎপত্তি হয়েছিল মানভূমের ছৌ নৃত্যের। বর্তমানে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটলেও দুর্গা পুজোয় এই রাজবাড়ির জৌলুষ অনেকটাই ধরে রেখেছেন তারা।
এলাকাবাসীর মতে ধুমধাম এর সঙ্গে প্রতিবছর এখানে দুর্গাপুজো হয়। তাদের গ্রামের একটি মাত্র পুজো এটি। পুজোতে দূর দূরান্ত থেকে অনেক পর্যটকেরাও এই রাজবাড়িতে আসেন। একদিনের রাজা হওয়া রীতিও প্রচলিত রয়েছে এই রাজবাড়িতে।আপনার যদি প্ল্যানে থাকে এই হেঁসলা রাজবাড়িতাহলে আপনাকে প্রথমে আসতে হবে ঝালদায়। হাওড়া থেকে রাঁচিগামী যে ট্রেনগুলি ঝালদার উপর দিয়ে যায় সেই ট্রেনে আপনাকে ঝালদা স্টেশন নামতে হবে।
সেখান থেকে মাত্র কুড়ি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই রাজা হেঁসলা গ্ৰাম। ঝালদা স্টেশন বা বাস স্ট্যান্ড থেকে যে-কোনো ছোট গাড়ি রিজার্ভ করে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই রাজ বাড়িতে। তাহলে আর কি পুরুলিয়া প্ল্যান করে থাকলে অতি অবশ্যই তালিকায় রাখুন এই হেঁশলা রাজবাড়ি। এখানে এলে প্রকৃতির মাঝে মিশে গিয়ে দুর্গাপুজোকে উপভোগ করতে পারবেন।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি